কুষ্টিয়ার সাবেক দুই সংসদ সদস্য (এমপি) কামারুল আরেফিন ও সেলিম আলতাফ জর্জের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে কামারুলের কয়েকটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের (ফ্রিজ) আদেশও দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ ছুমিয়া খানম এ আদেশ দেন।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নীল কমল পাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘কয়েক দিন আগে পৃথক আবেদন করা হয়েছিল। আজ (বুধবার) আদেশগুলো হয়েছে।’

কামারুল আরেফিন কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের সাবেক এমপি ও মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আর সেলিম আলতাফ কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সাবেক এমপি ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।

আদালত ও দুদক সূত্রে জানা যায়, দুদক অনুসন্ধান করে কামারুল আরেফিনের কয়েকটি ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থের তথ্য পায়। এসব অর্থ হস্তান্তর বা হাতবদলের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাঁর নামের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ চেয়ে আবেদন করে দুদক। আদালত শুনানি শেষে এই আবেদন মঞ্জুর করেন এবং তাঁর ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দেন। একই সঙ্গে কামারুল আরেফিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। কামারুল আরেফিনের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারীদের হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একাধিক মামলা আছে। গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি পলাতক আছেন।

অপর দিকে দুদক একই আদালতে সেলিম আলতাফের বিরুদ্ধে তাঁর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করে। দুদক আদালতকে জানায়, সেলিম দেশ থেকে পলায়নের চেষ্টা করতে পারেন। দুদকের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাঁর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা একান্ত আবশ্যক। পরে শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন।

সেলিম আলতাফের বিরুদ্ধে ঢাকা ও কুষ্টিয়ায় জুলাই-আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একাধিক মামলা আছে। বর্তমানে তিনি কুষ্টিয়া কারাগারে আছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ম র ল আর ফ ন স ল ম আলত ফ র দ শত য গ

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পবিরোধী স্লোগান দিয়ে উড়োজাহাজে গ্রেপ্তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পতন চেয়ে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাজ্যে ৪১ বছর বয়সী এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত রোববার লন্ডনের লুটন বিমানবন্দর থেকে গ্লাসগোগামী একটি ফ্লাইটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি লন্ডনের কাছে বেডফোর্ডশায়ারের লুটন শহরের বাসিন্দা।

অভয় নায়েক ইজিজেট ফ্লাইটে হামলা ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার মতো আচরণ করেছেন। তিনি উড়োজাহাজে বোমা ফাটানোর হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি মাঝ আকাশে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্লোগান দিয়ে চিৎকার করেছিলেন, যা যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।

ওই ঘটনার একটি ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, অভয় নায়েক স্লোগান দিচ্ছেন, ‘আমেরিকার পতন হোক’, ‘ট্রাম্পের পতন হোক’। এরপরই তিনি ‘আল্লাহু আকবর’ (যার অর্থ ‘আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ’) বলে স্লোগান দেন। পরে দুজন ব্যক্তি তাঁকে কাবু করে উড়োজাহাজের মেঝেতে ফেলে দেন।

ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি কোন ধর্মের অনুসারী, সে ব্যাপারে তাৎক্ষিণক কিছু জানা যায়নি।

ওই ব্যক্তির এমন আচরণের পর পাইলটরা বাধ্য হয়ে গ্লাসগোতে জরুরি অবতরণ করেন। সেখানেই স্কটিশ পুলিশ এসে অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করে।

স্কটল্যান্ডের পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘গত রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে গ্লাসগোতে পৌঁছানো ইজিজেটের একটি ফ্লাইটে এক ব্যক্তি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন এমন খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাই।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, ঘটনাটি এককভাবে ওই ব্যক্তির, অন্য কেউ জড়িত নন। যেসব ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়েছে, সেগুলো সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন।’

উড়োজাহাজ অবতরণের পরই অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।

ইজিজেট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বেপরোয়া আচরণের কারণে একজন যাত্রীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে তদন্তে সহযোগিতা করছি।’

পাইসলি শেরিফ আদালতে হাজিরার সময় অভয় নায়েক কোনো বক্তব্য দেননি। তাঁকে বিচারিক হেফাজতে পাঠানো হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে তাঁকে আবার আদালতে হাজির করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ