যুক্তরাষ্ট্র থেকে চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজারের বেশি ভারতীয় নাগরিককে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৬২ শতাংশই বাণিজ্যিক ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এসব তথ্য জানিয়েছেন।

এমন এক সময়ে এই তথ্য সামনে এল, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে অনিয়মিত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করেছেন। ট্রাম্প আগেই আশা প্রকাশ করে বলেছিলেন, অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারত ‘সঠিক কাজটাই করবে’।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক বিমানে শতাধিক ভারতীয়কে ফেরত পাঠানো হয়। সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, তাঁদের মধ্যে কিছু মানুষকে শিকল পরানো অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ‘অভিবাসন বিষয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কেবল নিশ্চিত হওয়ার পরই আমরা নাগরিকদের ফিরিয়ে নিই।’ যুক্তরাষ্ট্র মোট ১৮ হাজার ভারতীয়কে অবৈধভাবে প্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছে বলে জানা গেছে।

চলতি মাসের শুরুতে ভারতে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস সতর্ক করে বলেছে, যাঁরা বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছেন, নির্ধারিত সময়ের বেশি অবস্থান করলে তাঁদেরও দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে, এমনকি আজীবনের জন্যও তাঁদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষিদ্ধ করা হতে পারে।

ট্রাম্প প্রশাসনের ছাত্র ভিসাসংক্রান্ত নীতিমালার হালনাগাদ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জয়সোয়াল। কারণ, এতে করে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য পরিকল্পনা করেছেন, এমন ভারতীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্র গতকাল ঘোষণা করেছে, তারা বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন ভিসার জন্য সাক্ষাৎকারের সময় নির্ধারণ আপাতত বন্ধ রেখেছে। কারণ, তারা এখন শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম-সম্পর্কিত কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের পরিধি বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে।

জয়সোয়াল বলেন, ‘ভিসা ইস্যু করা একটি সার্বভৌম সিদ্ধান্ত। আশা করি, ভারতীয় শিক্ষার্থীদের আবেদনগুলো যোগ্যতার ভিত্তিতে বিবেচনা করা হবে এবং তাঁরা সময়মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন।’

জয়সোয়াল আরও বলেন, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ৩ লাখ ৩০ হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে গেছেন। এর ফলে ভারত এখন যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় উৎস দেশে পরিণত হয়েছে।

গতকাল যুক্তরাষ্ট্র আরও জানায়, তারা চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য বা ‘সংবেদনশীল’ বিষয়ে অধ্যয়নরত চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের কার্যক্রম জোরালোভাবে চালিয়ে যাবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র র জন য কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ