দাবি আদায়ে টানা ১৫ দিন ধরে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশানুরূপ সাড়া পাননি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার তাঁদের প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে। আজ বুধবারও প্রতিনিধিদলটি সচিবালয়ে গেছে। তারা ফিরে এলে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।

সাত দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা। এর মধ্যে রয়েছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) চেয়ারম্যানের পদত্যাগ; এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস) একীভূত করে অন্য বিতরণ সংস্থার মতো পুনর্গঠন; মিটার রিডার, লাইন শ্রমিক ও পোষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিত করা।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে আন্দোলন করছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা। অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তাজুল ইসলাম আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে দাবি মানার বিষয়ে কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি। যে সাতটি দাবি আছে, এর মধ্যে কিছু দাবি আছে এখনই মেনে নিয়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। আর কিছু দাবি আছে সময়সাপেক্ষ এবং প্রক্রিয়া মেনে করতে হবে। সেগুলোর বিষয়ে সময় নিয়ে বাস্তবায়ন করবে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক আলোচনার প্রস্তাব আসেনি। তবে অনানুষ্ঠানিকভাবে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এখনো একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে আছে। দাবি মানা না হলে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে।

মিটার রিডার, লাইন শ্রমিক, পোষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিত করাসহ ৭ দাবিতে টানা ১৫ দিন ধরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যয়ের মুখে

বিপর্যয়ের মুখে পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহ ব্যবস্থা। আজ থেকে শুরু হচ্ছে ঈদের ছুটি। এর আগেই গতকাল মঙ্গলবার থেকে সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গণছুটিতে যান। ফলে দেশের অনেক স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা না থাকায় সরবরাহ ব্যবস্থা মেরামত কাজও করা যাচ্ছে না। সারাদেশে প্রায় ৪৮টি সমিতিতে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। অনেক এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন দেড় কোটি গ্রাহক। কয়েকটি স্থানে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে হামলা চালিয়েছেন গ্রাহকরা।

দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিতরণ করছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। দেশের ৪ কোটি ৮২ লাখ বিদ্যুৎ গ্রাহকের মধ্যে আরইবির গ্রাহক ৩ কোটি ৬৮ লাখ। দেশজুড়ে সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার। আরইবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি একীভূতকরণ এবং অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন, চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের স্থায়ী নিয়োগসহ নানা দাবিতে গত জানুয়ারি থেকে আন্দোলন করছেন সমিতির কর্মীরা। এর ধারাবাহিকতায় গত ২১ মে থেকে শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। আন্দোলনে গত কয়েক দিনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও  সংগঠন সংহতি জানিয়েছে। আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, এখন আর পেছনে ফেরার উপায় নেই। আমরা দাবি আদায় করেই ঘরে ফিরব। কাজে ফিরব। 

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, তারা যেসব দাবি তুলে ধরেছেন, সেগুলো পূরণ করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। যেমন– পল্লী বিদ্যুৎ ও সমিতি একীভূত করা। এখানে আইনি নানা বিষয় রয়েছে। শহীদ মিনারে বসে থাকলে তো চলবে না। আবার তারা আরইবির চেয়ারম্যানের অপসারণ চেয়েছে। সরকার তো সমাবেশ দেখে কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না।

বিদ্যুৎ নেই অনেক এলাকায়

সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ ও ২, গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে গণছুটির কারণে লাইনম্যানরা কাজ করছেন না। ফলে ঝড়বৃষ্টিতে যে সব স্থানে লাইন বন্ধ হয়েছে, তা আর চালু করা সম্ভব হবে না। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম-২ সমিতির লাইনম্যানরা কাজ বন্ধ রাখেন। এতে কয়েকটি উপকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুরে পবিসের সব লাইনম্যান কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গ্রাহকেরা কেন ভোগান্তির শিকার হবেন
  • আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত পল্লী বিদ্যুতের কর্মীদের, ফিরছেন কাজে
  • লিখিত আশ্বাসে ১৬ ‍দিন পর আন্দোলন স্থগিত করল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি
  • দাবি না মানলে ‘গণছুটি’তে যাওয়ার হুঁশিয়ারি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের
  • অনড় পল্লী বিদ্যুতের কর্মীরা, গ্রামে গ্রাহকের ভোগান্তি
  • পল্লী বিদ্যুতের সংকট সমাধানে সরকার ব্যর্থ: ক্যাব
  • পল্লী বিদ্যুৎ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের এজেন্ডা বাস্তবায়নে এগোচ্ছে সরকার: ক্যাব
  • পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যয়ের মুখে