নিরাপত্তাহীনতার কথা বলে রোগীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের
Published: 31st, May 2025 GMT
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা আজ শনিবার টানা চতুর্থ দিনের মতো বন্ধ রয়েছে। সেবাদানকারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে চিকিৎসাসেবা বন্ধ আছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এমন পরিস্থিতিতে আজ এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় সেবাবঞ্চিত রোগীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
চিকিৎসক ও কর্মচারীদের সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের মারামারি-সংঘর্ষের জেরে এই হাসপাতালে গত বুধবার সকাল থেকে অচলাবস্থা শুরু হয়। পরদিন থেকে চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যায়।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে আজ সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসকসহ অন্য সেবাদানকারীরা গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালের ভেতরে আক্রান্ত হওয়ায় তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই এই হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। দুর্ভাগ্যজনক এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সেবাদানকারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ কারণে ২৯ মে (বৃহস্পতিবার) থেকে হাসপাতালে সেবাদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অধিকাংশ রোগী হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। শুধু জুলাই যোদ্ধারা বর্তমানে হাসপাতালে অবস্থান করছেন। সব সেবা বন্ধ হলেও জুলাই অভ্যুত্থানের আহতদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের লক্ষ্যে বিশেষ ব্যবস্থায় তাঁদের পথ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন‘অস্ত্রোপচারের তারিখ চলে গেছে, মায়ের চোখের অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে’৬ ঘণ্টা আগেসারা দেশ থেকে চক্ষু চিকিৎসার জন্য আগত রোগীদের সেবাদান কর্মকাণ্ড চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সেবাবঞ্চিত সব রোগীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি।’
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, অচলাবস্থা নিরসনে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানো হয়েছে। প্রতিনিধিদল আহতদের সঙ্গে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ অন্য সেবাদানকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রসঙ্গে আলোচনা করেছেন। এই মুহূর্তে আলোচনার একটি ইতিবাচক ফলাফলের অপেক্ষায় আছে মন্ত্রণালয়।
চিকিৎসাসেবাদানের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত হলেই হাসপাতালের সেবাদানকারীদের মাধ্যমে সব ধরনের চিকিৎসাসেবা পুনরায় শুরু করার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুনচক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে মারামারি-বিক্ষোভ, দিনভর স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ২৮ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫
টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।
আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।
এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।
রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।