আখাউড়ায় পাহাড়ি ঢলে কয়েক গ্রাম প্লাবিত, পানিবন্দী ১৫ পরিবার
Published: 1st, June 2025 GMT
টানা ভারী বৃষ্টি ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের আশপাশের সীমান্তবর্তী কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েকটি পরিবার। গতকাল শনিবার রাত থেকে এ উপজেলায় পানি নামতে শুরু করেছে। উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা উপজেলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আখাউড়ার হাওড়া নদীর বাঁধ রক্ষায় কাজ করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েক দিন টানা বৃষ্টির কারণে আখাউড়ার বিভিন্ন নদী, খাল ও গাঙে পানি বেড়েছে। আখাউড়া স্থলবন্দরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা কালন্দি খাল, কালিকাপুর হয়ে আবদুল্লাপুর দিয়ে জাজি গাঙ, বাউতলা দিয়ে মরা গাঙ ও মোগড়া ইউনিয়ন দিয়ে বয়ে যাওয়া হাওড়া নদী দিয়ে গতকাল রাতে অস্বাভাবিকভাবে পাহাড়ি ঢলের পানি ঢুকতে শুরু করে। এতে আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিকাপুর, বীরচন্দ্রপুর, আবদুল্লাহপুর, বঙ্গেরচর গ্রামের ফসলি জমি, রাস্তাঘাট ও কিছু বাড়িঘর তলিয়ে যায়। উপজেলার কেন্দুয়াই মেলার মাঠ এলাকায় অন্তত ১৫টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতকাল রাত থেকে উপজেলার কালন্দি খাল, জাজি গাঙ ও হাওড়া নদী দিয়ে পানি ঢুকছে। এতে কালিকাপুর, বীরচন্দ্রপুর, আবদুল্লাহপুর, বঙ্গেরচর, রহিমপুর, সাবেহনগর, খোলাপাড়া, ওমেদপুর, কর্নেলবাজার, ইটনা, শান্তিপুরসহ ১৫ থেকে ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের কিছু রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এতে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের মৎস্য রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফারুক মিয়া জানান, গতকাল রাত থেকে পানি ঢুকছে। বন্দরের আশপাশ পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত রপ্তানিতে কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে পানি যেভাবে বাড়ছে, এতে আখাউড়া-আগরতলা সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে দুই দেশের বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর রহমান জানান, আখাউড়া উপজেলার হাওড়া নদীর গঙ্গাসাগর পয়েন্টে আজ সকাল ৯টায় পানির সমতল ছিল ৩ দশমিক ৯৩ মিটার। এখানে বিপৎসীমা ৬ দশমিক শূন্য ৫ মিটার। অর্থাৎ পানি বিপৎসীমার ২ দশমিক ১২ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল একই সময়ে পানির সমতল ছিল ৩ দশমিক ৪৫ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি এম রাশেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কিছু গ্রাম তলিয়ে গেছে ও কয়েকটি পরিবার পানিবন্দী আছে। তবে সংখ্যাটি নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তথ্য সংগ্রহ চলছে। বন্যাকবলিত মানুষের জন্য জিআর চাল, শুকনা খাবার ও নগদ অর্থ আছে। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একটি হটলাইন নম্বর চালু করেছেন। আর বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতির অবনতি হবে না।
প্রসঙ্গত, গত বছর আগস্টে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হাওড়া নদীর তিনটি বাঁধ ভেঙে আখাউড়া উপজেলার ৩৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। তখন ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এতে ১৯৫ হেক্টর ফসলি জমি ও প্রায় ১২ কোটি টাকার মৎস্যসম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ন বন দ উপজ ল র পর ব র ত হয় ছ দশম ক গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদে বুড়িমারী স্থলবন্দরে ১০ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর সাপ্তাহিক ছুটিসহ টানা ১০ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। তবে এ সময় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও পুলিশ অভিবাসন চৌকি (ইমিগ্রেশন) দিয়ে পাসপোর্টধারী মানুষ পারাপার ও বন্দরের অন্যান্য সরকারি কার্যক্রম স্বাভাবিক ভাবে চলবে।
বুড়িমারী স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এ এস এম নিয়াজ নাহিদ এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, আগামী ০৫ জুন থেকে আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত টানা ১০ দিন বুড়িমারী স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফের কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বুড়িমারী কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (সিঅ্যান্ডএফ)।
এ সংক্রান্ত চিঠি বুড়িমারী স্থল শুল্ক স্টেশন, বন্দর কর্তৃপক্ষ, বুড়িমারী স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন, বুড়িমারী উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র, বুড়িমারী বিজিবি কমান্ডার, পুলিশ ইমিগ্রেশন, ভারতীয় চ্যাংড়াবান্ধা স্থল শুল্ক স্টেশন, চ্যাংড়াবান্ধা আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন ও ভুটান আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনকে দেওয়া হয়েছে।
বুড়িমারী কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট (সিঅ্যান্ডএফ) অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফারুক হোসেন বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ০৫ জুন থেকে আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত বুড়িমারী স্থল বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সাপ্তাহিক ছুটিসহ টানা ১০ দিন বন্ধ থাকবে। তবে আগামী ১৫ জুন থেকে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম যথা নিয়মে চলবে।
বুড়িমারী স্থলবন্দরের অভিবাসনচৌকির (ইমিগ্রেশন পুলিশ) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ঈদে বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও আমাদের ইমিগ্রেশন বন্ধ থাকবে না। এ সময় পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক থাকবে।
এ বিষয়ে বুড়িমারী স্থল শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার (এসি) রাহাত হোসেন বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ব্যবসায়ীরা আমদানি- রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। ব্যবসায়ী ও পরিবহনে নিযুক্ত ব্যক্তিরা আমদানি-রপ্তানি না করলে স্বাভাবিকভাবে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তবে এ সময় বুড়িমারী স্থল শুল্ক স্টেশনের কাস্টমস কার্যালয় খোলা থাকবে এবং পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত চালু থাকবে।