কানাডায় পড়াশোনা করতে চান, দেখে নিন সেরা ১০ বিশ্ববিদ্যালয়
Published: 5th, June 2025 GMT
যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কোয়াককোয়ারেলি সায়মন্ডস (কিউএস) প্রতিবছর বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা ধরনের র্যাঙ্কিং প্রকাশ করে। কিউএস বছরের বিভিন্ন সময়ে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড র্যাঙ্কিং (বিবিএ-এমবিএ), ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং রিজিয়ন, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং বেস্ট সিটিস অব স্টুডেন্ট, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং বাই কাউন্ট্রিসহ নানা তালিকা করে থাকে। দেশভিত্তিক সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাও করে কিউএস। বিশ্বের সেরা ১ হাজার ৫০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা করেছে। সেই তালিকা থেকে আমরা কানাডার সেরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানব।
১.
কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় আছে শীর্ষে। ১০০–এর মধ্য স্কোর ৮৬ দশমিক ৩। এটি ২০২৪ সালের কিউএস বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ২১তম অবস্থানে আছে।
২.
কানাডার মন্ট্রিলে অবস্থিত ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় দেশের দ্বিতীয় সেরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্কোর ৮৩ দশমিক ৭। বিশ্বব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের করা তালিকায় ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৩০তম।
৩.
ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়া কানাডার তৃতীয় সেরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেশটির ভ্যাঙ্কুভারে বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাস। ৮১ দশমিক ৫ স্কোর নিয়ে ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়া কিউএস ওয়ার্ল্ড র্যাঙ্কিংয়ে আছে ৩৪তম অবস্থানে।
৪.
কানাডার ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টা দেশটির এডমন্টন শহরের একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ৫৮ দশমিক ৩ স্কোর নিয়ে বিশ্বব্যাপী করা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিংয়ে আছে ১১১তম স্থানে। এটি কানাডার চতুর্থ সেরা বিশ্ববিদ্যালয়।
আরও পড়ুনরোমানিয়ায় উচ্চশিক্ষায় খরচ, আছে বৃত্তিও, দরকার আইইএলটিএস স্কোর ৬ থেকে ৬.৫০৮ আগস্ট ২০২৪৫.
কানাডার ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়টি কিউএসের করা তালিকায় আছে ১১২তম অবস্থানে। ১০০–এর মধ্য বিশ্ববিদ্যালয়টির স্কোর ৫৮ দশমিক ১। ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয় কানাডার পঞ্চম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়।
৬.
ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ৫৭ দশমিক ৪ স্কোর নিয়ে বিশ্বের ১১৪তম অবস্থানে আছে। এটি দেশটির ষষ্ঠ সেরা বিশ্ববিদ্যালয়।
৭.
ইউনিভার্সিটি ডি মন্ট্রিল সারা বিশ্বের ১৪১তম তালিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়। কিউএস র্যাংকিংয়ে ৫২ দশমিক ১ স্কোর নিয়ে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি দেশের সপ্তম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়।
আরও পড়ুনআয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদনের পদ্ধতি, খরচ, বৃত্তিসহ সুযোগ-সুবিধা কেমন০৫ আগস্ট ২০২৪৮.
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালগারির স্কোর ৪৭ দশমিক ৯। এটি কানাডার অষ্টম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়।
৯.
কানাডার হ্যামিলটনের ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়টি ৪৬ দশমিক ৮ স্কোর নিয়ে বিশ্বের ১৮৯তম বিশ্ববিদ্যালয়। এটি দেশটির নবম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়।
১০.
অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয় কানাডার দশম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ব তালিকার ২০৩ র্যাংঙ্কিয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়টির স্কোর ৪৫ দশমিক ২।
আরও পড়ুনহাঙ্গেরিতে উচ্চশিক্ষা: পড়াশোনার খরচ, স্কলারশিপ ও অন্য সুযোগ-সুবিধা কেমন০৩ আগস্ট ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবস থ ন দ শট র ক উএস দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
নিউইয়র্ক ছাড়িয়ে জাতীয় মুখ মামদানি
ডেমোক্র্যাট ভোটার লিয়া অ্যাশ বহু বছর ধরে কোনো রাজনীতিককে নিয়ে আশাবাদী অনুভব করেননি। তবে সম্প্রতি সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এ বছর আমার জন্য তিনিই একমাত্র আলোর দিশা। তিনি সত্যিই মানুষের কথা শুনতে চান—যাঁদের তিনি মেয়র হতে যাচ্ছেন।’
২৬ বছর বয়সী অ্যাশ যে ব্যক্তির কথা বলছেন, তিনি হলেন জোহরান মামদানি, যিনি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী।
মামদানি তাঁর নির্বাচনী প্রচারে জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি প্রাধান্য দিচ্ছেন। এ কারণেই অ্যাশ নিঃসংকোচে মামদানিকে ভোট দিতে চান। তবে তিনি মামদানিকে ভোট দিতে পারছেন না। কারণ, তিনি থাকেন নিউইয়র্ক থেকে প্রায় ১ হাজার ২০০ মাইল দূরে, মিসিসিপির গালফপোর্ট শহরে।
অ্যাশ বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করতে চাই, কোনো একদিন গালফপোর্ট, মিসিসিপিতেও এক জোহরান মামদানি আসবেন।’
জাতীয় পর্যায়ে আলোচিত মুখমাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই ৩৪ বছর বয়সী ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট মামদানি এক প্রান্তিক প্রার্থী থেকে জাতীয় পর্যায়ের আলোচিত মুখে পরিণত হয়েছেন। গত জুন মাসের দলীয় নির্বাচনে তিনি অপ্রত্যাশিতভাবে বিজয়ী হন। ওই নির্বাচনে ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের ভোটার উপস্থিতি ছিল সবচেয়ে বেশি।
আগামীকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে মেয়র নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর আগের সব জরিপেই দেখা গেছে, নিউইয়র্ক শহরের সাবেক মেয়র অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মামদানি এগিয়ে রয়েছেন। মামদানি আশা করছেন, আগেরবারের মতো এবারও তরুণ ভোটাররা তাঁর পাশে থাকবেন। তবে শুধু নিউইয়র্কের মধ্যেই নয়, জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় মোকাবিলার তাঁর অঙ্গীকার পুরো দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও সাড়া ফেলেছে। অনেক জেন–জি ও মিলেনিয়ালস প্রজন্মের মানুষ বলছেন, তাঁদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের জায়গায় হাত রেখেছেন মামদানি। তরুণ প্রজন্ম যখন রাজনীতিকদের প্রতি আশা হারিয়ে ফেলেছেন এবং প্রচলিত নিয়ম ভেঙে নতুন কণ্ঠস্বরের অপেক্ষায় আছেন, তখনই মামদানির উত্থান।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সার্কেলে তরুণ ভোটারদের নিয়ে গবেষণা করেন রুবি বেল বুথ। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো প্রার্থী জনগণের উদ্বেগ নিয়ে কথা বলেন এবং সেই উদ্বেগকে স্বীকৃতি দেন, তখন সেটি বিশাল প্রভাব ফেলে, বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের ক্ষেত্রে।’
রুবি বেল বুথ আরও বলেন, ‘তরুণেরা যখন সত্যিই অনুভব করেন যে তাঁদের কথা শোনা হচ্ছে, তাঁদের প্রতি সম্মান দেখানো হচ্ছে, তখন যেকোনো প্রার্থী সফল হতে পারেন। তবে এখন সেটি করছেন মামদানি। আর এর আগে হয়তো সেটা করেছিলেন ট্রাম্প।’
রক্ষণশীলদের মধ্যেও জনপ্রিয়রক্ষণশীল রাজ্য মিসিসিপিতে বসবাস করলেও লিয়া অ্যাশ সব সময়ই ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের ভোট দিয়ে আসছেন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি রাজনৈতিক নেতাদের ওপর হতাশ ও উপেক্ষিত বোধ করছেন। এই অনুভূতি আরও তীব্র হয়েছে তাঁর অর্থনৈতিক বাস্তবতা থেকে। অন্যদিকে অ্যান্ড্রু টেইট ভার্জিনিয়ার এক গ্রামীণ এলাকায় একটি ছোট খামারে তাঁর সঙ্গী ও সন্তানদের নিয়ে থাকেন এবং স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করেন। তিনিও মূল্যস্ফীতি ও পরিবারের আর্থিক ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
অ্যাশ বলেন, ‘দেশের অন্যতম দরিদ্র রাজ্য হয়েও মিসিসিপিতে বাড়ির দাম বেড়েই চলেছে। এটা সত্যিই মন খারাপ করে দেয়।’ তবু অ্যাশ আশা করছেন, যদি মামদানি নির্বাচনে জয়ী হন, তাহলে সেটি দেশের অন্যান্য শহরের ডেমোক্র্যাট নেতাদের জন্য একটি বার্তা হয়ে যাবে।
জোহরান মামদানি তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় একাধিক অঙ্গীকার করেছেন, বিশেষ করে বাসস্থান নিয়ে। তাঁর লক্ষ্য শহরের খরচ কমানো। তবে সমালোচকেরা বলছেন, এসব পরিকল্পনা বাস্তবসম্মত নয়। আর রক্ষণশীলদের, বিশেষ করে ট্রাম্পের সমর্থকদের কাছে মামদানির দৃষ্টিভঙ্গি বিপজ্জনক। তবু এসব সতর্কতা তরুণ মার্কিন ভোটারদের খুব একটা বিচলিত করছে না। তাঁরা রাজনৈতিক দলের লেবেলের পরিবর্তে মামদানির বাস্তব জীবনের সমস্যা ও সমাধানমুখী বার্তাতেই বেশি আকৃষ্ট হচ্ছেন।
গবেষক বেলি বুথ বলেন, ‘মামদানিই এমন একজন প্রার্থী, যিনি প্রচলিত ব্যবস্থাকে নানা দিক থেকে চ্যালেঞ্জ করছেন।’
২৬ বছর বয়সী ডেমোক্র্যাট এমিলি উইলসনের মতে, জীবনযাত্রার ব্যয়ের সংকট দলীয় বিভাজনের ঊর্ধ্বে থাকা উচিত। ফ্লোরিডার সেন্ট পিটার্সবার্গে বসবাসরত এমিলি দূর থেকেই মামদানিকে সমর্থন করছেন। মিশিগানের অ্যান আরবারের কাছে এক ছোট শহরে বসবাসরত ২৫ বছর বয়সী ডেইজি লুপাও একইভাবে ভাবেন। তাঁর মতে, মামদানির প্রচারাভিযানটা নতুন এক দৃষ্টিভঙ্গি এনে দিয়েছে। তাঁর অনেক প্রস্তাব গ্রামীণ আমেরিকাসহ নিজ সম্প্রদায়ের জন্যও কার্যকর হতে পারে। লুপা বলেন, ‘নিউইয়র্কে তিনি যেসব পরিবর্তন আনতে চাচ্ছেন, সেগুলোর অনেকটাই আমরা গ্রামীণ এলাকায় আরও বেশি করে চাই। কারণ, এখানে তো সেগুলোর অস্তিত্বই নেই।’
সতর্ক আশাবাদ
তবে যাঁরা নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন, তাঁদের কাছে মূল প্রশ্ন—মামদানি কি সত্যিই জীবনযাত্রার ব্যয়ের এই সংকট কাটাতে পারবেন? ৩২ বছর বয়সী ডিলন রবার্টসনের জন্য অর্থনৈতিক উদ্বেগ যেন জীবনের স্থায়ী সঙ্গী। স্নাতক শেষে তাঁর শিক্ষাঋণ দাঁড়াবে প্রায় আড়াই লাখ ডলার। মামদানিকে সমর্থন করছেন রবার্টসন।
কারণ, তাঁর প্রস্তাবিত ব্যয় সাশ্রয়ী পরিকল্পনাগুলো জীবনকে কিছুটা সহজ করতে পারে। তবে একই সঙ্গে তিনি সংশয়ও প্রকাশ করেন। ডিলন বলেন, ‘মামদানি যা বলছেন, সবই শুনতে ভালো লাগে। কিন্তু আমি ভাবি, তিনি কি সত্যিই পারবেন? বাস্তবে কি তা সম্ভব? নাকি এটা যেন ফুটো জাহাজে শুধু ব্যান্ডেজ লাগানোর মতো?’
তবু ডিলন স্বীকার করেন. যদি বিকল্প হয়, আগের মতোই টেনে নেওয়া অথবা কিছু নতুন চেষ্টা করা, তাহলে তিনি নতুনটাকেই সুযোগ দিতে প্রস্তুত।