নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে সক্ষম কিনা, তা প্রমাণে আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় জামায়াতে ইসলামী। দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ফ্যাসিস্টের পতন হলেও ফ্যাসিবাদের কালো ছায়া রয়ে গেছে। ফ্যাসিবাদ বিলোপে প্রয়োজন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। যার মাধ্যমে ন্যায্য সরকার গঠিত হবে।

জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়া উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। নির্বাচন কীভাবে হবে– প্রশ্ন রেখে শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম কেয়ারটেকার সরকারের রূপরেখা দিয়েছিলেন। এর ভিত্তিতে একানব্বইয়ের নির্বাচন হয়, যা বাংলাদেশের সবচেয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন। 
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সমস্যা হলো, জিতলে বলে নির্বাচন সুষ্ঠু, হারলে বলি দুষ্ট। ন্যায়বিচারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সম্পন্ন করে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে। যেখানে জনগণ ভোট দিতে পারবে। কেউ ভোট ইঞ্জিনিয়ারিং করার দুঃসাহস দেখাবে না।

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার বিএনপি। নির্বাচনের বিচার, সুষ্ঠু ভোটার তালিকা, জুলাই সনদ, ঘোষণাসহ পাঁচটি ন্যূনতম সংস্কারের শর্ত দিয়ে জামায়াত আমির বলেন, প্রধান উপদেষ্টা একটি সময়সীমা দিয়েছেন, জামায়াতও মতামত দিয়েছে। আগামী রমজানের আগে নির্বাচন হতে পারে। কোনো কারণে যদি নির্বাচন না হয়, তাহলে এপ্রিলের মধ্যে হওয়া উচিত। 

গুমের শিকার এবং আওয়ামী লীগ আমলে বরখাস্ত সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের কয়েকজন সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন। বরখাস্ত কর্নেল হাসিন প্রশ্ন করেন, সশস্ত্র বাহিনীর সংস্কার, জাতীয় নিরাপত্তা নীতিমালা প্রণয়নে জামায়াতের অবস্থান কী? জবাবে জামায়াত আমির বলেন, শুধু সেনাবাহিনী কেন, আরও জায়গায় অনেক সংস্কার দরকার। বেশি জরুরি রাজনৈতিক দলের সংস্কার। 
তিনি বলেন, আশা করছি, দ্রুত নিবন্ধন এবং প্রতীক ফিরে পাব। এখনকার নির্বাচন কমিশন যেন চেয়ারের সম্মান করে জামায়াতকে প্রতীক ফিরিয়ে দেয়। ব্যতিক্রম হলে জামায়াত চুপ থাকবে না। 
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির মজিবুর রহমান, ডা.

সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাছুমসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইস

এছাড়াও পড়ুন:

কুংফুর প্যাচে মিলল ৪৩ কোটি বছর পুরোনো মাছের পূর্ণাঙ্গ ফসিল

২০১৯ সাল। চীনের চংকিং প্রদেশে তিন জীবাশ্মবিদ কাজের বিরতিতে একে অপরের সঙ্গে মজা করছিলেন। হঠাৎ করে একজন কুংফুর জটিল প্যাঁচ মেরে আরেকজনকে একটি পাথরের ঢিবির উপর আছড়ে ফেললেন। যাকে আছড়ে ফেলা হয়েছিল, তিনি ব্যাথা পেলেন ঠিক। কিন্তু তার শরীরের চাপে নমনীয় সেই পাথর ভেঙে বেরিয়ে এসেছিল এমন এক মূল্যবান জিনিস, যা পরে তুমুল আলোড়ন তুলেছে জীব বিজ্ঞানী মহলে। ওই তিন জীবাশ্মবিদ মনের অজান্তেই আসলে আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন এখন পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে পুরোনো মাছের ফসিল, যা ৪৩ কোটি বছর ধরে ফসিল আকারে সংরক্ষিত।
    
ডিসকভারি নিউজের এক খবরে বলা হয়, ওই তিন জীবাশ্মবিদ যে মাছের ফসিলটি আবিষ্কার করেছিলেন সেটি ছিলো একটি প্রাগৈতিহাসিক জ্য ফিশ বা শক্ত চোয়ালযুক্ত মাছ। 

এর আগেও চীনের চংকিং প্রদেশে নানা প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীর ফসিল আবিষ্কার হয়েছে। নিকটবর্তী গুইঝো প্রদেশেও পাওয়া গেছে অনেক প্রাণীর ফসিল। ফলে নতুন জ্য ফিশটির ফসিল আবিষ্কার বিজ্ঞান মহলে আলোড়ন তুলেছে। কারণ কার্বন ডেটিংয়ের মাধ্যমে দেখা গেছে, এই ফসিলটি পূর্বে পাওয়া যে কোনো মাছের জীবাশ্মের চেয়ে অন্তত ১ কোটি ১০ লাখ বছরেরও বেশি পুরোনো।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ফসিলের আবিষ্কারটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমে ধারণা করা যাচ্ছে যে মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণীদের চোয়াল প্রায় ৪৫ কোটি বছর আগেই বিবর্তিত হয়েছিল। যদিও এই আবিষ্কারের আগে হাঙরের একটি নতুন প্রজাতির ফসিল পাওয়া গিয়েছিল যা ৪৩ কোটি বছর বয়সী, যার মধ্যে চোয়াল থাকার লক্ষণ ছিলো স্পষ্ট। তবে এত পুরোনো জ্য ফিশের ফসিল এবারই প্রথম মিলল।
  
সম্প্রতি এই আবিষ্কারের ওপর চারটি গবেষণাপত্র প্রকাশকারী দলের নেতৃত্ব দেওয়া জীবাশ্মবিদ ঝু মিন বলেন, এটা আসলে স্বপ্নের মতো। আজ আমরা সম্পূর্ণ প্রাথমিক সিলুরিয়ান যুগের একটি মাছের দিকে তাকিয়ে আছি, যা পূর্ববর্তী প্রাচীনতম আবিষ্কারগুলির চেয়ে ১ কোটি ১০ লাখ বছরেরও পুরোনো। এটা আমার কাছে সবচেয়ে উত্তেজনাকর এবং সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং জীবাশ্ম; যা নিয়ে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ