ইসরায়েলের দুই উগ্র ডানপন্থী মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির ও বেজালেল স্মোট্রিচের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাজ্যসহ চার দেশ। পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বারবার সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একজোট হয়ে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও নরওয়ে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচের সম্পদ জব্দ এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তাঁরা দুজনই পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতির বাসিন্দা।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিরল মতবিরোধের ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মার্কো রুবিও লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপের নিন্দা জানায়।’

রুবিও মনে করেন, এ সিদ্ধান্তের কারণে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে চলা প্রচেষ্টা এগোবে না, যুদ্ধ শেষ হবে না এবং ২০ মাস আগে হামাস যে ইসরায়েলি জিম্মিদের অপহরণ করেছিল, তাদের ঘরে ফেরানোও সম্ভব হবে না।

মার্কো রুবিও ইসরায়েলি মন্ত্রীদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান।

রুবিও বলেন, ‘আমরা দুই পক্ষকে এক পাল্লায় মাপার এ চিন্তা মানি না। হামাস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। আমরা আমাদের মিত্রদের মনে করিয়ে দিচ্ছি যে আসল শত্রুকে ভুলে গেলে চলবে না।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি অপর চার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘বেন-গভির ও স্মোট্রিচ উগ্র সহিংসতাকে উসকে দিয়েছেন এবং ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করেছেন। এমন কাজ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এখন আমরা দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে এই পদক্ষেপ নিয়েছি।’

আরও পড়ুনগাজায় হামাসের নিরস্ত্রীকরণ ও আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনের আহ্বান আব্বাসের১৬ ঘণ্টা আগে

এ বিষয়ে জানেন, এমন দুটি সূত্র বলেছে, পাঁচ দেশের এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে আর্থিক লেনদেনে কড়াকড়ি ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সার পাঁচ দেশের এই পদক্ষেপকে চরম অপমানজনক বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, কীভাবে এর জবাব দেওয়া হবে, তা ঠিক করতে ইসরায়েল সরকার আগামী সপ্তাহের শুরুতেই একটি বিশেষ বৈঠক করবে।

এদিকে হেবরন হিলস এলাকায় একটি নতুন ইহুদি বসতির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী স্মোট্রিচ বলেছেন, ‘আমরা দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। ঈশ্বরের ইচ্ছায় আমরা বসতি গড়ে তোলার কাজ চালিয়ে যাব।’

আরও পড়ুনগাজায় হামাসবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দেওয়ার কথা স্বীকার করলেন নেতানিয়াহু০৬ জুন ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট রমন ত র ইসর য় ল মন ত র য ক তর ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশের খোঁজে সাগরে

শেষ হয়েছে ৫৮ দিনের প্রতীক্ষা। আবারও জীবিকার টানে সাগরে নেমেছেন লক্ষ্মীপুর উপকূলের হাজারো জেলে। ইলিশের আশায় বুক বেঁধে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ছুটছেন তারা। সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নতুন উদ্যমে মুখর হয়ে উঠেছে উপকূলের ট্রলারঘাট, আড়ত ও বরফকলগুলো। 
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর, সদর উপজেলাসহ রামগতি, কমলনগর ও চর আলেকজান্ডার এলাকার অন্তত ২০ হাজার জেলে এখন সাগরমুখী। জাল, জ্বালানি, খাবার আর বরফ বোঝাই করে তারা পাড়ি জমাচ্ছেন গভীর সমুদ্রে ইলিশের খোঁজে। মৎস্য আড়তগুলোতেও ফিরেছে চিরচেনা কোলাহল। পাইকারদের হাঁকডাক, জেলেদের ব্যস্ততা আর আড়তদারদের দরদামে মুখর হয়ে উঠেছে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। বরফকলগুলোতেও চলছে পুরোদমে উৎপাদন। 
প্রতি বছরের মতো এবারও ইলিশসহ ৪৭৩ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ ছিল। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে এ সময় সাগরে নামা থেকে বিরত ছিলেন উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেরা। 
রামগতির বড়খেরী এলাকার জেলে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এবার সবাই নিষেধাজ্ঞা মেনে চলেছে। ইলিশ উঠছে, তবে সাইজে একটু ছোট।’
একই এলাকার সবুজ মাঝি বলেন, নৌকায় ৩ লাখ টাকার মালপত্র নিয়ে তারা সাগরে মাছ ধরতে গেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে প্রথমবার জাল টানতেই ইলিশ উঠেছে, যার দাম আনুমানিক ২০ হাজার টাকা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ