প্যারোল মেলেনি সাবেক এমপির, জেলগেটে গেল মায়ের লাশ
Published: 3rd, June 2025 GMT
মায়ের মৃত্যুতেও প্যারোলে মুক্তি পাননি রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ। তবে, কারাফটকেই মৃত মায়ের মুখ শেষবারের মতো দেখার অনুমতি মিলে।
সোমবার (২ জুন) রাত সোয়া ৮টায় কারাফটকেই শেষবারের মতো মৃত মায়ের মুখ দেখেছেন তিনি।
আসাদুজ্জামান রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো এমপি হয়েছিলেন। গেল বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতন হলে তিনি গ্রেপ্তার হন। এখন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী।
আসাদুজ্জামানের মা সালেহা বেগম ৮০ বছর বয়সে গতকাল সোমবার বিকেলে মারা যান।
স্বজনেরা জানান, তার মৃত্যুর পর বড় ছেলে আসাদুজ্জামানের প্যারোলে মুক্তির জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু, নিরাপত্তাজনিত কারণে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়নি। তবে, সুযোগ দেওয়া হয়েছিল কারাফটকে মৃত মায়ের মুখটি একনজর দেখার।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার ও রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো.
জানা গেছে, আসাদুজ্জামান রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর ভাটাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তারা ৭ ভাই বোন। এর মধ্যে পাঁচ ভাই সরাসরি আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আসাদুজ্জামান কারাগারে, অন্য চারভাইও আত্মগোপনে।
আত্মগোপনে থাকা চার ভাইও মায়ের মুখ দেখার সুযোগ পাননি। শুধু এসেছিলেন সালেহা বেগমের তৃতীয় সন্তান আক্তারুজ্জামান। ভাই এমপি হলেও তিনি কোনো রাজনীতিতে জড়াননি। জীবিকা নির্বাহ করেন প্রাইভেটকার চালিয়ে।
স্বজনেরা জানান, বিকেলে বাড়ি গিয়ে মৃত মায়ের মুখ দেখেছেন আক্তারুজ্জামান। তবে, নিরাপত্তার সংশয়ে তিনিও অংশ নিতে পারেননি মায়ের জানাজায়।
ঢাকা/কেয়া/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আস দ জ জ ম ন র
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে ছোট গরুর বড় দাম
এক দিন পরই ঈদুল আজহা। কোরবানির এই উৎসবকে কেন্দ্র করে শেষ মুহূর্তে জমজমাট চট্টগ্রামের ২২৮টি স্থায়ী-অস্থায়ী পশুর হাট। প্রায় প্রতিটি হাটে এসেছে পর্যাপ্ত পশু। তবে দাম বেশ চড়া।
চট্টগ্রামে প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষের চাহিদা ছোট আকারের গরুর। তাই ব্যাপারীরা ছোট ও মাঝারি আকারের গরু বেশি নিয়ে এসেছেন। তবে আকার ছোট হলেও এসব গরুর দাম বেশি হাঁকছেন বিক্রেতা। গোখাদ্যের দাম ও পরিবহন খরচ বাড়ার কারণে ছোট গরুর দাম বেশি বলে দাবি করছেন তারা।
ওজনভিত্তিক গরুর আকার প্রসঙ্গে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর জানান, সাধারণত এক থেকে দুই মণ ওজনের গরু ছোট আকারের। দুই থেকে তিন মণ ওজনের গরু মাঝারি এবং এর ওপরের ওজনের গরু বড় আকারের। চট্টগ্রামে ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি। জোগানও রয়েছে। বড় খামারে দুই হাজার কেজি ওজনের (প্রায় ৫০ মণ) বেশ কিছু গরু আনা হয়েছে।
হামজারবাগ থেকে গতকাল বুধবার তিন ছেলেকে নিয়ে নগরের বিবিরহাটে কোরবানির গরু কিনতে এসেছেন দুই চাকরিজীবী মো. লোকমান ও মো. ইমন। সামর্থ্য না থাকায় দুই পরিবার এবার এক গরু দিয়ে কোরবানি করবে। বাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে থাকা বেশ কিছু গরু দেখেন তারা। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে দেখেও গরু না কিনে বাজার থেকে বের হতে দেখা যায় তাদের।
জানতে চাইলে মো. লোকমান বলেন, ‘আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই একই ভবনের আরেক পরিবারের সঙ্গে এবার কোরবানি করতে ছোট গরু কিনতে এসেছি। বাজারে ছোট ও মাঝারি গরু পর্যাপ্ত থাকলেও দাম বেশি। গতবার যেসব গরু ৬০ থেকে ৭০ হাজারে কেনা গেছে, এবার তার দাম চাইছে ১ লাখ ২০ হাজারের ওপরে।’
মো. ইমন বলেন, ‘ছোট অনেক গরু দেখে একটিও কিনতে পারিনি। কারণ গরু পছন্দ হলেও দাম বাজেটের চেয়ে বেশি। ছোট একটি গরুর দাম কেমনে লাখ টাকার ওপরে হয়? এত দাম দিয়ে কীভাবে কোরবানির পশু কিনবে মধ্যবিত্তরা? কোরবানি ঘনিয়ে এলেও দাম ছাড়ছেন না ব্যাপারীরা।’ এ দুই ক্রেতার মতো দাম বেশি নিয়ে হতাশার কথা প্রকাশের পাশাপাশি অনেকে ঝাড়লেন ক্ষোভও।
ভোলার লালমোহন থেকে দুই ট্রাক গরু নিয়ে আসা ব্যাপারী মো. ইদ্রিস বলেন, ‘বাজারে এবার ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি। তাই ছোট গরু বেশি এনেছি। তবে বেশির ভাগ ক্রেতা দাম শুনে চলে যাচ্ছেন। গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে এবার ছোট গরুর দাম কিছুটা বেশি।’ কুমিল্লা থেকে ৩০টি গরু নিয়ে এসেছেন ব্যাপারী মাহি উদ্দিন। এর মধ্যে ২০টি ছোট। মাহি উদ্দিন বলেন, ‘বড় গরু কেনে খুব কম মানুষ। বাজারে ছোট গরুর ক্রেতার সমাগম থাকলেও বিক্রি কম। বেশির ভাগ ক্রেতা দরদাম করছে কেবল। গরুর লালন-পালন খরচ বেশি। তাই সামান্য লাভে বিক্রি করা ছাড়া আমাদের উপায় নেই।’
চট্টগ্রামের পশুর হাটে কুমিল্লা, ফেনী, কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, বগুড়া, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, রাজশাহী, ভোলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশির ভাগ পশু আসে। এবার চট্টগ্রাম মহানগর ও উপজেলার ২২৮টি স্থায়ী-অস্থায়ী পশুর হাটে গত ২৯ মে থেকে পশু বেচাকেনা শুরু হয়েছে। নগরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ব্যবস্থাপনায় ১৩টি স্থায়ী-অস্থায়ী হাট বসেছে। এর মধ্যে বিবিরহাট, সাগরিকা ও নূরনগর হাউজিং সোসাইটির হাট বড়।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর বলেন, এবার পশুর চাহিদা রয়েছে ৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৬৯টি। এর বিপরীতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়েছে ৮ লাখ ৬০ হাজার ৮৮২টি, যা গতবার ছিল ৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৯টি। উৎপাদিত পশুর মধ্যে গরু আছে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮১৩টি। হাট মনিটরিংয়ে ৬৬টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করছে।