ফ্যাসিস্টরা বিদায় নিয়েছে, কিন্তু ফ্যাসিজম রয়ে গেছে: জামায়াত আমির
Published: 3rd, June 2025 GMT
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “দুঃখজনক হলেও সত্য যে-ফ্যাসিস্টরা বিদায় নিয়েছে, কিন্তু ফ্যাসিজম রয়ে গেছে। এর কালো ছায়া এখনো জাতির ঘাড়ে রয়ে গেছে।”
মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীতে একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি না থাকায় জনগণ নানা ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। জাতীয় নির্বাচনের আগে আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাই।”
আরো পড়ুন:
সব মিলিয়ে আমরা জুলাই সনদ করব: প্রধান উপদেষ্টা
নারীকে ‘লাথি মেরে’ বহিষ্কার সেই জামায়াতকর্মী গ্রেপ্তার
জামায়াত আমির বলেন, “স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের (ইসির) সক্ষমতার বিষয়টিও জাতির সামনে পরিষ্কার হবে।”
জামায়াত আমির বলেন, “আমরা আশা করি-সরকার সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে আগামী জুলাই মাসের মধ্যেই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র পাস’ করে তার ভিত্তিতে মৌলিক সংস্কার কার্যক্রম শেষ করবে।”
তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা সংশোধন করে একটি নির্ভুল ভোটার তালিকা জাতির সামনে পেশ করবেন। সেই ভোটার তালিকায় অবশ্যই প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের তালিকাভুক্ত করতে হবে। সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের একটি পরিবেশ সৃষ্টি করবেন।”
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জামায়াত প্রধান বলেন, “প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঘোষিত নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। আগামী বছর রোজার আগে বা পরে নির্বাচন হতে পারে। তবে সময় বেঁধে দেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের নেই।”
তিনি বলেন, “প্রবাসীদের ভোটার করার বিষয়ে আমরা অনেক আগে থেকেই কথা বলে আসছি। কিন্তু ইসির দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না, আমরা উদ্বিগ্ন।”
ডা.
তিনি আরো বলেন, “বিগত দিনগুলোতে দফায় দফায় আমাদের ওপর বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক ও অন্যায্য বুঝা চাপানো হয়েছে। অসংখ্য মানুষকে গুম করে আয়নাঘরে বন্দী রেখে বছরের পর বছর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। দেশের আলেম ও সাংবাদিক সমাজও এর থেকে রেহাই পায়নি। সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর-রুনীর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এখনো বেদনাদায়ক হয়ে আছে।”
জামায়াত আমির বলেন, “২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনের সব শর্ত মেনে জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধিত হয়েছিল। তারপরও সম্পূর্ণ অনৈতিক ও অন্যায্যভাবে আদালতের ন্যায়ভ্রষ্ট রায়ের মাধ্যমে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়।”
তিনি বলেন, “গত ১ জুন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সর্বসম্মত রায়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়কে অবৈধ এবং বাতিল ঘোষণা করে। একই সাথে ২০১৩ সালের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন আদালত।”
তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি অতি দ্রুত অফিসিয়ালি আমাদের নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পাব। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, তারা যেন তাদের মর্যাদা রক্ষা করেন।”
সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক, দুঃশাসন এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার নিজেদের অঙ্গীকারের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন জামায়াত আমির।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, পাকিস্তান, ভারত, সুইডেন, নরওয়ে, ডেনমার্কসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও কূটনীতিকরা।
জাতীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (একাংশের) আমির মাওলানা আবু জাফর কাসেমী ও মহাসচিব মুফতি ফখরুল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, জাগপার সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইউসুফ।
মাদরাসা-ই-আলিয়ার ঢাকার অধ্যক্ষ প্রফেসর মুহাম্মদ ওবায়দুল হক, তা’মিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার (মিরহাজিরবাগ) ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. খলিলুর রহমান মাদানী, উত্তর বাড্ডা ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. আনোয়ার হোসাইন মোল্লা, মেসবাহুল উলুম কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. মাওলানা মতিউদ্দিন, নেছারিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু হানিফ, মুফতি নুরুজ্জামান নোমানি, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আযম মীর শাহিদুল আহমদ, দৈনিক নয়া দিগন্তের নির্বাহী সম্পাদক সালাউদ্দিন বাবর, বার্তা সম্পাদক মাসুমুর রহমান খলিলী, প্রবীণ সাংবাদিক এলাহী নেওয়াজ খান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, দৈনিক সংগ্রামের চিফ রিপোর্টার শামসুল আরেফীন, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. উমার আলী, প্রখ্যাত অর্থপেডিক্স সার্জন ডা. ইকবাল হোসাইন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব হাসান নাসির, লে. কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান প্রমুখ।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দের সঞ্চালনায় সংগঠনের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, অ্যাডভোকেট মুয়াযযম হোসাইন হেলাল, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবাযের ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, আবদুর রব ও মোবারক হোসাইন, জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিন ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দামসহ সেক্রেটারিয়েটের সদস্যরা প্রমুখ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ম ল ম দর স র জ ম য় ত আম র ল ইসল ম র রহম ন র বল ন আম র ম আম দ র হ স ইন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে সোনারগাঁয়ে বৃক্ষ রোপণ
আজ ৫ জুন (বৃহস্পতিবার) বিশ্ব পরিবেশ দিবস। পরিবেশ সুরক্ষার জন্য সচেতনতা এবং পদক্ষেপ গ্রহণকে উৎসাহিত করতে দিবসটি পালিত হয়ে থাকে। এবারের প্রতিপাদ্য স্লোগান-‘প্লাস্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনই সময়’।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে এক যুগে বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলায় বৃক্ষ রোপণ ও বিতরন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে।
পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটি, পরিবেশ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ, মিশন গ্রীন বাংলাদেশ, গ্রীন ও ক্লিন সোনারগাঁও ও বেলা সংস্থার যৌথ উদ্যোগে সোনারগাঁওয়ের সনমান্দী অলিপুরা রাস্তায় বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ঈদুল আজহা উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি থাকায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় আগামী ২৫ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি পালন করবে।
পরিবেশ দিবসের মূল উদ্দেশ্য-পরিবেশ দূষণের কারণ চিহ্নিত করা, নীতি-নির্ধারণে গুরুত্বারোপ, প্রতিরোধের উপায় নিরূপণ করাসহ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে সক্রিয়তা বাড়াতে কাজ করা।
জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) উদ্যোগে ১৯৭৩ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘ বিশ্ব পরিবেশ দিবস (ডব্লিউইডি) পালিত হয়ে আসছে।
বিশ্বের ১৪৩টিরও বেশি দেশে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশেও সরকারি ও বেসরকারিভাবে নানা সংগঠন দিবসটিকে কেন্দ্র করে র্যালি, বৃক্ষরোপণ, আলোচনা সভা ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
পরিবেশ সুরক্ষায় অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও নানা কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। বৈশ্বিকভাবে প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণে এবং পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে জাতিসংঘের পরিবেশ অ্যাসেম্বলির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি প্রণয়নের কাজ চলছে।