রাশিয়া ৪ বছরের মধ্যে ন্যাটোর দেশগুলোতে হামলা চালাতে পারে, জার্মান প্রতিরক্ষাপ্রধানের সতর্কবার্তা
Published: 2nd, June 2025 GMT
আগামী চার বছরের মধ্যে রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলা মোকাবিলায় পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যদেশগুলোর প্রস্তুতি নেওয়া দরকার বলে মনে করেন জার্মান প্রতিরক্ষাপ্রধান জেনারেল কার্সটেন ব্রয়্যার।
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জার্মান প্রতিরক্ষাপ্রধান সতর্ক করে বলেন, রাশিয়া প্রতিবছর শত শত যুদ্ধট্যাংক তৈরি করছে। এর অনেকগুলো ট্যাংক ২০২৯ সালের মধ্যে কিংবা তারও আগেই বাল্টিক অঞ্চলের ন্যাটোর সদস্যদেশগুলোর ওপর হামলায় ব্যবহার করা হতে পারে।
জেনারেল কার্সটেন বলেন, হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার ভিন্নমত থাকা সত্ত্বেও ইউক্রেন যুদ্ধ বিষয়ে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো এখনো ঐক্যবদ্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুনকোন ভয়ে ন্যাটো গঠিত হয়েছিল, সেই ভয় এখন কতটা০৪ এপ্রিল ২০২৪সিঙ্গাপুরে চিন্তনপ্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ আয়োজিত প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাংগ্রি-লা সংলাপের ফাঁকে বিবিসির সঙ্গে কথা বলেন জেনারেল কার্সটেন।
কয়েক সপ্তাহ পর নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে ন্যাটোর একটি সম্মেলন হবে। এ সম্মেলনে সামরিক জোটটির বাজেটসহ নানা বিষয়ে সদস্যদেশগুলোর মধ্যে আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগেই জার্মান প্রতিরক্ষাপ্রধান ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোকে রাশিয়ার আক্রমণঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করলেন।
এ বিষয়ে জেনারেল কার্সটেন বলেন, রাশিয়ার দিক থেকে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো ‘খুবই গুরুতর ঝুঁকির’ মুখোমুখি। এমন ঝুঁকি তিনি তাঁর ৪০ বছরের পেশাজীবনে আগে কখনো দেখেননি।
বর্তমানে রাশিয়া তার সামরিক বাহিনী ব্যাপকভাবে শক্তিশালী করছে বলে উল্লেখ করেন জেনারেল কার্সটেন। তিনি বলেন, রাশিয়া প্রতিবছর প্রায় দেড় হাজার যুদ্ধট্যাংক তৈরি করছে।
আরও পড়ুনইউরোপকে সুরক্ষা দিতে গড়ে ওঠা ন্যাটো কি টিকে থাকবে০৪ এপ্রিল ২০২৫জার্মান প্রতিরক্ষাপ্রধান বলেন, এই ট্যাংকগুলোর সবই ইউক্রেনে পাঠানো হচ্ছে না। অনেক ট্যাংক মজুত রাখা হচ্ছে। পশ্চিমাদের লক্ষ্য করে তা নতুন সামরিক কাঠামোতে যুক্ত করা হচ্ছে।
জার্মান প্রতিরক্ষাপ্রধান সতর্ক করে আরও বলেন, ২০২৪ সালে রাশিয়া ১৫২ মিলিমিটারের ৪০ লাখ আর্টিলারি গোলাবারুদ উৎপাদন করেছে, যার সব কটি ইউক্রেনে ব্যবহৃত হয়নি। এসব তথ্য জার্মানি ও তার মিত্রদেশগুলোর বিশ্লেষকদের কাছ থেকে পাওয়া।
আরও পড়ুনন্যাটোর বিরুদ্ধে ছায়া যুদ্ধ রাশিয়ার১১ জুলাই ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সতর ক
এছাড়াও পড়ুন:
কৃষি খাতে বরাদ্দ বেড়ে ৪০ হাজার কোটি টাকায় উঠল
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ এবং খাদ্যনিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তুলনায় নতুন অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ প্রায় সাড়ে ৩ শতাংশ বেড়েছে, যার পরিমাণ ১ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের তুলনায় নতুন বাজেটের আকার ছোট হলেও কৃষি খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ সোমবার নতুন অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণা করেন। তাঁর বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ (বিটিভি) বিভিন্ন চ্যানেল সম্প্রচার করে।
নতুন বাজেটে কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ এবং খাদ্যনিরাপত্তা খাতে মোট ৩৯ হাজার ৬২০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল্য বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছিল ৩৮ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার। গত বছর আকস্মিক বন্যায় আউশ ও আমন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হওয়ায় খাদ্যশস্যের মজুতে কিছুটা ঘাটতি দেখা দেয়। এ ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে আমরা ৯ লাখ মেট্রিক টন চাল এবং ৭ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির সিদ্ধান্ত নিই, যার আওতায় ইতিমধ্যে ৮ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল এবং ২ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানি করা হয়েছে। পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে কৃষকের জন্য ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সারসহ অন্যান্য উপকরণে প্রয়োজনীয় ভর্তুকি দিচ্ছি। এ ছাড়া খাদ্যনিরাপত্তার গুরুত্ব বিবেচনায় সারের মজুত বা বাফার স্টক বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চলমান রয়েছে। বর্তমানে ১ হাজার ৯০১টি কেন্দ্রের মাধ্যমে সারা দেশে ওএমএস কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তালিকাভুক্ত চা-বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে প্রতি কেজি ১৯ টাকা দরে গম বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া ‘ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট’ কর্মসূচির আওতায় ১০ লাখ ৪০ হাজার দুস্থ নারীকে মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া আগামী অর্থবছরে খাদ্যগুদামের ধারণক্ষমতা ৩৭ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীতকরণ এবং খাদ্যশস্য ব্যবস্থাপনার প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে বাজেট বক্তব্যে উল্লেখ করেন সালেহউদ্দিন আহমেদ।
কোল্ড স্টোরেজ স্থাপনে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রদান করে একটি নতুন প্রজ্ঞাপন জারির প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে। স্থানীয়ভাবে কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদন উৎসাহিত করতে কম্বাইন হারভেস্টার তৈরির যন্ত্রাংশ আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া কৃষি উৎপাদন উৎসাহিত করতে কোনো স্বাভাবিক ব্যক্তির ‘কৃষি হইতে আয়’ অনধিক ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের মোট শ্রমশক্তির ৪৫ শতাংশ এবং গ্রামীণ কর্মজীবী নারীর প্রায় ৬০ শতাংশ কৃষিতে নিয়োজিত। জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১১ শতাংশের ওপরে।