খুলনার শীষ সন্ত্রাসী বাবু ওরফে গ্রেনেড বাবুর বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে যৌথ বাহিনী। এসময় বাড়িটি থেকে অস্ত্র, গুলি ও বৈদেশিক মুদ্রা জব্দ হয়। আটক করা হয় গ্রেনেড বাবুর বাবা জুনায়েদ চৌধুরী মিন্টুসহ তিনজনকে।

শনিবার মধ্যরাত থেকে রবিবার (৮ জুন) সকাল পর্যন্ত নগরীর শামসুর রহমান রোডের বাড়িতে অভিযান চালায়।

এর আগে, গত ৩ এপ্রিল যৌথ বাহিনী গ্রেনেড বাবুকে গ্রেপ্তারের জন্য তার বাড়িতে অভিযান চালায়। সেসময় বাড়িটি থেকে অস্ত্র, গুলি ও বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধার হয়। গ্রেনেড বাবুর বাবা জুনায়েদ চৌধুরী মিন্টু, ছোট ভাই রাব্বি চৌধুরী এবং সহযোগী সৌরভ ও সোহাগের মা সুষমা রানী সাহাকে আটক করে। 

আরো পড়ুন:

হাসপাতাল ঢুকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগঠকসহ ১০ জনকে পিটুনি

জামায়াত নেতা নিহত
বিএনপির ১২ নেতাকর্মীর নামে মামলা, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি 

প্রথম দফা অভিযানে বাবুর ঘর থেকে একটি ৯ এমএম পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, চার রাউন্ড গুলি এবং নগদ ১২ লাখ ১২ হাজার টাকা উদ্ধার হয়। পরে তার বাড়ির পাশের মন্দির সংলগ্ন স্থানে সৌরভ ও সোহাগের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মাদক বিক্রির ২৬ লাখ টাকা ও ভারতীয় ৪ হাজার ২৪০ রুপি উদ্ধার করা হয়।

শনিবারের অভিযানে আটক অন্যরা হলেন, শামসুর রহমান রোডের বাসিন্দা গগন দত্তের ছেলে আব্দুর রহমান এবং একই এলাকার বাসিন্দা বাবু গাজীর ছেলে মো.

ইদ্রিস গাজী। 

পুলিশ জানায়, যৌথ বাহিনীর সদস্যরা গত শনিবার রাত ২টা থেকে শামসুর রহমান রোডের গ্রেনেড বাবুর বাড়িতে অভিযান শুরু করে। গতকাল রবিবার সকাল ৭টা অভিযানটি চলে। যৌথ বাহিনীর সদস্যরা বাড়িটি থেকে বৈদেশিক মুদ্রা এবং পাইপ গানসহ কয়েক রাউন্ড গুলি জব্দ করে। সেখান থেকে তিনজনকে আটক করা হয়। 

খুলনা থানার ওসি হাওলাদার সানওয়ার হুসাইন মাসুম বলেন, “সেনাবাহিনী এবং নৌ-বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনী গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেনেড বাবুর বাড়িতে শনিবার রাত ২টার দিকে অভিযান চালায়। রাতে তারা ওই বাড়িতে তল্লাশি চালায়। এ সময় তারা সেখান থেকে একটি পাইপ গান, ৩ রাউন্ড গুলি, ২৫টি ক্রেডিট কার্ড, ২৬৮ মালয়েশিয়ান রিংগিত, ৫০ দিহরাম, ৩৩০ ভারতীয় রুপি, ৪৮১ ইউএস ডলার, ২টি স্মার্ট ও ৩টি বাটন ফোন এবং দুটি ব্যাংকের স্বাক্ষর করা চেক বই উদ্ধার করেন। অভিযান শেষ হলে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা আটক তিনজনকে খুলনা থানায় হস্তান্তর করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) বিশেষ শাখার প্রতিবেদনে জানা যায়, গ্রেনেড বাবুর প্রকৃত নাম রনি চৌধুরী। তার বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা রয়েছে এবং তার গঠিত সন্ত্রাসী গ্রুপের অস্ত্রধারী সদস্যদের বিরুদ্ধে রয়েছে মোট ৩৩টি মামলা। তার গ্রুপের সদস্যরা হলেন- মো. শাকিল, মো. সাব্বির শেখ, আসাদুজ্জামান ওরফে বিল রাজু ও বিকুল।

কেএমপি সূত্র জানায়, ২০১০ সালের ১০ জুন মাদক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধের জেরে মাদক কারবারি জাহাঙ্গীর হোসেন কচিকে হত্যা করে গ্রেনেড বাবু। এ ঘটনায় পরদিন কচির বাবা ইলিয়াস বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর গ্রেনেড বাবু আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। ২০২৩ সালের ২৮ মার্চ ওই মামলায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণার আগেই তিনি আত্মগোপনে চলে যান। বিভিন্ন সময় তার সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যদের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক অভ য ন র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী

রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।

৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।

আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।

আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগে

তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।

পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী