কুষ্টিয়ার সাবেক দুই এমপি কামারুল ও সেলিম আলতাফের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
Published: 4th, June 2025 GMT
কুষ্টিয়ার সাবেক দুই সংসদ সদস্য (এমপি) কামারুল আরেফিন ও সেলিম আলতাফ জর্জের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে কামারুলের কয়েকটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের (ফ্রিজ) আদেশও দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ ছুমিয়া খানম এ আদেশ দেন।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নীল কমল পাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘কয়েক দিন আগে পৃথক আবেদন করা হয়েছিল। আজ (বুধবার) আদেশগুলো হয়েছে।’
কামারুল আরেফিন কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের সাবেক এমপি ও মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আর সেলিম আলতাফ কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সাবেক এমপি ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।
আদালত ও দুদক সূত্রে জানা যায়, দুদক অনুসন্ধান করে কামারুল আরেফিনের কয়েকটি ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থের তথ্য পায়। এসব অর্থ হস্তান্তর বা হাতবদলের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাঁর নামের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ চেয়ে আবেদন করে দুদক। আদালত শুনানি শেষে এই আবেদন মঞ্জুর করেন এবং তাঁর ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দেন। একই সঙ্গে কামারুল আরেফিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। কামারুল আরেফিনের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারীদের হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একাধিক মামলা আছে। গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি পলাতক আছেন।
অপর দিকে দুদক একই আদালতে সেলিম আলতাফের বিরুদ্ধে তাঁর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করে। দুদক আদালতকে জানায়, সেলিম দেশ থেকে পলায়নের চেষ্টা করতে পারেন। দুদকের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাঁর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা একান্ত আবশ্যক। পরে শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন।
সেলিম আলতাফের বিরুদ্ধে ঢাকা ও কুষ্টিয়ায় জুলাই-আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একাধিক মামলা আছে। বর্তমানে তিনি কুষ্টিয়া কারাগারে আছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ম র ল আর ফ ন স ল ম আলত ফ র দ শত য গ
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা
রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।
উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।
সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।
তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।
মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।