বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ বলেছেন, একতরফাভাবে এপ্রিলে নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ করে প্রধান উপদেষ্টা (অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস) নতুন করে রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত করছেন। এতে সরকারের উদ্দেশ্য এবং নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সরকারের এমন আচরণ জনগণকে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথমুখী করতে পরে।

আজ সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা সদরে জেলা পরিষদ ডাকবাংলো চত্বরে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন সৈয়দ এমরান সালেহ।

অনুষ্ঠানে বিএনপির এই নেতা বলেন, দু-একটি দল ছাড়া বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল ও রাষ্ট্রীয় শক্তিসমূহের মধ্যে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি উঠলেও হঠাৎ এপ্রিলে নির্বাচনের একতরফা টাইমলাইন (সময়সীমা) ঘোষণা সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। দুঃখজনক হলেও সত্য, কর্তৃত্ববাদী একনায়ক হাসিনার মতো নির্বাচন প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোকে অবজ্ঞা ও উপেক্ষা করছেন মুহম্মদ ইউনূস। সরকার যদি নির্বাচনসংক্রান্ত একতরফা পরিকল্পনা পরিহার না করে, তবে নির্বাচন ও গণতন্ত্রের জন্য অপেক্ষারত জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করবে না।

আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনের নতুন সময়সীমা ঘোষণার দাবি জানিয়ে এমরান সালেহ বলেন, ঢাকায় বিভিন্ন পয়েন্টে সভা-সমাবেশের ওপর যতই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হোক না কেন, তারেক রহমান ডাক দিলে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে রাজধানীতে তিল ধারণের জায়গা থাকবে না। জনগণ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঢাকা ছাড়বে না। এমন পরিস্থিতি বিএনপি চায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধূলিসাৎ হতে দেবে না।

ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ছাড়াও বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণ ও শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি এবং চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার, আহত ও বিগত ১৫ বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে হামলা-মামলা, জেল, জুলুমের শিকার ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এতে বক্তব্য দেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন, ধোবাউড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক আযহারুল ইসলাম, সদস্যসচিব আনিসুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন খান প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এমর ন স ল হ সরক র র ব এনপ র সময়স ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস

২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সীমা ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। দলটি মনে করে, শুধু সময়সূচি নির্ধারণ যথেষ্ট নয়। একটি কার্যকর, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে এখনই প্রয়োজন সর্বাত্মক প্রস্তুতি, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও ন্যায্য পরিবেশের বাস্তব নিশ্চয়তা।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো দিন জাতীয় নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা দেন। এর প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সীমাকে স্বাগত জানায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।

এক যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ এবং মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রত্যাশিত বার্তা উপস্থাপন করেছেন। আমাদের মতে, নির্বাচন ফেব্রুয়ারির মধ্যে হলে ভালো হত। তবুও আমরা সুনির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণাকে স্বাগত জানাই। তবে শুধু তারিখ ঘোষণা করলেই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত হয় না। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো নির্বাচনী পরিবেশকে পেশিশক্তিমুক্ত, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং সবার জন্য সমান সুযোগসম্পন্ন করে তোলা।’

বিবৃতিতে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতারা বলেন, ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের যে অঙ্গীকার প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে উচ্চারিত হয়েছে, তা বাস্তবায়নের একমাত্র পথ হলো জনগণের সর্বাত্মক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা; প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপেক্ষতা বজায় রাখা; নির্বাচন কমিশনের সাহসী ও স্বাধীন ভূমিকা এবং গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের অবাধ পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করা।

এতে বলা হয়, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে তিনটি মৌলিক শর্ত পূরণ অপরিহার্য। সেগুলো হলো নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ প্রশাসনিক কাঠামো, ভোটাধিকার প্রয়োগে নিরাপদ ও সহনীয় পরিবেশ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতকরণ। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, একটি অংশগ্রহণমূলক ও অবাধ নির্বাচনই পারে দেশে গণতান্ত্রিক ধারার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতারা বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সদিচ্ছাকে বাস্তব রূপ দিতে হলে ফ্যাসিবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে চলমান বিচারিক কার্যক্রমে গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের অগ্রগতি দরকার। এ ছাড়া চলমান সংস্কারপ্রক্রিয়াকে বেগবান ও কার্যকর করা এবং ‘জুলাই সনদ’ যথাসময়ে প্রকাশ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক পক্ষগুলোর সঙ্গে নিয়মিত ও অর্থবহ সংলাপের ধারা চালু রাখতে হবে। নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক ও প্রশাসনিক কাঠামো গঠন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আব্দুল হামিদ দোষী হলে শাস্তি পাবেন : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচন নিয়ে দড়ি–টানাটানি, সাধারণ মানুষ কী চাইছে
  • ইউনূস-মোদির ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়
  • ডিএনসিসি: ১৩১৭৪ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ 
  • রবিবার থেকে ফের চলবে মেট্রোরেল
  • রমজান মাসে নির্বাচনী কার্যক্রম ও প্রচারণায় আপত্তি বিএনপির
  • ট্রাম্পের শুল্কনীতি করোনা মহামারির চেয়েও বিপজ্জনক: আইএমএফ
  • নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস