রাজধানীতে স্থায়ী পশুর হাটের পাশাপাশি কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বিভিন্ন সড়কের আশপাশে ও গলিতে বসেছে অস্থায়ী হাট। এসব হাটে বিক্রি হচ্ছে গরু, ছাগল ও ভেড়া। তবে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ছাগল। আর চাহিদা বেশি খাসির।

আজ শুক্রবার সরেজমিন রাজধানীর রামপুরা, শান্তিনগর, পল্টন, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও গলি ঘুরে দেখা যায়, অস্থায়ী এসব হাটে ক্রেতাদের যথেষ্ট ভিড় রয়েছে। শেষ সময়ে এসব হাট থেকে নিজেদের পছন্দমতো কোরবানির পশু কিনছেন তাঁরা।

নরসিংদীর বাবুরহাট থেকে ৪৫টি ছাগল নিয়ে ভোরে রাজধানীর শান্তিনগরে এসেছেন ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া (৫৫)। বেলা তিনটার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘৪৫টা ছাগল নিয়ে আইছি। সকাল থেকে ৩০টা বিক্রি হইয়া গেছে। আশা করি, বাকিগুলাও বিক্রি অই যাবো।’

সেলিম মিয়া জানান, তিন–চার বছর ধরে নরসিংদীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাগল কিনে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় এনে বিক্রি করেন। গত বছর ৬০টি ছাগল এনে বিক্রি করেছিলেন। গত বছর আরও কম সময়ে সব কটি ছাগল বিক্রি হয়ে গিয়েছিল বলেও জানান তিনি।

সেলিম মিয়া বলেন, তাঁর সঙ্গে এই ৪৫টি ছাগল নিয়ে সাতজন লোক কাজ করছেন। আশা করছেন, মোটামুটি লাভে সবগুলো ছাগল বিক্রি করতে পারবেন।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মুকুল হোসেন ৩০ হাজার টাকা দিয়ে দুটি ছাগল কিনেছেন। অস্থায়ী হাট বসায় দূরের হাটে গিয়ে কেনার ঝামেলা থেকে বেঁচে গেছেন বলে জানালেন। মুকুল হোসেন বলেন, ‘আমার বাসা কাছেই। বাসা থেকে নেমেই কিনে নিলাম।’

তবে অস্থায়ী হাট থেকে কোরবানির পশু কিনে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া আকবর হোসেনের। তিনি বলেন, হাট থেকে পশু কিনে বাসায় হেঁটে আসার আনন্দটা অন্য রকম। তিনি জানান, অস্থায়ী হাট থেকে ২২ হাজার টাকা দিয়ে একটা ছাগল কিনেছেন। দাম গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি।

মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদিয়া হাউজিং রোডে দিনাজপুরের বিরামপুর থেকে ১০টি ছাগল নিয়ে এসেছেন মো.

আলম নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবছর মোহাম্মদপুরের এই হাউজিং রোডে ছাগল নিয়ে আসেন তিনি। এবার ১০টি ছাগলের মধ্যে ৮টি আশানুরূপ লাভে বিক্রি করতে পেরেছেন। বাকি দুটি বিক্রি করতে পারলেই বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেবেন।

সাড়ে ১৬ হাজার টাকা দিয়ে একটি ছাগল কিনেছেন পেশায় আইনজীবী রাশেদা আক্তার। তিনি বলেন, অন্য সময়ের তুলনায় এবার দাম বেশি মনে হচ্ছে। তবে অস্থায়ী হাট বসায় ঝামেলা ছাড়া বাসার কাছ থেকেই পশু কিনতে পেরে খুশি তিনি।

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর থেকে আটটি ভেড়া নিয়ে হাউজিং রোডের অস্থায়ী হাটে তিন দিন আগে এসেছেন মো. জালাল শেখ। তিনি বলেন, ভেড়ার চাহিদা কম। তিন দিনে চারটি বিক্রি করেছেন। অল্প লাভেই বিক্রি করার চেষ্টা করছেন, তবু আশানুরূপ ক্রেতা মিলছে না।

মোহাম্মদপুর হাউজিং রোডে গরু কিনতে এসেছেন আবাসন ব্যবসায়ী দ্বীন মোহাম্মদ। প্রতিবছর তিনি এখান থেকেই গরু কেনেন। দ্বীন মোহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, গরুর দাম গত দুই দিন কম ছিল। আজকে একটু বেশি মনে হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম হ ম মদপ র এস ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ