‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্নাকে আরও পাঁচ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো
Published: 2nd, June 2025 GMT
‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী তামান্না শারমিনকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে পাঁচজন নিহতের মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফা শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
গত ১০ মে তামান্না শারমিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে বাকলিয়ায় জোড়া খুন, হত্যার হুমকির মামলা রয়েছে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, নগরের চান্দগাঁও থানায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে পাঁচজন নিহত হওয়ারর মামলায় তামান্না শারমিনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
আদালত সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত বছরের জুলাই-আগস্টে নগরের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট এলাকায় গুলিতে মারা যান হৃদয় চন্দ্র তরুয়া, মো.
আবেদনে বলা হয়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা ও গুলি চালায়। এসব ঘটনায় আসামিদের লোকজন ও অস্ত্র সরবরাহে তামান্না জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
গত ১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিং মল থেকে সাজ্জাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছুড়ে সাজ্জাদকে জামিনে ছাড়িয়ে আনার হুমকি দিয়েছিলেন তামান্না। গত ৩০ মার্চ বাকলিয়া অ্যাকসেস রোডে একটি প্রাইভেট কারে গুলি করলে দুজন নিহত হন।
এই ঘটনায় নিহত একজনের মা বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় সাজ্জাদ, তাঁর স্ত্রীসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। পুলিশ ইতিমধ্যে মামলায় তামান্নাসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে। বায়েজিদ এলাকায় ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ পাঁচ কারণে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত হয়।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?