শিক্ষা খাতে ব্যয় বরাদ্দ কমানো দুঃখজনক: জাতীয় শিক্ষা সংস্কৃতি আন্দোলন
Published: 4th, June 2025 GMT
শিক্ষা খাতে ব্যয় বরাদ্দ হ্রাসের প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষা সংস্কৃতি আন্দোলন। সংগঠনের আহ্বায়ক মাহমুদ সেলিম ও সদস্যসচিব রুস্তম আলী বিবৃতিতে বলেছেন, ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষা খাতে ব্যয় বরাদ্দ বৃদ্ধি না করে বরং হ্রাস করেছে। এটি দুঃখজনক, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত।
মূলত ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গঠিত হওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের এহেন আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি। নেতারা বলেছেন, ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানের ফলাফল আজকের অন্তর্বর্তী সরকার, অথচ সেই সরকারই বিগত সরকারের তুলনায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ব্যয় হ্রাস করেছে। শুধু তা–ই নয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা খাতে সরকার আশঙ্কাজনকভাবে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি ব্যয় হ্রাস করেছে। এই মন্ত্রণালয়ের জন্য ৩৫ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে বিদায়ী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছিল ৩৮ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা। অন্যদিকে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি করেছে। দেশে কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্র কম থাকায় এই খাতের বড় অঙ্কের টাকা মাদ্রাসা শিক্ষায় ব্যয় হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এই সিদ্ধান্ত চতুর্থ শিল্পবিপ্লব মোকাবিলায় বিজ্ঞানমনস্ক নাগরিক গড়ে তোলার পথে অন্তরায়।
বিবৃতিতে মাহমুদ সেলিম ও রুস্তম আলী বলেন, ইউনেসকোর সুপারিশ অনুযায়ী সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে জাতীয় আয়ের ৬ শতাংশ ও মোট বাজেটের ২০ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও রাজনৈতিক সরকারগুলো সে দায়িত্ব কখনোই পালন করেনি। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সেই প্রত্যাশা থাকলেও সরকার তা পূরণ না করায় বাজেট বিশ্লেষক ও শিক্ষাবিদদের মধ্যে এ নিয়ে গভীর ক্ষোভ ও হতাশার জন্ম দিয়েছে।
সরকার মোট বাজেটের ১৪ শতাংশ শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দের দাবি করলেও বাজেটের খাতগুলো অতি বিভাজন করে খাতওয়ারি শিক্ষা বাজেটকে বড় করে দেখানোর কৌশল গ্রহণ করেছে। তা না হলে বিগত বাজেটে টাকার অঙ্ক বড় হওয়া সত্ত্বেও বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ১১ শতাংশ। জাতীয় আয়ের মাত্র ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ বরাদ্দ দিয়ে সরকার শিক্ষা খাতকে যে অবহেলা করেছে, এই ব্যয় হ্রাস তারই প্রমাণ।
বিবৃতিতে দক্ষ, মানবিক ও বিজ্ঞানমনস্ক দেশপ্রেমিক জাতিগোষ্ঠী গড়ে তুলতে অবিলম্বে শিক্ষা খাতে ইউনেসকোর সুপারিশ অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দের জোর দাবি জানানো হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি বাস্তবায়নে কমিটি
সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (গভর্নেন্স পারফরমেন্স মনিটরিং সিস্টেম- জিপিএমএস)’ বাস্তবায়নে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে তিন সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করেছে সরকার।
সম্প্রতি এই কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
কমিটিতে বাকি দুই সদস্য হলেন, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সরকারি কাজের জবাবদিহিতা, দক্ষতা ও জনকল্যাণ নিশ্চিতে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের মূল্যায়নের নতুন পদ্ধতি চালু হয়েছে। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) পরিবর্তে নতুন সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (জিপিএমএস) চালু করা হয়েছে। এই জিপিএমএস বাস্তবায়নে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব বা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার), বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব কমিটিকে সহায়তা করবেন। তাছাড়া, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।
এ কমিটি জিপিএমএস বাস্তবায়নের বিষয়ে সার্বিক দিক-নির্দেশনা দেবে। মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসে সেকশন ১-এর আওতায় প্রস্তুত করা পরিকল্পনা অনুমোদন দেবে এবং অর্থবছর শুরুর আগে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত করবে এ কমিটি।
এছাড়া, প্রতি অর্থবছর শেষে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসের সার্বিক মূল্যায়ন পর্যালোচনা করে সুপারিশ দেবে। জিপিএমএস বিষয়ে সরকারের দেওয়া অন্য যেকোনো দায়িত্ব পালন করবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা