শিক্ষার মান উদ্বেগজনকভাবে খারাপ হয়ে গেছে: মির্জা ফখরুল
Published: 9th, June 2025 GMT
শিক্ষার মান উদ্বেগজনকভাবে খারাপ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘‘আমি পূর্বের দিনের সমালোচনা করতে চাই না। কারণ তখনকার অবস্থা আর এখনকার অবস্থা এক না। কিন্তু, এটা স্বীকার করতেই হবে যে, শিক্ষার মান অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও উদ্বেগজনকভাবে খারাপ হয়ে গেছে। এটার জন্য কে কতটুকু দায়ী সেটা বলতে চাই না।’’
সোমবার (৯ জুন) দুপুরে ঠাকুরগাঁও রিভার ভিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘সারা দেশেই শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে। কিন্তু, রিভার ভিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান কমার কোনো কারণ ছিল না। কারণ ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের পরেই এই বিদ্যালয়ের স্থান ছিল।’’
তিনি প্রত্যাশা করে বলেন, ‘‘রিভার ভিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে প্রশাসনসহ সবাই চেষ্টা করবেন যে, এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান কীভাবে উন্নয়ন করা যায়। এ বিষয়ে কোনো প্রকার কম্প্রোমাইজ করা উচিত নয়। শিক্ষার ক্ষেত্রে কম্প্রোমাইজ করা যেতে পারে না।’’
বিএনপি মহাসচিব অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘‘শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো গাফিলতি করবেন না। ছাত্রদের পড়া ঠিকমতো বুঝিয়ে দিবেন। তারা যেন বুঝতে পারে সেই জিনিসটা নিশ্চিত করবেন। জাতি পুনর্গঠন করতে গেলে আমাদের ছাত্রদের তৈরি করতে হবে। তারা যেন সকল ক্ষেত্রে তাদের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারে।’’
ফখরুল বলেন, ‘‘বর্তমান যে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব, এই বিশ্বে টিকে থাকতে হলে জ্ঞানের বিকল্প নেই। এখন তো আরো কঠিন হয়ে গেছে। এখন টেকনোলজি এমন এক জায়গায় চলে গেছে, যেটার সঙ্গে খাপ না খাওয়াতে পারলে আমরা পিছিয়ে যাব। সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারব না।’’
এ সময় ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘রাষ্ট্রকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে ও একটি সুন্দর জাতি নির্মাণ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই লেখাপড়া করতে হবে। লেখাপড়ার কোনো বিকল্প নাই। লেখাপড়া করতেই হবে, খেলাধুলাও করতে হবে। সবখানে নিজের যে যোগ্যতা প্রমাণ করতে হলে সেভাবে কাজ করতে হবে এবং প্র্যাকটিস করতে হবে।’’
ঢাকা/হিমেল/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।