অপেক্ষার অবসান বিরাট-বেঙ্গালুরুর, প্রীতির পাঞ্জাবকে হারিয়ে জিতল আইপিএল শিরোপা
Published: 3rd, June 2025 GMT
অবশেষে বিরাট কোহলির হাতে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা। অবশেষে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর শোকেসে উঠছে আইপিএলের ট্রফি। অবশেষে সেই সোনালী ট্রফিতে লিখা হলো বেঙ্গালুরুর নাম।
১৭ বছর পেরিয়ে ১৮ বসন্তে এসে আইপিএলের শিরোপা জিতল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। ৬ রানে হারাল প্রীতি জিনতার দল পাঞ্জাব কিংসকে। তাদেরও জেতা হয়নি আইপিএল শিরোপা। প্রীতির আক্ষেপের রাতে আহমেদাবাদে উৎসব করলো বেঙ্গালুরু।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য ২৯ রান লাগত পাঞ্জাবের। জয়ের সমীকরণ তখনও ছিল পাঞ্জাবের। পেসার জস হ্যাজেলউডের প্রথম বলে শশাঙ্ক সিং কোনো রান নিতে পারলেন না। সীমানায় দাঁড়িয়ে ফিল্ডিং করা বিরাট চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না। পরের বল আবারো ডট। এবার অন্তত জয় নিশ্চিত বলাই যায়। বিরাট আবেগে ভাসলেন। চোখ দিয়ে পানি ঝরছেই।
আরো পড়ুন:
কোহলির দশম শ্রেণির মার্কশিট ভাইরাল
টেস্ট ক্রিকেটের শেষ অধ্যায় লিখে ফেললেন কোহলি
সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে বেঙ্গালুরুর এক সময়ের নিয়মিত ক্রিকেটার এবি ডিভিলিয়ার্স। আবেগে ভাসলেন ডি ভিলিয়ার্স। গ্যালারিতে ছিলেন ক্রিস গেইল। উল্লাসে মাতলেন ক্যারিবীয়ান কিংবদন্তিও।
এরপর শশাঙ্কের চার বলের তাণ্ডব। তিন ছক্কা, এক চার। ২২ রান যোগ হলো। তারপরও ৬ রানের ঘাটতি। শেষ বল ডিপ কভার দিয়ে ছক্কা হলো। কিন্তু ওই ছক্কায় নজর নেই কারো। সব চোখ, সব ক্যামেরা যেন একটি চেহারাই খুঁজে বেরাচ্ছিল। বিরাট কোহলি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে, ঘরোয়া ক্রিকেটে সব অর্জনে তার নাম লিখা। কেবল লিখা ছিল না একটি আইপিএলের শিরোপা। ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে সেই স্বাদটাও পেয়ে গেলেন।
জয় চূড়ান্ত হতেই মাটিতে বসে পড়লেন। চোখ দিয়ে পানি ঝরছেই। সতীর্থরা এসে তাকে তুলে নিললেন। এরপর বুনো উল্লাসে বুঝিয়ে দিলেন এই শিরোপা কতটা বিশেষ, কতটা অরাধ্য। ২০০৮ সালে বেঙ্গালুরুতেই আইপিএল অভিষেক হয়েছিল তার। ১৭ বছর পর বিরাটের হাতে প্রথম শিরোপা। প্রথম শিরোপা বেঙ্গালুরুরও। লম্বা এই সময়ে বিরাট ও বেঙ্গালুরুর পথ আলাদা হয়নি। অনেক উত্থান পতন হলেও পথ ভোলেনি কেউ। দুয়ের মিলিত শক্তিতেই এবার দেখা মিলল প্রথম শিরোপা।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বেঙ্গালুরু ৯ উইকেটে ১৯০ রান করে। এর আগে তিনবার ফাইনালে উঠেও শিরোপা জেতা হয়নি বিরাটের। এবার পারলেন। বোলাররা পাঞ্জাবকে আটকে দিলেন ১৮৪ রানে। ৬ রানের জয়ে অধরা শিরোপা নিশ্চিত হলো আরসিবির।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক হল প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।