জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হওয়া প্রতিটি হত্যার বিচার দাবিতে ১৯ জুলাই ‘ন্যাশনাল কনভেনশন’ করবেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

রাজধানীর পূর্বাচলের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) এই কনভেনশন হবে। ‘জুলাই-২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটি’ ও ‘ন্যাশনাল ইয়ুথ অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ’ যৌথভাবে কনভেনশন আয়োজন করবে।

আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর ঢাকা ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। ‘জুলাই-২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটি’ ও ‘ন্যাশনাল ইয়ুথ অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ’ যৌথভাবে এই সংবাদ সম্মেলন করে।

সংবাদ সম্মেলনে কনভেনশন নিয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন জুলাই-২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রবিউল আওয়াল। তিনি জানান, ১৯ জুলাই বেলা ১১টায় কনভেনশন শুরু হবে।

রবিউল আওয়াল বলেন, জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া প্রতিটি হত্যার বিচার চান তাঁরা। তাই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে তাঁরা এ কনভেনশনের আয়োজন করছেন। সারা দেশের শহীদ পরিবার আর আহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা কনভেনশনে অংশ নেবেন। বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সব রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সচিব ও বিভাগীয় কমিশনারেরা কনভেনশনে থাকবেন। প্রায় চার হাজার মানুষ কনভেনশনে সমবেত হবেন বলে তাঁরা আশা করছেন।

শহীদ পরিবারের যেসব সদস্য ঢাকার বাইরে থেকে আসবেন, তাঁদের জন্য পরিবহনসহ থাকার ব্যবস্থা করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শহীদ পরিবারগুলোর সদস্যদের থেকে সাধ্যমতো অনুদান নিয়ে এই কনভেনশন আয়োজন করা হবে। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি অনুদান নেওয়া হবে।

জুলাই-২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটির চেয়ারম্যান ও শহীদ গোলাম নাফিজের বাবা গোলাম রহমান বলেন, ‘ন্যাশনাল কনভেনশনে সারা দেশের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা তাঁদের দুঃখের কথা তুলে ধরবেন। এটাই এ সম্মেলনের উদ্দেশ্য।’

অন্তর্বর্তী সরকার যেন সন্তান হত্যার বিচার করে যায়, সেই দাবি করেন জুলাই-২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটির উপদেষ্টা ও শহীদ জাবিদ ইব্রাহিমের বাবা কবির হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের চাওয়া স্পষ্ট। আমরা আগে বিচার চাই। নির্বাচন কবে হবে, কোন দল ক্ষমতায় এল—এসব নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। সম্মেলনে এ কথাগুলো তুলে ধরব।’

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শহীদ হওয়া ইমন মিয়ার মা জহুরা বেগম বলেন, ‘বর্তমান সরকার আমার সন্তান হত্যার বিচার করে তারপর দায়িত্ব ছাড়ুক। আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের টানাটানির মধ্যে পড়তে চাই না।’

সংবাদ সম্মেলনে জুলাই-২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটির সহসভাপতি আবুল হাসান, শহীদ মোবারক হোসেনের মা ফরিদা বেগমসহ শহীদ ও আহত পরিবারের অর্ধশতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হত য র ব চ র পর ব র র র সদস সরক র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ