শেরপুরের নকলা উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (ভিজিডি) ৯৬ বস্তা সরকারি চাল অবৈধভাবে মজুত রাখার অভিযোগে চর অষ্টধর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মিয়াকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার চর অষ্টধর ইউনিয়নের নারায়ণখোলা বাজারে অভিযান চালিয়ে পৃথক দুটি স্থানে এসব চাল জব্দ করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন নকলা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ তাকী তাজওয়ার। অভিযানে সেনাবাহিনী ও থানা-পুলিশের দুটি দল সহায়তা করে।

উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শাহজাহান মিয়া দীর্ঘদিন ধরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল ও টিসিবির পণ্য সংগ্রহ করে নারায়ণখোলা বাজারের নূর ইসলামের মার্কেটের একটি কক্ষে মজুত রাখতেন। সেসব পণ্য অধিক দামে বিক্রির উদ্দেশ্যে বাজারজাত করার প্রস্তুতির সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। প্রথম দফায় নারায়ণখোলা বাজারের শাহজাহান বেকারির পাশে নূর ইসলামের মার্কেট থেকে ৪১ বস্তা চালসহ শাহজাহান মিয়াকে আটক করা হয়। পরে নারায়ণখোলা হাজী মোড় এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের দুটি কক্ষ থেকে আরও ৫৫ বস্তা চাল জব্দ করা হয়। তবে ওই স্থানে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, আটক ব্যক্তি ও জব্দ চাল থানায় রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপ জন মিত্র বলেন, জব্দ চাল ও অভিযুক্ত ব্যক্তি থানায় রয়েছেন। এ বিষয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ হজ হ ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইশরাককে মেয়র ঘোষণার গেজেট নিয়ে লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় ও গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। আদালত বলেছেন, যেসব প্রশ্নের অবতারণা হয়েছে, তা সাংবিধানিকভাবে ও সমভাবে নির্বাচন কমিশনের মৌলিক ম্যান্ডেটের (আইনগত বা বিচারগত) ভেতরে পড়ে।

লিভ টু আপিলকারীর আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন বলেছেন, ‘নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করায় বিলম্ব মার্জনা করে আপিল গ্রহণের কথা বলেছেন হাইকোর্ট। আজ আপিল বিভাগ বলেছেন সাংবিধানিক যে দায়িত্ব আছে, তা নির্বাচন কমিশন পালন করবে। আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের সিদ্ধান্ত একসঙ্গে পড়লে অর্থ দাঁড়ায় যে, নির্বাচন কমিশনকে আপিল করার জন্য বলছেন। যা এত দিন তারা করতে ব্যর্থ হয়েছে। পর্যবেক্ষণে ইসিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ফলে ইসিকে আপিল করতে বাধ্য। তা না হলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

ইশরাকের আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা গেজেট স্থগিত চেয়েছিল, তা স্থগিত করেননি আপিল বিভাগ। আদালত পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন যে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তারাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে। পক্ষ না হওয়ায় এবং আপিল করার যুক্তি না থাকায় ইসি আপিল করবে না বলে আগে জানিয়েছে। আজকে যে আদেশ হলো আবেদনকারীকে লিভ দেননি, কোনো স্থগিতাদেশ দেননি এবং নিষ্পত্তি করেছেন। নিষ্পত্তি করে বলেছেন ইসির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।’

লিভ টু আপিলের ওপর গতকাল শুনানি হয়। আদালত ইসির বক্তব্য শুনতে নোটিশ ইস্যু করে আজ শুনানির জন্য দিন রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি হয়। আদালতে ইসির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইয়াছিন খান। লিভ টু আপিলকারীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন শুনানি করেন। ইশরাকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও এ কে এম এহসানুর রহমান শুনানিতে ছিলেন।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। আওয়ামী লীগের (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। একই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। শপথ নিয়ে দায়িত্বপালন করছিলেন তাপস। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফলাফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক

আরও পড়ুনইশরাককে মেয়র ঘোষণা নিয়ে লিভ টু আপিলে ইসির বক্তব্য শুনবেন আপিল বিভাগ২৮ মে ২০২৫

গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। একই বছরের ১৯ আগস্ট ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করা হয়। এর মধ্যে ইশরাকের করা নির্বাচনী মামলায় চলতি বছরের ২৭ মার্চ রায় দেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল। রায়ে তাপসকে নির্বাচিত ঘোষণা বাতিল করা হয়। ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করা হয়। আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় এবং ইসির গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে চলতি মাসে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মামুনুর রশিদ। শুনানি নিয়ে রিট সরাসরি খারিজ করে ২২ মে আদেশ দেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের বিরুদ্ধে মেয়র ঘোষণা ও গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে গত সোমবার লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রিট আবেদনকারী। পরদিন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত লিভ টু আপিলটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি নিয়ে পর্যবেক্ষণসহ লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে আজ আদেশ দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইশরাকের বিষয়ে আদালতের রায়ের কপি পেলে করণীয় ঠিক করবে ইসি
  • ইশরাককে মেয়র ঘোষণার গেজেট নিয়ে লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি