পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষেরই পরিবেশ সচেতন হওয়া জরুরি। শুধু রাস্তা, ফ্লাইওভার বা বিদ্যুৎ জীবনের মূল চাহিদা হতে পারে না। যদি বাতাস ও পানি দূষিত হয়, তবে বিদ্যুৎ দিয়ে সবকিছু ঠিক রাখা সম্ভব নয়। ফুসফুসে ক্যান্সার হয় এমন বাতাসে বিদ্যুৎ দিয়ে কী করবেন? বাতাস পরিশোধনের জন্য পর্যাপ্ত গাছ না থাকলে রাস্তা দিয়ে কী হবে?

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পরিবেশ অধিদপ্তর মিলনায়তনে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে রোববার ‘পরিবেশ বিষয়ক সংস্কার ভাবনা: বর্তমান প্রেক্ষাপট ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবেশ অন্তর্ভুক্ত, প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে পরিবেশ ভাবনা সংযুক্ত এবং পরিবেশ শিক্ষা ও সচেতনতাকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। আমরা পরিবেশ রক্ষা না করে উন্নয়ন করতে পারি না। পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই উন্নয়ন করতে হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের শূন্য পদ দ্রুত পূরণের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, প্রকল্প তৈরিতে সময় লাগে, সেখানে আউটসোর্সিং জরুরি। বাজেট সংকট নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা সরকারের অন্যতম সর্বনিম্ন বাজেট পাওয়া মন্ত্রণালয়। এই বাজেটে মনিটরিং, এনফোর্সমেন্ট, রিস্টোরেশন- সব সম্ভব নয়। প্রকৃতি ধ্বংস হলে পুনরুদ্ধারে বেশি বিনিয়োগ লাগে।

ইটভাটা বন্ধ, হাতি-মানব দ্বন্দ্ব মোকাবিলা, সিসিটিভি স্থাপনসহ নানা কার্যক্রমে বাজেট ঘাটতির কথা তুলে ধরে তিনি শূন্য পদ পূরণ ও জমি সংক্রান্ত আইন সংস্কারের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, রাতেও পাহারা ও প্রযুক্তিনির্ভর মনিটরিং চালুর জন্য বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে। এনফোর্সমেন্টকে শক্তিশালী করতে হবে।

পরিবেশ ছাড়পত্র ও মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, যার কোনো ছাড়পত্র নেই, তিনি কীভাবে ব্যবসা চালাচ্ছেন? বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিলে আমাদের লিগ্যাল টিম কিছুই করতে পারে না- এটা দুর্ভাগ্যজনক।

সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.

মো. কামরুজ্জামান। এতে আরও বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানম, বুয়েটের অধ্যাপক ড. তানভীর আহমেদ, পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ড. খন্দকার রাশেদুল হক, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, ওয়েস্ট কনসার্নের নির্বাহী পরিচালক আবু হাসনাত মো. মাকসুদ সিনহা, বাপা সভাপতি অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ তালুকদার ও বেলা’র ক্যাম্পেইন কো-অর্ডিনেটর বারিস চৌধুরী। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিবেশগত ছাড়পত্র) মাসুদ ইকবাল মো. শামীম।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব শ পর ব শ র জওয় ন

এছাড়াও পড়ুন:

আপত্তিকর ভিডিও ছড়ানোর হুমকি দিয়ে ১০ লাখ টাকা দাবি

মানিকগঞ্জের শিবালয়ে এক নারীর আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ১০ লাখ টাকা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তার হাসান খন্দকার (৩৮) উপজেলার নিহালপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে ফেসবুকে মিথ্যা তথ্য প্রচারের হুমকি দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।

শিবালয় থানা পুলিশ ও মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, প্রায় এক মাস ধরে হাসান ভুক্তভোগীর ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে জানাচ্ছেন, তাঁর কাছে নারীর আপত্তিকর কিছু ভিডিও ও ছবি আছে। ১০ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে এসব ভিডিও ও ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেবেন বলে হুমকি দেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ মে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভুক্তভোগী নারীর বাড়িতে গিয়ে হাসান আবার হুমকি দেন। ওই নারী এত টাকা দিতে অস্বীকার করলে হাসান তাঁর বাড়ির দরজা ও জানালা ভাঙচুর করেন। চাহিদামতো টাকা না দিলে ফেসবুকে আপত্তিকর ভিডিও এবং ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার  হুমকি দিয়ে চলে যান। এর পর থেকে ম্যাসেঞ্জারে নিয়মিত একই হুমকি দিচ্ছিলেন হাসান।

এ ঘটনায় গত রোববার রাতে ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে হাসানকে আসামি করে শিবালয় থানায় মামলা করেন। গতকাল সোমবার ভোরে পুলিশ উপজেলার ডাক্তারখানা এলাকা থেকে হাসানকে গ্রেপ্তার করে।

এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শিবালয় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন চক্রবর্তী বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ওই যুবকের বিরুদ্ধে এক নারীর আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। সোমবার বিকেলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ