আ.লীগ নেতার থেকে চাঁদা দাবি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতার, ভিডিও ভাইরাল
Published: 30th, May 2025 GMT
গাজীপুরের টঙ্গীতে আত্মগোপনে থাকা এক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ি গিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার রাতে মধুমিতা শেরে বাংলা রোডে অবস্থিত আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর স্ত্রী শিরিন আক্তার টঙ্গী পূর্ব থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
শিরিন আক্তার ঘটনার জন্য দায়ী করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টঙ্গী পূর্ব থানা কমিটির পাঁচ নেতাকে। এরা হলেন– ওই কমিটির সদস্য সচিব আকাশ খান (২২); সদস্য ইমতিয়াজ শুভ (২২), মোক্তার (২০), ইফতেখার (২১), আফি (২০) ও পিয়াস ঘোষ প্রিন্সকে (২২)।
বৃহস্পতিবার রাতে থানা চত্বরে আকাশ খানকে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে তাঁর মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ। ভিডিওতে কয়েকজন ব্যক্তি আকাশ খানকে একাধিকবার জিজ্ঞাসা করতে শোনা যায়, ‘তোমরা আমাদের কাছে চারটা মামলার জন্য পাঁচ লাখ করে মোট ২০ লাখ টাকা চাঁদা চাওনি?’ এ সময় ক্যামেরার সামনে কোনো কথা বলেননি আকাশ খান।
আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হোসেন দলের গাজীপুর মহানগরের ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সদস্য। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে আছেন। থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে তাঁর স্ত্রী শিরিন আক্তার উল্লেখ করেন, বুধবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা পরিচয়ে টঙ্গীর মধুমিতা শেরে বাংলা রোড এলাকায় অবস্থিত তাদের বাসায় যান কয়েকজন যুবক। তারা জানায়, আবুল হোসেনের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। এ সময় নগদ ২৬ হাজার টাকা আদায় করেন তারা। ওই ছাত্রনেতারা বৃহস্পতিবার রাত দশটার মধ্যে আরও ২০ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে চারটি মামলায় আসামি করে গ্রেপ্তার করানোর ভয় দেখান।
শিরিন আক্তারের ভাষ্য, ‘আমার স্বামীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। ওরা আমার স্বামী ও আমাদের পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার কথা বলে নগদ ২৬ হাজার টাকা নিয়ে যায়। আরও ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।’
বক্তব্য জানতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টঙ্গী পূর্ব থানা কমিটির আহ্বায়ক গৌরব খানের মোবাইল ফোনে দফায় দফায় কল দিয়েও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে তারা এমন একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
বরিশালে জাপা কার্যালয় ভাঙচুর, আহত ১০
রংপুরে চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বাসভবনে হামলার প্রতিবাদে শনিবার নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাতীয় পার্টি। এ ছাড়া গতকাল বিকেলে বরিশালে জাপার প্রতিবাদ মিছিলে হামলা হয়েছে। এ সময় জাপার পাল্টা হামলায় গণঅধিকার পরিষদের জেলা এবং মহানগরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।
এদিকে হামলার প্রতিবাদে গণঅধিকার পরিষদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শতাধিক নেতাকর্মী রাতে শহরে প্রতিবাদ মিছিল করে। মিছিলটি ফকিরবাড়ি সড়কে ঢুকে জাপা কার্যালয় ভাঙচুর করেছে।
আহত পাঁচজনকে বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন– জেলা সভাপতি শামীম রেজা, সাধারণ সম্পাদক এইচ এম হাসান, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল ফরহাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগ ফরাজি ও কেন্দ্রীয় মানবধিকারবিষয়ক সম্পাদক মিরাজ হোসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাপার শতাধিক নেতাকর্মীর মিছিলটি ফকিরবাড়ি সড়কের দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়। কিছুদূর অগ্রসর হলে ফকিরবাড়ি ও সদর রোড সংযোগমুখে কয়েকজন লাঠিসোটা নিয়ে মিছিলের ওপর হামলা করে। জাপা কর্মীরা পাল্টা প্রতিরোধ গড়লে হামলাকারীরা দৌড়ে পালায়। কয়েকজন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঢুকে পড়ে। জাপা কর্মীরা ওইসব দোকানে ঢুকে হামলাকারীদের বেদম পেটায়। পরে পুলিশ এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়।
মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও মহানগর আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, হামলাকারীরা জাতীয় নাগরিক পার্টির লোকজন। তারা শান্তিপূর্ণ মিছিলে পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। বরিশালে এনসিপিকে থাকতে দেওয়া হবে না।
তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্র অধিকার পরিষদের দপ্তর সম্পাদক তৌফিস আহমেদ সাব্বির বলেন, তারা সড়কের পাশে দাঁড়ানো ছিলেন। পাশ দিয়ে যাওয়া জাপার মিছিল থেকে তাদের ওপর হামলা হয়।
রংপুরে মামলা নেয়নি পুলিশ
শনিবার রংপুরে বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পায়রা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটির সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘এখন মবের যুগ, মব ভায়োলেন্স চলছে। তবে জাতীয় পার্টি মবে দুর্বল নয়, যে কোনো মব ফেস করতে পারে। কেউ মব করলে আমরা চাই না মব ভায়োলেন্স করতে। তবে কেউ অ্যাকশন করলে আমরা রিঅ্যাকশন করতে প্রস্তুত।’
এ সময় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, মহানগর জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহসভাপতি লোকমান হোসেন, সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
গত বৃহস্পতিবার রাতে জি এম কাদেরের রংপুরের বাসভবনে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে কোতোয়ালি থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগর আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহাম্মেদ ইমতি, এনসিপি নেতা নাহিদ হাসান খন্দকারসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এজাহার দায়ের করা হয়েছে। তবে মামলাটি গ্রহণ করেনি পুলিশ। ওসি আতাউর রহমান বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।