ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস বকেয়া থাকা দুঃখজনক: গণসংহতি আন্দোলন
Published: 5th, June 2025 GMT
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস বকেয়া থাকা দুঃখজনক, অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে অন্তবর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
বৃহস্পতিবার বিবৃতেতে জোনায়েদ সাকি বলেন, ঈদের মাত্র একদিন আগে এসেও দেশের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে বেতন ও বোনাসের দাবিতে। এটা শুধু দুর্ভাগ্যজনক নয়, চূড়ান্ত অমানবিক। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে স্পষ্ট যে, অনেক কারখানায় এখনও শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হয়নি। গত রোজার ঈদেও টিএনজেডসহ বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করে যেসব ন্যায্য পাওনার প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলেন, সেগুলোও এখনও সম্পূর্ণ পরিশোধ হয়নি; যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা আশা করি, সরকার অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আবুল হাসান রুবেল বলেন, ঈদের আগে শ্রমিকদের পাওনা নিশ্চিত করা কোনো অনুগ্রহ নয়, এটি তাদের ন্যায্য অধিকার। এই অধিকার থেকে শ্রমিকদের বঞ্চিত করায় শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের শাস্তি হওয়া দরকার। চলতি সপ্তাহেই বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর টিয়ারশেল ও জলকামান চালিয়েছে পুলিশ। শ্রমিকদের প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের এই আচরণ চরম অন্যায়। মালিকপক্ষ ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের যেমন ঈদ আছে, শ্রমিকদেরও ঈদ আছে। আপনারা ঈদের ছুটিতে যাওয়ার আগেই শ্রমিকদের বেতন বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে আবারও এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।
নিহত মো. রাকিব (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে কাজ করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
এর আগে চলতি বছরের ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের চারতলা থেকে পড়ে মো. আরিফুল নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। এর তিন মাসের মাথায় আবারও এক শ্রমিকের মৃত্যু হলো।
ভবনটির নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ করছিলেন রাকিব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দিকে ভবনের জানালা দিয়ে তিনি ময়লা-আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ভবনের কর্মচারীরা উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।
ভবনটিতে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ চলছিল। রাকিব ভবনের জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে গিয়ে পড়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই বহুতল ভবনটির কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন ট্রেডার্স। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের মধ্যে কাজ চলছিল। ভবনটির বাইরের কাজ শেষ তাই ‘সেফটি নেট’ খুলে ফেলা হয়েছে।
মো. আজিজ জানান, রাকিবের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভবনটিতে কর্মরত ফোরম্যানের তত্ত্বাবধানে তাঁর মরদেহ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। আমরা বারবার তাদেরকে যথাযথ সেফটি (নিরাপত্তা) নিশ্চিত করে তারপর কাজ করতে বলি। কিন্তু অনেক সময় এসব কর্মচারীরা মানে না। এ বিষয়ে প্রকল্প অফিস ও প্রশাসন থেকে বারবার তাদের তাগাদা দেওয়া হয়। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল।’