ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চতুর্থ দিনের মতো অচলাবস্থা বিরাজ করছে। চিকিৎসক ও কর্মচারীদের সঙ্গে সম্প্রতি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতের মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার সকাল থেকেই বন্ধ রয়েছে চিকিৎসাসেবা। এতে করে প্রতিদিনই চিকিৎসা নিতে আসা শত শত রোগীকে ফিরে যেতে হচ্ছে।

আজ শনিবারও হাসপাতালটিতে কোনো চিকিৎসাসেবা চালু করা যায়নি। রোগী ও তাদের স্বজনরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেকে আজ সকাল থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও চিকিৎসা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন।

আজিমপুর থেকে চোখের সমস্যা নিয়ে আসেন আজিজ মিয়া। তিনি সমকালে বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে চারদিন সেবা বন্ধ, সরকার থেকে কেনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। সাধারণ জনগণ চিকিৎসাসেবা নিবে কোথা থেকে। অর্থসংকটে বেসরকারি হাসপাতালেও সেবা নিতে পারবো না। এখন আমরা কী করবো।’ 

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা.

জানে আলম বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসক ও কর্মীরা কাজে ফিরতে অনিচ্ছুক।’

চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয় উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তবে এখনও কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি।

 তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছে দ্রুত চিকিৎসাসেবা চালু করার, তবে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যেন আবার না ঘটে, সে বিষয়েও সজাগ থাকতে হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ জন রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকায় এসব রোগীকে এখন অন্যান্য হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলসহ চার হাসপাতালে দালালবিরোধী অভিযান, ছয়জনকে দণ্ড

রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ চারটি হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-২। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁদের বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অভিযান চালানো অপর তিনটি হাসপাতাল হলো জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলোজি (কিডনি হাসপাতাল)।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। র‌্যাব-২–এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু হাসানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সহায়তা করে।

অভিযানে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন মো. হারুন অর রশিদ (এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড), মো. রিপন (১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড), মো. হোসেন (৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড), মোছা. মনোয়ারা বেগম (এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড), মোছা. রাজিয়া বেগম (১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড) ও মো. চান মিয়া (৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড)।

র‌্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে এসব হাসপাতালের ভেতরে ও আশপাশের এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ দালাল চক্র সক্রিয় ছিল। তারা চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাঁদের স্বজনদের দ্রুত চিকিৎসা ও ভালো সেবার আশ্বাস দিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি করত। অভিযোগ রয়েছে, দালাল চক্র রোগীদের কাছ থেকে চিকিৎসা–সেবার নামে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করত। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে একাধিকবার সতর্কতামূলক নোটিশ দেওয়া হয়। মাইকিং করেও দালালদের কর্মকাণ্ড বন্ধের আহ্বান জানানো হয়। তবুও দালালদের তৎপরতা বন্ধ না হওয়ায় র‌্যাব-২ গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

ভবিষ্যতেও হাসপাতাল এলাকায় দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে র‌্যাব জানিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ