জানুয়ারি থেকে ১ হাজারের বেশি ভারতীয়কে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
Published: 30th, May 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্র থেকে চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজারের বেশি ভারতীয় নাগরিককে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৬২ শতাংশই বাণিজ্যিক ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এমন এক সময়ে এই তথ্য সামনে এল, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে অনিয়মিত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করেছেন। ট্রাম্প আগেই আশা প্রকাশ করে বলেছিলেন, অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারত ‘সঠিক কাজটাই করবে’।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক বিমানে শতাধিক ভারতীয়কে ফেরত পাঠানো হয়। সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, তাঁদের মধ্যে কিছু মানুষকে শিকল পরানো অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ‘অভিবাসন বিষয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কেবল নিশ্চিত হওয়ার পরই আমরা নাগরিকদের ফিরিয়ে নিই।’ যুক্তরাষ্ট্র মোট ১৮ হাজার ভারতীয়কে অবৈধভাবে প্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছে বলে জানা গেছে।
চলতি মাসের শুরুতে ভারতে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস সতর্ক করে বলেছে, যাঁরা বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছেন, নির্ধারিত সময়ের বেশি অবস্থান করলে তাঁদেরও দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে, এমনকি আজীবনের জন্যও তাঁদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষিদ্ধ করা হতে পারে।
ট্রাম্প প্রশাসনের ছাত্র ভিসাসংক্রান্ত নীতিমালার হালনাগাদ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জয়সোয়াল। কারণ, এতে করে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য পরিকল্পনা করেছেন, এমন ভারতীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্র গতকাল ঘোষণা করেছে, তারা বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন ভিসার জন্য সাক্ষাৎকারের সময় নির্ধারণ আপাতত বন্ধ রেখেছে। কারণ, তারা এখন শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম-সম্পর্কিত কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের পরিধি বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে।
জয়সোয়াল বলেন, ‘ভিসা ইস্যু করা একটি সার্বভৌম সিদ্ধান্ত। আশা করি, ভারতীয় শিক্ষার্থীদের আবেদনগুলো যোগ্যতার ভিত্তিতে বিবেচনা করা হবে এবং তাঁরা সময়মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন।’
জয়সোয়াল আরও বলেন, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ৩ লাখ ৩০ হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে গেছেন। এর ফলে ভারত এখন যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় উৎস দেশে পরিণত হয়েছে।
গতকাল যুক্তরাষ্ট্র আরও জানায়, তারা চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য বা ‘সংবেদনশীল’ বিষয়ে অধ্যয়নরত চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের কার্যক্রম জোরালোভাবে চালিয়ে যাবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র র জন য কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
দুই জেলায় বজ্রপাতে প্রাণ গেল পাঁচজনের
দুই জেলায় বজ্রপাতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহে তিনজন এবং শেরপুরে দু’জনের প্রাণহানি হয়েছে। শনিবার এসব ঘটনা ঘটে। নিজেস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর–
জানা গেছে, ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাঁচবাগ ইউনিয়নের দক্ষিণ লামকাইন গ্রামের বাসিন্দা সোহাগ মিয়া ব্রহ্মপুত্র নদের চরে গরু চড়াতে গিয়ে বজ্রপাতের শিকার হন। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। এ সময় তাঁর দুটি গরুও বজ্রপাতে মারা গেছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাগলা থানার ওসি ফেরদৌস আলম।
একই দিন নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের বাসিন্দা সাইদুল হক বৃষ্টিতে ভিজে বাইরে খেলা করার সময় বজ্রপাতের শিকার হয়ে মারা গেছে।
নান্দাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাহেলুর রহমান জানান, দুপুরে হঠাৎ গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হয়। এ সময় বৃষ্টিতে ভিজে বাইরে খেলতে গিয়ে শিশু সাইদুল হক বজ্রপাতের শিকার হয়।
এ ছাড়া ফুলবাড়িয়ায় বজ্রপাতে শফিকুল ইসলাম নামে এক রাজমিস্ত্রির মৃত্যু হয়েছে। কালাদহ ইউনিয়নের বিদ্যানন্দ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, রাজমিস্ত্রি শফিকুল সন্ধ্যার আগে কাজ শেষ করে ফেরার পথে বাড়ির পাশে আমগাছের নিচে আশ্রয় নিলে বজ্রপাতের শিকার হন। কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে মারা যান তিনি। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ফুলবাড়িয়া থানার ওসি রোকনুজ্জামান।
একই দিনে শেরপুরের নকলা উপজেলার টালকী ইউনিয়নের পশ্চিম বড় পাগলা গ্রামে বজ্রপাতের শব্দে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কৃষক সমির উদ্দিন সমু নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
তাঁর পরিবার জানায়, ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হলে দুপুরে মাঠে গরু আনতে যান সমির। হঠাৎ বিকট শব্দে বজ্রপাত হলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
এ ছাড়া নালিতাবাড়ী উপজেলার কাঁকরকান্দি ইউনিয়নের মানিককুড়া গ্রামে শনিবার দুপুরে বজ্রপাতে হাজেরা খাতুন নামে গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তিনি একই গ্রামের খোরশেদ আলমের স্ত্রী।
জানা গেছে, স্থানীয় হাজিমোড় এলাকায় একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে তাঁর নাতনি। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে নাতনিকে আনতে মাদ্রাসায় যান তিনি। ফেরার পথে তাঁর ওপর বজ্রপাত হলে গুরুতর আহত হন। তবে সঙ্গে থাকা নাতনির কিছু হয়নি। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান, পথেই মারা গেছেন তিনি।