নিরাপদ খাদ্য দিবস শনিবার: ‘নিরাপদ খাদ্য উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি কমায়’
Published: 6th, June 2025 GMT
অনিরাপদ খাদ্যের কারণে বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগ ও অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে। গবেষণা বলছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে খাদ্যবাহিত রোগে উৎপাদনশীলতা হ্রাস এবং স্বাস্থ্য সেবা ব্যয়ের বোঝা বছরে ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চেয়েও বেশি।
‘ফুড সেফটি: সায়েন্স ইন অ্যাকশন’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে ৭ জুন উদযাপিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবস ২০২৫। এ বছর দিবসটি উপলক্ষে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের জন্য গবেষণা এবং জ্ঞানের অগ্রগতিতে বিজ্ঞানের ভূমিকার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এমন একটি পুষ্টিজনিত ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে যেখানে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা সংশ্লিষ্ট দীর্ঘস্থায়ী অসংক্রামক রোগ এবং বিপাকজনিত রোগ ক্রমশ প্রধান উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশ্বে প্রতি বছর এক কোটিরও বেশি মানুষ উচ্চ রক্তচাপের কারণে মারা যায় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে এই মৃত্যুর অধিকাংশই স্বাস্থ্যকর খাদ্য বিষয়ক নীতির মতো বিভিন্ন ধরনের নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
আরো পড়ুন:
‘প্লাস্টিক দূষণ রোধ করার এখনই সময়’
বাকৃবিতে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন
সর্বশেষ ‘বাংলাদেশ এনসিডি স্টেপস সার্ভে, ২০২২' এর তথ্য অনুযায়ী ৩৭ শতাংশ মানুষ খাবারের সাথে লবণ গ্রহণ করে এবং ১৩ শতাংশ মানুষ মাত্রাতিরিক্ত লবণযুক্ত ফাস্ট ফুড খেয়ে থাকে। এতে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ক্রমাগত বাড়ছে।
বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবস ২০২৫ উপলক্ষে এক প্রতিক্রিয়ায় গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা'র (প্রগতির জন্য জ্ঞান) নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, “স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস তৈরির মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগের ঝূঁকি অনেকাংশেই কমানো সম্ভব। বিশেষ করে খাবারে লবণের পরিমাণ কমানোর পাশাপাশি আঁশযুক্ত খাবার ও পরিমিত পরিমাণে শাকসবজি গ্রহণ করা আবশ্যক। একই সাথে প্রয়োজনীয় আইন বা নীতিমালার প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জোরদার করতে হবে।”
ঢাকা/হাসান/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ বস ন র পদ খ দ য
এছাড়াও পড়ুন:
প্রস্তাবিত বাজেট পুঁজিবাজারে গতিশীলতা আনবে: সিএসই
আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিভিন্ন প্রণোদনা ও ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে এবং ব্রোকারেজ হাউজসহ বাজার-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর করের বোঝা হ্রাস পাওয়ায় কথা বলা হয়েছে। এসব প্রস্তাব পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)।
সিএসইর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ গত ২ জুন ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করেন, যা দেশের ৫৪তম বাজেট। অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট। ঘোষিত বাজেটে পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়নে তিনটি প্রত্যক্ষ প্রণোদনার প্রস্তাব করা হয়েছে; যেমন: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাবহির্ভূত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্পোরেট করের ব্যবধান ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭.৫ শতাংশ করা। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর বিদ্যমান কর্পোরেট করহার ৩৭.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ২৭.৫ শতাংশ করা এবং পুঁজিবাজারে লেনদেনের ওপর উৎস অগ্রিম কর বিদ্যমান ০.০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.০৩ শতাংশ করা। এসব প্রণোদনা ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে এবং ব্রোকারেজ হাউজসহ বাজার-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর করের বোঝা হ্রাস পাওয়ায় পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে সিএসই মনে করে।
আরো পড়ুন:
মানিলন্ডারিং সচেতনতা: ৮ ব্রোকার-মার্চেন্ট ব্যাংক পরিদর্শনের নির্দেশ
ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
সিএসই জানায়, বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা পুঁজিবাজার উন্নয়নে গত ১১ মে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রদত্ত পাঁচটি নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য সরাসরি কোনো প্রণোদনার প্রস্তাব প্রস্তাবিত বাজেটে উল্লেখ না থাকলেও স্মর্তব্য যে, গত বছরের ৪ নভেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের অর্জিত ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত মূলধনি আয় সম্পূর্ণ করমুক্ত রাখার বিধান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ৫০ লাখ টাকার উর্ধ্বে মূলধনি আয়ের উপর কর ১৫ শতাংশ হ্রাস করেছে।
এতে আরো বলা হয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক বিনিয়োগকারীদের বিও অ্যাকাউন্টের উপর ধার্য বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ ফি ৭৫ শতাংশ হ্রাসের নীতিগত সিদ্ধান্ত, এবং গ্রাহক একাউন্টে অর্জিত সুদের ২৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ব্যয়ের জন্য ইনভেস্টর্স প্রটেকশন ফান্ডে জমার সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়নে বড় প্রভাব রাখবে বলে আশা করা যায়।
সিএসইর প্রস্তাব: বাজেটে প্রস্তাবিত পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট আরো কিছু বিষয় উল্লেখ করা যায়, যেমন: করমুক্ত দানের আওতায় স্থাবর/অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে বিদ্যমান তালিকায় আপন ভাই ও বোনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তরের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদ আয়ে উৎস কর ৫ শতাংশ এর পরিবর্তে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এর ফলে প্রকৃত সুদ আয় কমে যাওয়ায় শেয়ারে বিনিয়োগে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।
অন্যদিকে, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোন শেয়ার বা তহবিলের স্পনসর, ডিরেক্টর বা প্লেসমেন্ট হোল্ডার হস্তান্তর কার্যক্রম করার পূর্বে উৎস কর ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ (পূর্বে এ হার ছিল ৫ শতাংশ) নির্ধারণ করা হয়েছে, যা পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে। তবে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ঘোষিত লভ্যাংশ আয় সম্পূর্ণ করমুক্ত বা অগ্রিম কর্তিত আয় চূড়ান্ত করদায় হিসেবে বাজেটে বিবেচনা করলে তাতে সরাসরি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কিছুটা উপকৃত হতো। আবাসন খাতের মতো পুঁজিবাজারেও অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে দেখা যেত পুঁজিবাজারে গতি সঞ্চারিত হয় কিনা।
উল্লেখ করা প্রয়োজন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন সম্প্রতি ‘চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (কমোডিটি ডেরিভেটিভ) প্রবিধানমালা, ২০২৫’ অনুমোদন দিয়েছে। ফলশ্রুতিতে দেশের প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ হিসেবে নিবন্ধন সনদ পাওয়া চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে কমোডিটি মার্কেট অপারেশন চালুর মাধ্যমে ডেরিভেটিভ পণ্যের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে যা নিঃসন্দেহে দেশের পুঁজিবাজারের জন্য একটি অনন্য মাইলফলক। সিএসই আশা করে, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ বিকাশে সিএসইকে কর অবকাশ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপগুলো প্রশংসার দাবি রাখে। পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে সেগুলো যথেষ্ট কিনা তা সময়ই বলে দেবে। সিএসই মনে করে, পুঁজিবাজারের বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণ এবং পুঁজিবাজারকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সমন্বিত ও কৌশলগত উদ্যোগ প্রয়োজন।
সার্বিকভাবে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা, বাজেটে উল্লিখিত প্রস্তাবনা, এনবিআর এবং বিএসইসি কর্তৃক গৃহীত সকল সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারের দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়নে সরকারের সদিচ্ছা, আন্তরিকতা, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী এবং দৃঢ় প্রতিশ্রুতির পরিচায়ক প্রতীয়মাণ হওয়ায় সিএসই পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টা, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং এনবিআরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছে সিএসই।
ঢাকা/এনটি/ফিরোজ