পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ছুটি শুরু হয়েছে আজ বৃহস্পতিবার। ধারণামতোই আজ রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ক্রেতার ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। বেড়েছে বেচাকেনাও। হাট ইজারা-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এবার হাটে পর্যাপ্ত গরু উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গাবতলী পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, দলে দলে ক্রেতারা হাটে আসছেন। কারও কারও সঙ্গে পরিবারের নারী ও শিশু সদস্যরাও রয়েছেন। হাটের সামনের রাস্তায় ক্রেতাদের ভিড়ে যানজটও দেখা গেছে।
হাটের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতারা ঘুরে ঘুরে কোরবানির পশু দেখছেন, পছন্দ করছেন। কোনো গরু কিংবা খাসি পছন্দ হলে বিক্রেতার কাছে দাম জানতে চাইছেন, দামাদামি করছেন। বনিবনা হলে কিনে নিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার দাম শুনেই এগিয়ে যাচ্ছেন পরের গরু দেখতে।
এদিকে হাটের হাসিল আদায়ের অস্থায়ী ঘরগুলোর সামনেও ক্রেতা–বিক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়। গরু কেনার পর ক্রেতারা ব্যবসায়ীকে সঙ্গে নিয়ে হাসিল পরিশোধের জন্য রীতিমতো সারিতে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন। হাসিল আদায়কারীদেরও ছিল ব্যস্ততা।
গাবতলী হাটের এক নম্বর হাসিল ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে হাসিল পরিশোধের অপেক্ষায় ছিলেন মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকার বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকালে বছিলা হাটে গিয়েছিলাম। বেশ কয়েকটি গরু পছন্দও হয়েছিল। কিন্তু দাম বেশি মনে হলো। পরে গাবতলী হাটে এসে দেখি হাটে পর্যাপ্ত গরু রয়েছে। এখানে আসার পর পছন্দের গরু কিনতে খুব বেশি সময় লাগেনি।’ তিনি বলেন, ‘এক–দুইটা গরু দেখেছি, দরদাম করে যাচাই করেছি। এরপরই এই গরুটি (নিজের কেনা গরু দেখিয়ে) ২ লাখ ৫ হাজার টাকায় কিনেছি। এমন গরু বছিলা হাটে আড়াই লাখ চাইছে।’
গাবতলী হাটে গরু নিয়ে আসা কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাটে যে সংখ্যায় গরু রয়েছে, সে তুলনায় ক্রেতা এখনো অনেক কম। শেষ পর্যন্ত ক্রেতা না পাওয়া গেলে হাটে আনা অনেক গরু আবার এলাকায় ফিরিয়ে নিতে হবে। এ কারণে তাঁরা (ব্যবসায়ী) সীমিত লাভে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে খরচের টাকা উঠলেই গরু ছেড়ে দিচ্ছেন।
গরু কেনার পর ট্রাকে তোলা হচ্ছে। গাবতলী, ঢাকা, ৫ জুন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন
প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনের ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, এমন সময়ে নির্বাচনের সময় ঘোষণা করা হয়েছে, যে সময়ে পাবলিক পরীক্ষা থাকে, আবহাওয়া ঠিক থাকে না। এ ছাড়া ফেব্রয়ারির মাঝামাঝি রমজান মাস শুরু হবে। এপ্রিলের প্রথমার্ধে যদি নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হয়, তাহলে ৪৫ দিন যে সময়সীমা লাগে, তপশিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন পর্যন্ত; সেটা রমজানের মধ্যেই প্রচার-প্রচারণা করতে হবে। এটা একটা অযৌক্তিক ধারণা।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সার্বিক বিবেচনায় প্রধান উপদেষ্টা খুব বেশি দেরি করতে চাইলে ডিসেম্বর বা জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হতে পারত। সেটি হয়তো সবার কাছে গ্রহণযোগ্য বলে মনে হতো।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনার পর বিএনপির আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। একই সঙ্গে আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে যারা শরিক ছিলেন, সমমনা রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে আলোচনা করে বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া জানাব।
প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সালাহউদ্দিন আহমদ সমকালকে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া দীর্ঘ ভাষণে অনেক কিছু উল্লেখ করেছেন। সরকারের কৃতিত্ব, কর্মকাণ্ড এবং ভবিষ্যতে কী করতে চান ইত্যাদি। এর ফাঁকে একপর্যায়ে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় ঘোষণা করেছেন। আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো দিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
তিনি বলেন, ৫০টির বেশি রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা তা আমলে নেননি। বিএনপি যৌক্তিকভাবে ডিসেম্বরের ভেতরেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সব সময় বিভিন্ন যুক্তি ও কারণ উপস্থাপন করেছে। অথচ, প্রধান উপদেষ্টা সে বিষয়টি আমলে না নিয়ে দেশের ৯০ ভাগ রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজেদের মতো করে তারিখ ঘোষণা করেছে।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, আবহাওয়া, পাবলিক পরীক্ষা, রমজান বাদ দিলেও একটি সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এক মাসের মধ্যে জাতীয় বাজেট প্রণয়ন করতে পারে না। আর আমাদের অনেক বেশি প্রতিশ্রুতি আছে। সেটাও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে বলে সালাহউদ্দিন আহমদ মনে করেন না।