কুষ্টিয়ার পিটিআই রোডে সাবেক এমপি ও আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের বাসার সামনে রবিবার (১ জুন) ঝটিকা মিছিল করেন ১৫-১৭ জন। এর মধ্যে, ১০ জনই মাটিকাটা শ্রমিক ছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ১০ শ্রমিককে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

শ্রমিকদের স্বজনেরা জানান, রবিবার সকালে শহরের ছয় রাস্তার মোড় থেকে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি বালু সরানোর কথা বলে ১০ শ্রমিককে ৬০০ টাকা হাজিরায় কুষ্টিয়া পিটিআই রোডে ডেকে নিয়ে যান। পরে সেখানে ওই ব্যক্তি শ্রমিকদের বলেন, সারাদিন কষ্ট করা লাগবে না; এখানে দাঁড়ালেই পুরো টাকা পেয়ে যাবে। সেখানে কয়েকজন একটি ব্যানার নিয়ে শ্রমিকদের পেছনে দাঁড় করিয়ে দেয়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাকিরা পালিয়ে গেলেও শ্রমিকরা সেখানে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের আটক করে।

আটককৃতরা হলেন- কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া বাড়াদী এলাকার মৃত আলম সর্দারের ছেলে সালাম সর্দার, মৃত আজবার শেখের ছেলে আলতাফ শেখ, মৃত আফজাল শেখের ছেলে সূর্য শেখ, মৃত আফসার উদ্দিন খানের ছেলে আলম খান, মৃত আইনুদ্দিনের ছেলে মোতালেব, কয়া কালোয়া গ্রামের মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে ফরিদ ব্যাপারী, বাড়াদী বানিয়াপাড়ার মৃত ফকরুদ্দিনের ছেলে সাইদুর রহমান, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের মৃত শাহাদত মন্ডলের ছেলে নজিম উদ্দিন মন্ডল ও বোয়ালদাহ মেছোপাড়ার মৃত হানিফ সর্দারের ছেলে আব্দুল খালেক।

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে কারখানার পানি খেয়ে শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ

ড.

আসিফ নজরুল
দক্ষতা উন্নয়নে ৬ হাজার এসএসসি পরীক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোশারফ হোসেন বলেন, ‘‘শ্রমিকদের ভাড়া করে এনে মিছিলের চেষ্টা করা হয়েছিল। পুলিশের তৎপরতায় তাদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’’

ঢাকা/কাঞ্চন/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ