আড়াইহাজারে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ
Published: 10th, June 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার গোপালদী বাজারে দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ইয়াবা দিয়ে এক ফার্মেসি ব্যবসায়ীকে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর নাম সাদেকুর রহমান। তিনি গোপালদী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এবং দীর্ঘদিন ধরে বাজারে ফার্মেসি ব্যবসা করে আসছেন।
সাদেকুর রহমান নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ৪ জুন রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোপালদী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসএসআই কুতুবউদ্দিন (৪৫) ও কনস্টেবল আবুল খায়ের (৩৫) তার ফার্মেসিতে গিয়ে নিজেদের পরিচয় দেন এবং দোকানে প্রবেশ করে ওষুধ সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন।
একপর্যায়ে তারা একটি কাগজ মোড়ানো প্যাকেট বের করে সেটিকে ইয়াবা হিসেবে দাবি করেন এবং তার বিরুদ্ধে মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। পরবর্তীতে স্থানীয় কয়েকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তারা ৫০ হাজার টাকায় বিষয়টি মীমাংসার প্রস্তাব দেন।
সাদেকুর রহমান অভিযোগ করেন, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, যার মাধ্যমে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করা হয়েছে এবং তার সামাজিক ও রাজনৈতিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত এসআই কুতুবউদ্দিন বলেন, “আপনি ওসি সাহেবের সঙ্গে কথা বলেন। বিষয়টা নিয়ে তদন্ত চলছে। তারপর বোঝা যাবে কে দোষী আর কে নির্দোষী।”
ঘটনার বিষয়ে আড়াইহাজার থানার ওসি (তদন্ত) মো.
সহকারী পুলিশ সুপার (আড়াইহাজার সার্কেল) মেহেদী হাসান বলেন, “ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব যবস য় ন র য়ণগঞ জ ব যবস তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
‘ত্বকী হত্যার বিচার নিয়ে বর্তমান সরকার কিছুটা তৎপর, তবে আশানুরূপ অগ্রগতি হচ্ছে না’
তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার বিচার নিয়ে বর্তমান সরকার কিছুটা তৎপর হলেও আশানুরূপ অগ্রগতি হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন তাঁর বাবা রফিউর রাব্বি। নারায়ণগঞ্জ নগরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১৪৭ মাস উপলক্ষে মোমশিখা প্রজ্বালন অনুষ্ঠানে আজ রোববার সন্ধ্যায় এ কথা বলেন তিনি।
রফিউর রাব্বি বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাড়ে ১১ বছর ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ করে রেখেছিল। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আগামী এপ্রিলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। এই সরকারও শেখ হাসিনা সরকারের মতো বিচার অসমাপ্ত রেখে কাঠগড়ায় দাঁড়াক—তা আমরা চাই না। অবিলম্বে ত্বকী হত্যার বিচারের দাবি জানাই।’
নারায়ণগঞ্জের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচির আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট। সংগঠনটির সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনটির সাবেক সভাপতি প্রদীপ ঘোষ, বাসদের জেলা আহ্বায়ক নিখিল দাস, সিপিবির জেলা সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্তী, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক, ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা নির্বাহী সমন্বয়ক অঞ্জন দাস, মহিলা পরিষদের জেলা সহসম্পাদক শোভা সাহা প্রমুখ।
বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে ত্বকীর বাবা বলেন, দুর্বৃত্ত রক্ষার সরকার পালিয়ে গেলেও এখন নতুন নতুন দুর্বৃত্ত তৈরি হচ্ছে। আগের দুর্নাম ঘুচিয়ে এখনো বিচার বিভাগ মুক্ত হতে পারেনি। এখনো বহু ক্ষেত্রেই বিগত সরকারের ধারাবাহিকতা চলছে। দেদার মামলা–বাণিজ্য চলছে, মব জাস্টিসের নামে বর্বরতা চলছে, সরকার এসব নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী এখনো আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে না।
আদালতে দ্রুত ত্বকী হত্যার অভিযোগপত্র দিয়ে বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর দাবি জানিয়ে রফিউর রাব্বি বলেন, ‘সাগর-রুনি, তনুসহ নারায়ণগঞ্জের সব হত্যার দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি। আমরা আশা করছি, সরকার জনগণের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় যথাযথ ভূমিকা রাখবে, ধ্বংসস্তূপ থেকে বিচারব্যবস্থাকে তুলে এনে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে।’
২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ সড়কের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় ত্বকী। এর দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২০১৪ সালে তদন্তকারী সংস্থা র্যাব জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চার সেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। অচিরেই এ বিষয়ে অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করা হবে। কিন্তু ওই অভিযোগপত্র আজও দেওয়া হয়নি।