রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ চারটি হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-২। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁদের বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অভিযান চালানো অপর তিনটি হাসপাতাল হলো জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলোজি (কিডনি হাসপাতাল)।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। র‌্যাব-২–এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.

আবু হাসানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সহায়তা করে।

অভিযানে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন মো. হারুন অর রশিদ (এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড), মো. রিপন (১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড), মো. হোসেন (৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড), মোছা. মনোয়ারা বেগম (এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড), মোছা. রাজিয়া বেগম (১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড) ও মো. চান মিয়া (৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড)।

র‌্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে এসব হাসপাতালের ভেতরে ও আশপাশের এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ দালাল চক্র সক্রিয় ছিল। তারা চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাঁদের স্বজনদের দ্রুত চিকিৎসা ও ভালো সেবার আশ্বাস দিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি করত। অভিযোগ রয়েছে, দালাল চক্র রোগীদের কাছ থেকে চিকিৎসা–সেবার নামে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করত। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে একাধিকবার সতর্কতামূলক নোটিশ দেওয়া হয়। মাইকিং করেও দালালদের কর্মকাণ্ড বন্ধের আহ্বান জানানো হয়। তবুও দালালদের তৎপরতা বন্ধ না হওয়ায় র‌্যাব-২ গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

ভবিষ্যতেও হাসপাতাল এলাকায় দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে র‌্যাব জানিয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘এইচ টি ইমামের’ বন্ধ কারখানায় ডাকাতির চেষ্টা, আটক ৬

গাজীপুরের শ্রীপুরে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা পিপিএস পাইপ অ্যান্ড প্লাস্টিক কারখানায় ডাকাতির চেষ্টা করা ছয় ব্যক্তিকে আটক করেছে স্থানীয় জনতা ও পুলিশ। এসময় ক্ষুদ্ধ লোকজন তাদের মারধর করেন। 

সোমবার (২৮ জুলাই) রাত ১১টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে গুরুতর দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) শ্রীপুর থানার ওসি মো. আব্দুল বারিক এতথ্য জানান।

আরো পড়ুন:

র‍্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমনের বাবাকে মারধরের অভিযোগ

গাজীপুরে গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ১, আহত ৩

এলাকাবাসীর ভাষ্য, এই কারখানাটি কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের। গত বছরের ৫ আগস্ট কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকে কারখানাটি ইসলামী ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।

ইসলামী ব্যাংক শ্রীপুর শাখার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “রাত ১১টার দিকে কারখানার তৃতীয় তলায় সন্দেহজনক কিছু গতিবিধি দেখতে পাই। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও স্থানীয়দের জানানো হয়। তারা ঘটনাস্থলে আসেন। এসময় ডাকাতরা পালানোর চেষ্টা করলে ছয়জনকে ধরা সম্ভব হয়।”

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ১০–১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল প্রথমে প্রাচীর টপকে কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে। তারা কারখানার নিরাপত্তা প্রহরীর হাত-পা বেঁধে মারধর করে এবং লুটপাট শুরু করে। স্থানীয় লোকজন গিয়ে ছয়জনকে আটকের পর মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেন।

কারখানার নিরাপত্তা প্রহরী মো. মকবুল হোসেন বলেন, “গেট টপকে কয়েকজন আমার ওপর চড়াও হয়। আমাকে বেঁধে মারধর করে।  যখন লোকজন আসতে শুরু করে, তখন ডাকাতেরা দেয়াল টপকে পালাতে শুরু করে।”

আটক ডাকাতরা হলো- ময়মনসিংহের বাঘটিয়ার মো. সোহেল মিয়া (৩২), তারাকান্দার মো. এমদাদুল হক (৪৫), বগুড়ার কামুলার মো. ফারুক (৩২), নওগাঁর রাজাপুরের আরিফ (৩০), নরসিংদী বালুর মাঠ এলাকার সীমান্ত (২১) ও চাঁদপুরের ইব্রাহীম (২৩)।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. আজগর হোসেন সোহাগ জানান, “রাত ১২টার দিকে ছয়জনকে আহত অবস্থায় পুলিশ  নিয়ে আসে। চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, গুরুতর সোহেল ও এমদাদুলকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

শ্রীপুর থানার ওসি মো. আব্দুল বারিক বলেন, “কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। ডাকাতরা যন্ত্রপাতি লুট করতে এসেছিল। স্থানীয়দের সহায়তায় ছয়জনকে ধরতে সক্ষম হই। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। আটক ব্যক্তিরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।”

ঢাকা/রফিক/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শৈলকুপায় ইউপি কার্যালয়ে তালা, বিএনপি নেতাসহ আটক ৬
  • ‘এইচ টি ইমামের’ বন্ধ কারখানায় ডাকাতির চেষ্টা, আটক ৬
  • কারখানায় ঢুকে ডাকাতি, ৬ জনকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে দিলেন এলাকাবাসী