নিউ জিল্যান্ডের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল কোচ গ্যারি স্টিড। গত এপ্রিলের শুরুতে নিউ জিল্যান্ডের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান স্টিড। টেস্টের মেয়াদ ছিল জুনের শেষ পর্যন্ত। আগেভাগেই স্টিড জানিয়ে দিয়েছেন, চুক্তি শেষে বিদায় নেবেন তিনি।
তার জায়গায় নতুন কোচ পেয়েও গেছে ক্রিকেট নিউ জিল্যান্ড। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক কোচ রব ওয়াল্টারকে তিন বছরের জন্য সব সংস্করণের জন্য নিয়োগ দিয়েছে কিউইরা।
স্টিড দায়িত্ব ছাড়ার পর নিউ জিল্যান্ড ক্রিকেট সাদা ও লাল বলের জন্য আলাদা কোচ চেয়েছিল। পরবর্তীতে ওয়াল্টারকে পছন্দ হয়ে যাওয়ায় তাকেই তিন সংস্করণে দায়িত্ব দিয়েছে তারা।
আরো পড়ুন:
নিউ জিল্যান্ডের ঘোরোয়া ক্রিকেট থেকে অবসরে ওয়াগনার
কিউদের বদলি অধিনায়ক ল্যাথামও চোটে
দায়িত্ব নিয়ে ওয়াল্টার বলেছেন, ‘নিউ জিল্যান্ড অনেক দিন ধরেই সফল একটি দল। তাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাওয়া আমার জন্য দারুণ ব্যাপার। সামনে অনেক বড় বড় টুর্নামেন্ট ও সিরিজ আছে। আমি দারুণ রোমাঞ্চিত, চ্যালেঞ্জও অনেক বড়। কাজ শুরু করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।’
তার অধীনে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল বেশ সাফল্য পেয়েছিল। তার অধীনেই প্রোটিয়ারা ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে, ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সেমিফাইনাল এবং ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল। গত এপ্রিলে তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর চুক্তি নবায়ন করেননি ওয়াল্টার।
এবার তার সামনে নতুন মিশন নিউ জিল্যান্ড ক্রিকট দল। তার অধীনেই ২০২৫-২৭ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্র, ২০২৬ ও ২০২৮ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে নিউ জিল্যান্ড অংশ নেবে।
এদিকে গ্যারি স্টিডও ছিলেন সময়ের অন্যতম সেরা কোচ। ২০১৮ সালের মাইক হেসনের কাছ থেকে নিউ জিল্যান্ড দলের দায়িত্ব গ্রহণের পর গত সাত বছরে দারুণ সব সাফল্য উপহার দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল জয় উল্লেখযোগ্য।
২০১৯ বিশ্বকাপে অসাধারণ খেলে ফাইনালে ওঠে নিউ জিল্যান্ড। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও গত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ফাইনালে খেলে নিউ জিল্যান্ড। এছাড়াও ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে খেলে তারা। স্টিডের সাফল্যমণ্ডিত অধ্যায় শেষে ওয়াল্টার কিউইদের কতদূর নিয়ে যেতে পারে সেটাই দেখার।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ বক প ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি জার্মানির
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়াডেফুল ইসরায়েলের জন্য সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গাজা উপত্যকায় চলমান গণহত্যা সত্ত্বেও তিনি জানিয়েছেন, ইসরায়েলে অস্ত্র পাঠানো বন্ধ করবে না তার দেশ। ৪ জুন, বুধবার জার্মান পার্লামেন্ট বুন্ডেসট্যাগে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এই কথা বলেছেন। খবর আনাদোলুর।
পার্লামেন্টে বিরোধী গ্রিন পার্টির সংশ্লিষ্ট প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “জার্মানি অস্ত্র সরবরাহসহ ইসরায়েল রাষ্ট্রকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে। জোট সরকার ইসরায়েলের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ।”
তিনি আরো বলেন, জার্মান নীতি যা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন দ্বারা পরিচালিত হয় ‘অবশ্যই অস্ত্র সরবরাহসহ সকল নীতিগত ক্ষেত্রে প্রযোজ্য’।
আরো পড়ুন:
গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫৪ হাজার ৬০০ ছাড়াল
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি গায়ানা, যা বললেন রাষ্ট্রদূত
অস্ত্র রপ্তানি নীতির উপর এর প্রভাব কী হবে জানতে চাইলে মন্ত্রী ফেডারেল সিকিউরিটি কাউন্সিলের কথা উল্লেখ করেন, যা গোপনে বৈঠক করে এবং অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়।
মঙ্গলবার জার্মানির মতামত গবেষণা সংস্থা ইনসা একটি জরিপের ফল প্রকাশ করে। সেখানে দেখা গেছে, গাজা যুদ্ধের আলোকে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করার পক্ষে বেশিরভাগ জার্মান নাগরিক মত দিয়েছেন।
মতামত জরিপের ভিত্তিতে, ৫৮ শতাংশ উত্তরদাতা অস্ত্র সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ করার পক্ষে ছিলেন। প্রায় ২২ শতাংশ দ্বিমত পোষণ করেছেন এবং প্রায় সমানভাবে বড় অংশ (১৯ শতাংশ) এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি বা দিতে চাননি।
বর্তমানে জার্মানিতে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে, বিশেষ করে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের আলোকে, অনেক বিশ্ব নেতা প্রতিদিন ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যার ঘটনাকে গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি ইসরায়েলে জার্মান অস্ত্র রপ্তানি পর্যালোচনা করার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডোব্রিন্ড্ট সম্মত পরিমাণে অস্ত্র রপ্তানি অব্যাহত রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন।
গত সোমবার জার্মান সরকার জানায়, তারা ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের কাছে প্রায় অর্ধ বিলিয়ন ইউরোর সমপরিমাণ অস্ত্র বিক্রি অনুমোদন করেছে।
সোমবার দেশটির সংসদে বাম দলের পক্ষ থেকে করা এক প্রশ্নের জবাবে জার্মান সরকারের তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের ১৩ মে পর্যন্ত সময়ের জন্য ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহের উদ্দেশ্যে মোট ৪৮৫.১ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৫৫৪.৩ মিলিয়ন ডলার) মূল্যের রপ্তানি লাইসেন্সের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অনুমোদিত এই সামরিক সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র, গোলাবারুদ, রাডার, কমিউনিকেশন ডিভাইস এবং সাঁজোয়া যানের যন্ত্রাংশ।
জার্মান সরকার ফেডারেল সাংবিধানিক আদালতের একটি রায়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, রপ্তানির প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। আদালত ইসরায়েলের সামরিক সক্ষমতা বা চাহিদা প্রকাশ করতে পারে এমন বিবরণ প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, কারণ এতে জার্মানির বৈদেশিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযানের তীব্রতার দিকে ইঙ্গিত করে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়াদেফুল গত সপ্তাহে বলেছিলেন, বার্লিন ভবিষ্যতে ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি নীতি পর্যালোচনা করতে পারে এবং তা সীমিত করার সম্ভাবনাও রয়েছে।
বুধবার (৪ জুন), গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত ৫৪ হাজার ৬০৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ