তিন দাবিতে ২৮ জুন সোহরাওয়ার্দিতে ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশ
Published: 4th, June 2025 GMT
সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনের দাবিতে ২৮ জুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। গত মঙ্গলবার ৩ জুন রাতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নিয়মিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৪ জুন) দলটির মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চায় রাষ্ট্রের মৌলিক ও প্রয়োজনীয় সংস্কার, পতিত ফ্যাসিবাদের বিচার এবং পিআর পদ্ধতিতে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন। এই দাবিকে সামনে রেখে আগামী ২৮ জুন দুপুর ২টায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন। ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব মহাসমাবেশে দিকনিদের্শনামূলক বক্তব্য রাখবেন।
তিনি বলেন, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দেশের সকল প্রান্ত থেকে লাখো জনতা রাজধানীতে জড়ো হবে। সরকারের কাছে এই তিন দফা দাবি পূরণের আহ্বান রাখবে তারা। একই সাথে দেশ-বিদেশের সকল ষড়যন্ত্রকারীর প্রতি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হবে যে, বাংলাদেশের মানুষ সংস্কার, বিচার ও পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ আছে।
স্বাধীনতার ৫৪ বছরে রাষ্ট্র নাগরিকদের প্রতিষ্ঠান হওয়ার বদলে স্বার্থান্বেষী মহলের গোষ্টিস্বার্থ হাসিলের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে জানিয়ে দলটির মহাসচিব বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পরে রাষ্ট্রকে জনতার প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। আর সেজন্য দরকার সংস্কার। গোটা জাতি রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। সংস্কারে সরকারের সদিচ্ছার কথা শোনা গেলেও সংস্কার এখনো দৃশ্যমান হয় নাই। কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংস্কার প্রশ্নের চেয়ে অন্যান্য বিষয় প্রধান্য পাচ্ছে।
তিনি বলেন, পতিত স্বৈরতন্ত্র জুলাই-আগস্টে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। আরো কয়েক হাজার মানুষকে পঙ্গু করেছে, অন্ধত্বের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিগত পনের বছরে শতশত মানুষকে গুম করেছে। খুন করেছে। দেশের হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। এমন সংঘবদ্ধ নৃশংস অপরাধী চক্রের বিচার হওয়া জনতার প্রাণের দাবী। বিচারের কাজ শুরু হলেও তার গতি শ্লথ; যা মানুষকে আশাহত করছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পা পিছলে ট্রেনের নিচে সবজি বিক্রেতা, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
চলন্ত ট্রেনের সামনে দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছেন এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি। পাশাপাশি দুটি ট্রেন তুলনামূলক কম গতিতে চলছিল। হঠাৎ একটি ট্রেনের সামনে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যান তিনি। ট্রেনটি চলে যায় তাঁর শরীরের ওপর দিয়ে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির নাম জালাল উদ্দিন ওরফে জালু (৪০)। তিনি ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে চরআলগী ইউনিয়নের নিধনিয়া চর ব্যাপারী পাড়ার বাসিন্দা ও পেশায় সবজি বিক্রেতা ছিলেন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর রেলস্টেশন এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি।
দুর্ঘটনার পর জালাল উদ্দিনকে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা বিজন মালাকার।
স্বজনেরা জানিয়েছেন, জালাল উদ্দিন এলাকায় কৃষিকাজ করেন এবং সেখান থেকে কৃষিপণ্য নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে বিক্রি করেন। তিনি প্রায়ই ট্রেনে চেপে শ্রীপুর যান এবং রাতের ট্রেনে বাড়ি ফেরেন। গতকাল দুপুরে শাকসবজি নিয়ে ট্রেনে শ্রীপুর যান। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জগামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে ধরতে রাত পৌনে ৯টার দিকে তিনি দৌড় দেন। এ সময় ট্রেনটি শ্রীপুর স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম থেকে ছেড়ে যাচ্ছিল। সেটি ধরতে গিয়ে পাশের রেললাইনে থাকা ঢাকাগামী মহুয়া এক্সপ্রেসের ট্রেনের নিচে পড়ে যান জালাল উদ্দিন।
নিহত ব্যক্তির প্রতিবেশী ও গফরগাঁও কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ব্যাপারী জানান, আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে জানাজা শেষে জালাল উদ্দিনকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় তাঁর পরিবার একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিকে হারাল।
ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতার হোসেন বলেন, স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রেলওয়ে পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন শ্রীপুর থানার ওসি মহম্মদ আবদুল বারিক।