বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড-বিসিবি যেদিন টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার রজতজয়ন্তী উদযাপন করবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে, সেদিন কলম্বোয় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা থাকবে মাঠে। লঙ্কায় নাজমুল হোসেন শান্তদের পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভর করবে ঢাকার উৎসব কতটা রঙিন হবে।

মর্যাদা পাওয়ার ২৫ বছরে টেস্ট ক্রিকেটকে বর্তমান প্রজন্ম কতটা সুরক্ষা দিতে পারলেন স্মৃতি রোমন্থন মঞ্চের খুবই প্রাসঙ্গিক আলাপন। অভিষেক টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল বিসিবির সভাপতি হিসেবে অন্তত সেকাল-একালের মেলবন্ধন করার চেষ্টা করলেও করতে পারেন। কারণ, সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে টেস্ট মর্যাদার রজতজয়ন্তী উদযাপনের প্রস্তাবক ছিলেন তিনি। বুলবুলের চাওয়াকে সম্মান দেখিয়ে ক্রিকেট কার্নিভাল আয়োজনে উদ্যোগী হয়েছে বিসিবি। ২২ জুন দেশের ৬৪ জেলায় শুরু হয়ে ২৬ জুন মিরপুরে সমাপ্তি হবে ক্রিকেট কার্নিভালের।

বিসিবি গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের উদ্যোগে ৬৪ জেলায় একযোগে শুরু হবে অনূর্ধ্ব-১২ ক্রিকেট কার্নিভাল। ছেলে ও মেয়ে খুদে ক্রিকেটাররা সাম্যের স্লোগানে খেলবে ম্যাচ। গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ফাহিম সিনহা যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফোনে সমকালকে বলেন, ‘বুলবুল ভাই টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার রজতজয়ন্তী উদযাপনের কথা মৌখিকভাবে বলেছেন। আমরা ২৫ বছরকে জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করতে চাই। ক্রিকেট কার্নিভাল দিয়ে উদযাপন করা হবে। ২৬ জুন মিরপুরে ফাইনালে জাতীয় দলের সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা আমন্ত্রিত অতিথি থাকবেন।’ 

টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার রজতজয়ন্তীতে অভিষেক টেস্ট দলের ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফ, অফিসিয়ালদের সম্মাননা স্মারক দেওয়া হবে কিনা জানা যায়নি। এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে ফাহিম সিনহাকে হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দেওয়া হলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উত্তর দেননি।

গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ম্যানেজার আবু ইমাম মো.

কাউসার জানান, ৬৪ জেলা ও ঢাকা মেট্রোপলিটনে একযোগে ক্রিকেট কার্নিভাল আয়োজন করা হবে ২১ বা ২২ জুন। স্কুলের ছেলেমেয়েদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে সিক্স-এ সাইড ম্যাচ। এই প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি জেলায় কোচদের বলা হয়েছে ৩৬ জন করে ছেলেমেয়েকে বাছাই করতে। প্রতিটি জেলায় ৬টি করে দল নিজেদের মধ্যে ম্যাচ খেলবে। চারজন করে ছেলে ও দুজন করে মেয়ে থাকতে পারে প্রতি দলে। জেলা পর্যায় থেকে খেলোয়াড় বাছাই করে বিভাগ থেকে একটি করে দল ঢাকার ফাইনাল রাউন্ডে খেলবে। ২৬ জুন ৮টি দল নিয়ে হতে পারে ঢাকার চূড়ান্ত পর্ব।’ 

ক্রিকেট কার্নিভাল বাস্তবায়নে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিসিবি মিডিয়া বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার রাবীদ ইমামকে। আসলে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের কাছে দেশের টেস্ট মর্যাদা পাওয়া, অভিষেক টেস্ট খেলার অনুভূতি অন্যরকম। তাঁর পরিচিতির একটা বড় অংশজুড়ে আছে অভিষেক টেস্টের সেঞ্চুরি। খেলোয়াড়ি জীবনের সে রোমাঞ্চ আজও সতেজ বুলবুলের কাছে। তাই তো টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার রজতজয়ন্তী উদযাপনকে উৎসবমুখর করতে চান তিনি।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ