বর্তমানে প্রযুক্তি, নির্মাণ ও বায়োমেডিকেল খাতে দ্রুত উন্নয়নশীল দেশগুলোর অন্যতম একটি আয়ারল্যান্ড। দেশটি দক্ষ প্রকৌশলীদের জন্য ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে এবং বিশ্বের প্রকৌশলীদের (ইঞ্জিনিয়ার) জন্য এটি অন্যতম আকর্ষণীয় কেন্দ্রবিন্দু। তাই বাংলাদেশিদের জন্য আয়ারল্যান্ড হতে পারে একটি সম্ভাবনাময় গন্তব্য, বিশেষ করে আইটি, মেকানিক্যাল, সিভিল, ইলেকট্রিক্যাল ও বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে।

আয়ারল্যান্ডে ইঞ্জিনিয়ারিং পেশার গুরুত্ব দিন দিন বেড়ে চলেছে। দেশটির দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, প্রযুক্তি ও নির্মাণ খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ, বহুজাতিক কোম্পানির উপস্থিতি এবং স্থানীয় দক্ষ কর্মীর স্বল্পতা এই ক্ষেত্রকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। গুগল, মাইক্রোসফট, ইন্টেল, মেডট্রোনিক, ফাইজারের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কারণে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আরও পড়ুনলিথুয়ানিয়ায় উচ্চশিক্ষা: ৩৫০টির বেশি প্রোগ্রামে পড়াশোনা, স্কলারশিপের সুবিধা, সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজ১৪ নভেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য এখানে কাজের সুযোগ অনেক বেশি। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, ক্লাউড ইঞ্জিনিয়ার ও নেটওয়ার্ক বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজের সুযোগ রয়েছে। নির্মাণ ও স্থাপত্য খাতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এবং আর্কিটেক্ট হিসেবে কাজ করা সম্ভব। বায়োমেডিকেল ও ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে মেডিকেল ডিভাইস ইঞ্জিনিয়ার ও গবেষক হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া উৎপাদন ও যন্ত্র প্রকৌশল খাতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ও প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়াররা আয়ারল্যান্ডকে তাঁদের ক্যারিয়ার গঠনের জন্য গন্তব্যের স্থান হিসেবে বেছে নিতে পারেন।

আরও পড়ুনসুইডেনে উচ্চশিক্ষা: স্কলারশিপ, আছে আইইএলটিএসের বিকল্প, খণ্ডকালীন চাকরিতে ঘণ্টায় সাড়ে ৪০০০ টাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আয়ারল্যান্ডের আবহাওয়া তুলনামূলকভাবে ঠান্ডা ও আর্দ্র। এখানে গ্রীষ্মকাল খুবই মৃদু এবং শীতকাল খুব বেশি তীব্র নয়। গড় তাপমাত্রা শীতকালে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং গ্রীষ্মকালে ১২ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। আয়ারল্যান্ডে প্রচুর বৃষ্টি হয়, যা সারা বছর স্থায়ী হতে পারে। আবহাওয়া তুলনামূলকভাবে মৃদু থাকায় এটি বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য সহনীয়। আইরিশ সংস্কৃতি খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ ও অতিথিপরায়ণ। এখানকার স্থানীয় লোকজন সাধারণত নতুন অভিবাসীদের সহজেই গ্রহণ করেন এবং তাঁদের সঙ্গে মিশতে পছন্দ করেন। আয়ারল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী সংগীত, উৎসব ও সামাজিক কর্মকাণ্ড বৈচিত্র্যময়। স্থানীয় খাবার, পানীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য উপভোগ করা যায়। এ ছাড়া আয়ারল্যান্ডে অনেক আন্তর্জাতিক কমিউনিটি রয়েছে, যেখানে বাংলাদেশিসহ অন্য অভিবাসীরা নিজেদের সংস্কৃতি ও সামাজিকতা অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেন।

যাঁরা পরিবারসহ আয়ারল্যান্ডে যেতে চান, তাঁদের জন্য এখানকার শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত। সরকারি স্কুলগুলো বিনা মূল্যে শিক্ষা প্রদান করে এবং উচ্চশিক্ষার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। আয়ারল্যান্ডে বেশ কিছু বাংলাদেশি স্থানীয় সামাজিক সংগঠনের পাশাপাশি ‘অল বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশন অব আয়ারল্যান্ড’ নামে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনও কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব সংগঠন বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদ্‌যাপনসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।

প্রথম আলো ফাইল ছবি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ