সাবিলা লিচুর বাগানে, কেন, কখন, কীভাবে; লিখেছেন সাবিলা নিজেই
Published: 5th, June 2025 GMT
স্বীকার করি—লিচু আমার সবচেয়ে প্রিয় ফল নয়। হ্যাঁ, এটা শুনে অনেকে চমকে উঠতে পারেন। কারণ, আমরা সবাই জানি, গ্রীষ্মের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ফলগুলোর একটি লিচু। ছোট্ট লাল রঙের খোসার নিচে লুকানো থাকে মিষ্টি স্বাদ। কিন্তু তবু জানি না, কেন আমি কখনো লিচুতে তেমন একটা মুগ্ধ হইনি। তবে এই লিচুই আমার জীবনের একটা স্মরণীয় ফল হয়ে থাকবে।
কেন? কেন তা তো নিশ্চয়ই আপনারা এতক্ষণে বুঝে গেছেন। আমার জীবনের প্রথম বাণিজ্যিক সিনেমার প্রথম পারফর্ম করা গানের নামই ‘লিচুর বাগানে’। মঙ্গল মিয়া, আলেয়া বেগম, প্রীতম হাসান, জেফার রহমান—কী দুর্দান্ত গেয়েছেন সবাই! সেই সঙ্গে প্রথমবারের মতো দর্শক পর্দায় মেগাস্টার শাকিব খান ও আমার রসায়ন দেখেছেন। শাকিব খান—মেগাস্টার, আইকন, সিম্পলি দ্য বেস্ট ইন দ্য ইন্ডাস্ট্রি ফর টোয়েন্টি সিক্স ইয়ারস। তাঁর সঙ্গে কাজ করা একদিকে যেমন ছিল রোমাঞ্চকর, একই সঙ্গে ছিল ভয়ের ব্যাপারও। কিন্তু যখন আসলেই কাজ শুরু করলাম, সবকিছু কেমন অদ্ভুতভাবে সহজ হয়ে গেল। বুঝতেই পারিনি, এটা ছিল আমাদের প্রথম একসঙ্গে পর্দা ভাগাভাগি করার অভিজ্ঞতা। আর ‘লিচুর বাগানে’ গানে একসঙ্গে নাচতে পেরে তো পুরো অভিজ্ঞতা আরও মিষ্টি হয়ে উঠল।
‘লিচুর বাগানে’ গানে ঠোঁট মিলিয়েছেন শাকিব খান ও সাবিলা নূর.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদযাত্রায় বাবা ও দুই ছেলে নিহত, স্তব্ধ পুরো গ্রাম
একসঙ্গে রাখা হয়েছে তিনটি খাটিয়া। অদূরেই পারিবারিক কবরস্থানে খোঁড়া হচ্ছে তিনটি কবর। মরদেহের অপেক্ষায় স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ, স্তব্ধ গ্রামবাসীও। সড়ক দুর্ঘটনায় শেরপুরে বাবা ও দুই ছেলের মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ পুরো গ্রাম।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাসাইল উপজেলার করটিয়া বাইপাসে আজ মঙ্গলবার সকালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হন। তাঁরা হলেন শেরপুরের চরমোচারিয়া ইউনিয়নের কামারের চর গ্রামের আমজাদ মণ্ডল (৫৫) এবং তাঁর দুই ছেলে রাহাত মণ্ডল (২৬) ও অতুল মণ্ডল (১৪)। আহত হয়েছেন আমজাদ মণ্ডলের স্ত্রী মাকসুদা বেগম (৩৫) ও ছেলে রাহাতের স্ত্রী মরিয়ম (১৮)। নিহত আমজাদ ঢাকায় ঠিকাদারি ব্যবসা করতেন।
আরও পড়ুনঈদযাত্রায় সড়কে ৩ সদস্যকে হারিয়ে পরিবারটির সামনে এখন ‘শুধুই অন্ধকার’৪ ঘণ্টা আগেনিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা জানান, আমজাদ মণ্ডল দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার মাদারটেক এলাকায় সপরিবার বসবাস করতেন। ঈদ উপলক্ষে পরিবারের সবাইকে নিয়ে সকাল ছয়টার দিকে মাইক্রোবাসযোগে শেরপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। সকাল ৯টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাসাইল উপজেলার করটিয়া বাইপাসে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে মাইক্রোবাসটি ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আমজাদ মণ্ডল ও তাঁর দুই ছেলে রাহাত ও অতুল নিহত হন। আহত হন আমজাদের স্ত্রী মাকসুদা বেগম ও ছেলে রাহাতের স্ত্রী মরিয়ম আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নিহত ব্যক্তিদের বাড়িতে সরেজমিনে দেখা যায়, স্বজন ও গ্রামবাসী মরদেহের অপেক্ষায় আছেন। বাড়ির ভেতর চলছে আহাজারি। মানসিক ভারসাম্যহীন মা বুঝতে পারছেন না, ছেলে ও দুই নাতি আর ফিরে আসবেন না। ছোট ভাই ও দুই ভাতিজাকে হারিয়ে কিছুক্ষণ পরপর মূর্ছা যাচ্ছিলেন সফর উদ্দিন মণ্ডল। এ সময় তাঁদের স্বজন ও গ্রামের নারী–পুরুষ বাড়িতে ভিড় করছিলেন।
সফর উদ্দিন মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদ করার জন্য আমার ভাই ও তার পরিবার আসছিল। কোরবানির জন্য গরু কিনবে বলে জানিয়ে ছিল। ওরা বাড়ি আসলে গরু কিনতে হাটে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু একটা দুর্ঘনায় সব শেষ হয়ে গেছে।’
কিছুক্ষণের মধ্যে আসে মরদেহ। গ্রামে একাধিক খাটিয়া না থাকায় পাশের দুই গ্রাম থেকে খাটিয়া এনে মরদেহ রাখার ব্যবস্থা করা হয়। অদূরেই পারিবারিক কবরস্থানে খোঁড়া হচ্ছিল একে একে তিনটি কবর। কামারের চর গ্রামের বাসিন্দা মজনু মিয়া বলেন, ঈদ করতে পরিবার নিয়ে বাড়ি আসছিলেন আমজাদ মণ্ডল। কিন্তু একটি দুর্ঘটনায় সব শেষ। একসঙ্গে তিনটি কবর খোঁড়া হচ্ছে। রাতেই নিহত ব্যক্তিদের দাফন করা হবে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিহত আমজাদ মণ্ডলের ছোট বোন মোর্শেদা বেগম বলেন, ‘হঠাৎ পুলিশের ফোনে আসে। সেখান থেকে জানানো হয়, আমার ভাই ও তার দুই ছেলে আর নেই। প্রতিবছর আমার ভাই এসে আমাদের সঙ্গে ঈদ করত। এবার সব উলট–পালট হয়ে গেল। আল্লাহ আমাদের এই কষ্ট কেমনে দিলা। আমগর তো আর ঈদ করা অইলো না। ভাইরে ছাড়া কেমনে ঈদ পার করমু।’