গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে ইসি তার কাজ সম্পন্ন করেছে
Published: 4th, June 2025 GMT
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন (ইসি) তার কাজ সম্পন্ন করেছে। এ বিষয়ে ইসি আর কোনো চিঠি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখছে না। উচ্চ আদালতের এ সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণ পর্যালোচনা করে আজ বুধবার বিকেলে ইসি এ কথা জানিয়েছে।
আজ বিকেলে নির্বাচন ভবনে ইসির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। পরে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো.
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশেনের একটি নির্বাচনী দরখাস্ত এবং আপিল বিভাগের পর্যবেক্ষণটি নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণ বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপিল বিভাগ নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা এবং ‘সুপ্রিমেসি অন ইলেকশন ম্যাটারস’ আবারও প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এ ক্ষেত্রে পাঁচটি মামলার রেফারেন্স দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। রেফারেন্সগুলোতে বলা আছে, নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয় তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে, এটি সম্পন্ন হয় গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে।
ইসি যে গেজেট প্রকাশ করেছিল, সেটা বাতিল করা হয়নি উল্লেখ করে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, তাই ইসি মনে করে ইসি ইতিমধ্যে তাদের কাজ সম্পন্ন করেছে। ইসি আর কোনো চিঠি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করছে না। কারণ, আপিল বিভাগ ইসির গেজেট বাতিল করেনি।
এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের কাজ। শপথের বিষয়টি কারা করবে, তা স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশেন আইনে পরিষ্কারভাবে বলা আছে। তিনি বলেন, ইসি স্থানীয় সরকারকে যে চিঠি দিয়েছিল সেখানে কোনো আইনি জটিলতা বা অন্য কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
৭৫ আসনের সীমানা পরিবর্তন করতে ৬০৭ আবেদন
জাতীয় সংসদের ৭৫ আসনের সীমানা পরিবর্তন করতে ৬০৭ আবেদন জমা পড়েছে। যে আসনগুলোতে আবেদন আসেনি, সেগুলোর সীমানায় হাত দেবে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আমরা সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা করেছি। এটি মুলতবি করা হয়েছে। ঈদের পরে মূল আলোচনা হবে।
কোনো গাইডলাইন করেছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনে যে বিষয়গুলো আছে প্রশাসনিক অখণ্ডতা, ভৌগোলিক সুবিধা, স্ট্যাটাস, জনসংখ্যা, ভোটসংখ্যা এবং ঐতিহাসিক ভিত্তিও সীমানা পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেবো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ২২৫ আসনে কোনো আবেদনই পড়েনি। সেগুলোতে আমরা হাত দেবো না।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইশর ক হ স ন গ জ ট প রক শ ত ইস গ জ ট প রক শ আপ ল ব ভ গ ন কর ছ
এছাড়াও পড়ুন:
হবিগঞ্জে কনসার্টে বিশৃঙ্খলার পর নারীদের হেনস্তা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ
হবিগঞ্জ শহরের জালাল স্টেডিয়ামে গত শনিবার রাতে আয়োজিত এক কনসার্টে বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে। সে সময় ভিড়ের মধ্যে নারী দর্শকদের সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে পুলিশ বলছে, নারীদের হেনস্তার বিষয়টি সত্য নয়। আয়োজকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। তাঁদের একটি পক্ষ অপপ্রচারে নেমেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শহরের জালাল স্টেডিয়ামে বৃন্দাবন সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে গত শনিবার দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই রজতজয়ন্তীর কনসার্টে সন্ধ্যার পর থেকেই বিপুল দর্শকের ভিড় জমে। রাত আটটার দিকে মঞ্চে প্রথমে কণ্ঠশিল্পী আশিক, বাঁধন ও ইপা গান পরিবেশন করেন। এরপর জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘লালন’ চারটি গান পরিবেশন করে। এর কিছুক্ষণ পরেই সাউন্ড সিস্টেমের তার ছিঁড়ে যাওয়ায় অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় সাউন্ড ঠিক করার আগেই উৎসুক দর্শকদের মধ্যে থেকে এক তরুণ একটি বোতল ছুড়ে মারেন মঞ্চের দিকে। সেই বোতল মঞ্চে না গিয়ে অপর এক দর্শকের মাথায় লাগে। এ ঘটনায় একপর্যায়ে দর্শকসারিতে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। চেয়ার ভাঙচুর, বোতল নিক্ষেপ, ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে যান অনেকে। এই সুযোগে কয়েকজন দুষ্কৃতকারী কিছু নারীর সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ, গলার চেইন ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃন্দাবন সরকারি কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা গান শুনতে গিয়েছিলাম, ভয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরেছি।’
কলেজের আরেক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, ‘আমরা পরিবারসহ অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ ভয়ানক অবস্থা হয়। ভিড়ের মধ্যে কয়েকজন আমার গলার চেইন ছিঁড়ে নেয়। আমি চিৎকার করেও কাউকে পাইনি।’
মেয়েদের জন্য আলাদা নিরাপত্তা ছিল না অভিযোগ করে এক শিক্ষার্থী বলেন, যখন দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়, তখন সবাই প্রাণ বাঁচাতে দৌড় দেন। সে সময় অনেক মেয়েই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
চেয়ারের ধাক্কা ও ভিড়ে পিষ্ট হওয়া অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে চিকিৎসা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন হবিগঞ্জ জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।
এ ঘটনার পর হবিগঞ্জে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে। বেশির ভাগ মানুষ বলছেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আনন্দের জায়গা, ভয়ের নয়। তাঁরা ভবিষ্যতে বড় কোনো আয়োজনে যথাযথ নিরাপত্তাব্যবস্থা, নারী দর্শকদের জন্য পৃথক প্রবেশপথ ও সিসিটিভি মনিটরিংয়ের দাবি জানিয়েছেন।
ফেসবুকে শরীফ আহমেদ নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন, এ দায় এড়ানো যায় না। যত বড় আয়োজনই হোক, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে অনুষ্ঠান করে একেবারেই দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন আয়োজকেরা।
সুকোমল রায় নামে আরেকজন ফেসবুকে লিখেন, জালাল স্টেডিয়ামের কনসার্টে নারীদের প্রতি অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের এই ঘটনা সামাজিকভাবে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় প্রশাসনের তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করা উচিত।
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক শাহ রাজীব আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, দর্শকদের মাঝখান থেকে একজন বোতল ছুড়ে মারেন মঞ্চের দিকে। সেই বোতল এক দর্শকের ওপর পড়লে এ বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। কোনো নারী হেনস্তার শিকার হননি। একটি পক্ষ অনুষ্ঠানের সফলতা নষ্ট করতে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। বাস্তবতার সঙ্গে যার মিল নেই বলে তিনি দাবি করেন।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম শাহবুদ্দীন শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, আয়োজকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। তাঁদের একটি পক্ষ এ অপপ্রচার করছে। নারীদের হেনস্তার বিষয়টি সত্য নয়। পুরো এলাকা পুলিশ ঘিরে ছিল। মাঠ থেকে তাড়াহুড়া করে বের হতে গিয়ে অনেকেই আহত হন। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত করে দেখেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যা প্রচার করা হচ্ছে, তা ভুয়া, কোনো সত্যতা নেই।