গোয়াইনঘাটের জাফলং বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় সোমবার বিকেলে স্থানীয়দের সঙ্গে পর্যটকদের হাতাহাতির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। হামলাকারীরা সীমান্তে চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, জাফলং গুচ্ছ গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে শাহিন আহমদ ভারতের ডাউকি থেকে চোরাই পণ্য নিয়ে জাফলং বিজিবি ক্যাম্পের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। ওই সময় তাকে ধাওয়া করে বিজিবি। এক পর্যায়ে স্থানীয় একটি দোকানে মালামাল রেখে পালিয়ে যান শাহিন। ওই দোকানের পাশে পার্কিং করা ছিল ঢাকার ডেমরা থেকে আসা সেলফি পরিবহনের একটি বাস। বাসে আসা পর্যটকদের কাছে ভারতীয় পণ্য কোন দোকানে রাখা হয়েছে তা জানতে চায় বিজিবি। একজন পর্যটক সেই দোকান দেখিয়েও দেন। এর কিছুক্ষণ পর চোরাকারবারবারী শাহিন, গুচ্ছগ্রামের ফজলসহ স্থানীয় কিছু লোক ওই পর্যটকদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। ওই সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রতিদিন প্রকাশ্যে যুবক ও কিশোররা ডাউকি থেকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে আসে। কেউ প্রতিবাদ করলে তারা খারাপ ব্যবহার করে। এমনকি বিজিবি অনেক সময় দেখেও না দেখার ভান করে। 

পর্যটকদের উপর হামলা প্রসঙ্গে ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান জানান, তারা মুরব্বিদের নিয়ে বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছেন। বড় কিছু হয়নি, তুচ্ছ ঘটনায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছিল।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী জানিয়েছেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে পর্যটকদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গেই সমাধান করা হয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার জাফলং এলাকায় পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল কম। গরমের কারণে উপস্থিতি কম বলে স্থানীয়রা দাবি করলেও একাধিক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, সোমবারের ঘটনার কারণে মঙ্গলবার পর্যটক কম এসেছেন।

জাফলংয়ে পর্যটকদের সঙ্গে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা বিব্রতকর উল্লেখ করে সোনা মিয়া কটেজ অ্যান্ড রিসোর্টের মালিক খায়রুল মিয়া বলেন, আমরা চেষ্টা করি পর্যটকদের যথাযথ সম্মান দিতে। মাঝেমধ্যে কিছু ঘটনার কারণে যেমন দুর্নাম হয় তেমনি বাইরের পর্যটকরাও নিরুৎসাহিত হন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ফল পর যটক

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’

পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে। 

যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।

বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে। 

রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”

তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।

শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’

ঢাকা/শহিদুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত
  • অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
  • সেন্টমার্টিনের দ্বার খোলা, ছাড়েনি জাহাজ
  • পর্যটন শিল্প বিকাশে আইকন গ্লোবাল ট্যুর অপারেটর আল মামুন
  • সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
  • কক্সবাজার সৈকতে ঘোড়া, কুকুর ও গরু, স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটুকু