এপ্রিল মাসে ভোট হলে নতুন সরকারকে বিশাল বিপদে পড়তে হবে: শামা ওবায়েদ
Published: 9th, June 2025 GMT
এপ্রিল মাসে জনগণের ভোটের মাধ্যমে যে সরকারই গঠন হোক না কেন, নতুন সরকারকে বিশাল বিপদের মধ্যে পড়তে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মাত্র এক মাস পরই সেই সরকারকে বাজেট ঘোষণা করতে হবে।
নিজের নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুরের নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা বিএনপি নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন শামা ওবায়েদ। আজ দুপুরে নগরকান্দা উপজেলার লস্করদিয়া আতিকুর রহমান উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সরকার ঘোষিত নির্বাচনের সময়সীমা প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেত্রী বলেন, ‘এপ্রিল মাসে নির্বাচন দিতে চাচ্ছেন, এটা বাস্তবসম্মত কি না, আমি ইউনূস সাহেব ও তাঁর টিমকে ভেবে দেখতে বলব। কারণ, ফেব্রুয়ারি মাস যদি রমজান মাস হয়, ওই সময় মানুষ রোজা নিয়ে থাকবেন। রমজান মাসে ইলেকশনের ক্যাম্পেইন করা কতটুকু বাস্তবসম্মত, সেটাও এই সরকারের ভেবে দেখতে হবে। তারপরে ঈদ। ঈদের পর আপনারা নির্বাচন দিচ্ছেন।’
এপ্রিল মাসকে নির্বাচন আয়োজনের অনুপযোগী সময় বলে উল্লেখ করেন শামা ওবায়েদ। তাঁর ভাষ্য, ‘এপ্রিল ঝড়বৃষ্টি ও বিভিন্ন পরীক্ষার মাস। সুতরাং বিভিন্ন বাস্তবসম্মত কারণে এই মাস বাংলাদেশের জনগণ, ভোটার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য, বিশেষ করে আমার মা-বোনদের জন্য ও ইয়ং জেনারেশনের জন্য সমীচীন হবে কি না, এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আবার ভেবে দেখতে হবে। আপনারা যেই নির্বাচন এপ্রিল মাসে দিতে পারবেন, সেই নির্বাচন জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি মাসে রোজার আগেও দিতে পারবেন। ডিসেম্বর মাসেও দিয়ে দিতে কোনো সমস্যা নেই।’
ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ জুলফিকার হোসেন, আফজাল হোসেন খান, নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি বাবুল তালুকদার, আলিমুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কোনো দলের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হলে জোট হতে পারে: সারজিস আলম
আগামীর বাংলাদেশ এবং জনগণের স্বার্থ সামনে রেখে যদি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়, তাহলে নির্বাচনী জোট হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এসসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরের একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এনসিপির কমিটি গঠন উপলক্ষে ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার আহ্বায়ক এবং সদস্যসচিবের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সারজিস আলম বলেন, ‘যদি তারা (রাজনৈতিক দল) জুলাই সনদ বাস্তবায়নে একমত থাকে, বিচারিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে একমত থাকে, যদি তারা বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী এবং আওয়ামী ফ্যাসিস্টবিরোধী তাদের শক্ত অবস্থান ধরে রাখতে পারে—এ বিষয়গুলোতে যদি আমরা ঐকমত্য হতে পারি, তাহলে জনগণের স্বার্থে অ্যালায়েন্স (নির্বাচনী জোট) হতে পারে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলমান, তবে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
আগামী নির্বাচনে এনসিপি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং নিজেদের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে কাজ করছে জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে যদি প্রতিটি ওয়ার্ডে এনসিপির আহ্বায়ক কমিটি থাকে, তাহলে ৩০০ আসনে শক্তিশালী প্রার্থী দিতে পারবেন। কমিটি গঠনের বিষয়ে কাজ চলছে।
আগামী সংসদ নির্বাচনে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির (জাপা) অংশগ্রহণ করার কোনো অধিকার নেই উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপি নেতা সারজিস আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এবং তাদের যারা দোসর জাতীয় পার্টি, তাদেরও আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কোনো অধিকার নেই। এই জাতীয় পার্টির কত বড় সাহস, এই জিএম কাদেররা এবং এঁদের যারা সাঙ্গপাঙ্গ আছে, এরা যে খুনিদের দোসর এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ওই খুনিদের মদদদাতা, তার প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়। তারা যখন বলে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না! তাদের জন্মদাতা যে আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগ যে তাদের পেলেপুষে বড় করেছে, এর প্রমাণ তারা আবার নতুন করে দিচ্ছে। তাদের জাত চেনাচ্ছে। এই খুনিদের আগামীর বাংলাদেশের কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অধিকার নেই।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব কি না, এমন প্রশ্নে সারজিস আলম বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন আমাদের শাপলা প্রতীক দিতে গিয়ে তারা তাদের জায়গা থেকে একটি লম্বা সময় স্বেচ্ছাচারিতা করেছে এবং কোনো আইনগত বাধা না থাকা সত্ত্বেও আমাদেরকে শাপলা না দিয়ে শাপলা কলি দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে আমাদের জায়গা থেকে আহ্বান করব, তারা যদি ওই একই ধরনের আচরণ আগামী দিনে করে, তাহলে তাদের ওপর আস্থার সংকট তৈরি হবে। আমরা চাই, তারা সর্বোচ্চ নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠুভাবে তাদের প্রতিষ্ঠানের স্বাধীন যে সাংবিধানিক অবস্থা, তা যেন বজায় রাখে। তারা যেন পূর্বের মতো কোনো দলীয় নির্বাচন কমিশনে পরিণত না হয়। যদি কারও ভেতর এমন চিন্তা বা চেষ্টা থাকে, তাহলে তাদের পরিণতি তাদের পূর্বসূরিদের মতো হবে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা সারোয়ার, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকিন আলম প্রমুখ।