নিজেদের প্রযুক্তি ও সেবার ঝুঁকি মূল্যায়নে মানুষের বদলে এআই ব্যবহার করবে মেটা
Published: 3rd, June 2025 GMT
নিজেদের বিভিন্ন প্রযুক্তি ও সেবা উন্মুক্তের আগে নিয়মিত ঝুঁকি মূল্যায়ন করে থাকে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা। এ জন্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে আলাদা কর্মী বাহিনীও রয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে। এবার নতুন প্রযুক্তি ও সেবার ঝুঁকি মূল্যায়নে মানুষের বদলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের পথে হাঁটছে মেটা। নতুন এ পরিকল্পনার আওতায় মেটার ‘প্রাইভেসি অ্যান্ড ইনটিগ্রিটি রিভিউ’ প্রক্রিয়ার ৯০ শতাংশ এআইয়ের মাধ্যমে করা হবে। সম্প্রতি মেটার অভ্যন্তরীণ নথিপত্র পর্যালোচনা কর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনপিআর।
এনপিআরের তথ্যমতে, বর্তমানে মেটা নিজেদের অ্যালগরিদম হালনাগাদ বা নতুন নিরাপত্তাসুবিধা চালুর আগে কর্মীদের মাধ্যমে ঝুঁকি পর্যালোচনা করে থাকে। এই পদ্ধতিতে প্রযুক্তির সম্ভাব্য সামাজিক, নৈতিক ও তথ্য-সংক্রান্ত ঝুঁকি বিশ্লেষণ করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে নতুন পরিকল্পনায় এসব সিদ্ধান্তে মানুষের সম্পৃক্ততা কমিয়ে আনা হচ্ছে।
গত এপ্রিল মাসে মেটার ওভারসাইট বোর্ড ‘বিতর্কিত’ বক্তব্য প্রকাশে প্রতিষ্ঠানের অবস্থানকে সমর্থন জানানোর পাশাপাশি কনটেন্ট মডারেশনের ক্ষেত্রে মেটার নীতিমালা ও বাস্তব প্রয়োগের দুর্বলতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। বোর্ডের বিবৃতিতে বলা হয়, এই পরিবর্তনগুলো যেহেতু বিশ্বজুড়ে কার্যকর হচ্ছে, এখন মেটার উচিত এসব ব্যবস্থার মানবাধিকারের ওপর প্রভাব নিরূপণ করা। স্বয়ংক্রিয় কনটেন্ট শনাক্তকরণ ব্যবস্থার ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা বৈশ্বিকভাবে অসম প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত এপ্রিল মাসে মেটা নিজেদের ফ্যাক্ট-চেকিং কার্যক্রম বন্ধ করে ‘কমিউনিটি নোটস’ নামের জনসম্পৃক্ত যাচাইকরণের ব্যবস্থা চালু করেছে। নিজেদের বিভিন্ন প্রযুক্তি ও সেবার ঝুঁকি মূল্যায়নের এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করার বিষয়টি স্বীকার করে মেটা জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে শুধু কম ঝুঁকিপূর্ণ প্রযুক্তি ও সুবিধা চালুর ক্ষেত্রে এআই ব্যবহার করা হবে।
সূত্র: ম্যাশেবল
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা
রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।
উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।
সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।
তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।
মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।