চার দিনের সফরে যুক্তরাজ্য গেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। পরে হোটেলে পৌঁছালে সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তবে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের একদল নেতাকর্মী এ সময় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। আর ইউরোপীয় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি পরিচয়ে কাজ করা চারটি সংগঠন যৌথভাবে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারকে একটি চিঠি দিয়েছেন। 

ড.

ইউনূসকে স্বাগত জানান প্রবাসীরা
হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ড. ইউনূস সরাসরি লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে যান। এ সময় তাঁকে স্বাগত জানাতে হোটেলের সামনে জড়ো হন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তারা হোটেলের সামনে তাঁর পক্ষে স্লাগান দেন। এ সময় অনেকের হাতে জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ব্যানার দেখা যায়। সমাবেশে অনেকের মধ্যে ছিলেন জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা, ব্যারিস্টার সাইফুদ্দিন খালেদ, খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা সালেহ আহমদ প্রমুখ। 

ছিল বিক্ষোভও
ডরচেস্টার হোটেলের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছাড়াও এতে অংশ নেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাবেক এমপি রণজিত সরকার, হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিধান কুমার সাহাসহ বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী-এমপি।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারকে ইউরোপীয় নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে যুক্তরাজ্যের ইবিএফ কমিউনিকেশনস ডিরেক্টর ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন, সাউথ এশিয়া ডেমোক্রেটিক ফোরামের নির্বাহী পরিচালক পাওলো কাসাকা, বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ জার্মানির ব্রাসেলস ক্লাউস স্ট্রেম্পেল, তুরস্কের আর্থ সিভিলাইজেশন নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা সমন্বয়কারী তারিক গুনেরসেলের লেখা একটি চিঠি দেওয়া হয় গত ৯ জুন। তাতে বাংলাদেশে গ্রেপ্তার-আটক, হয়রানি, ধর্মনিরপেক্ষ প্রতীকগুলো লক্ষ্যবস্তু করা, ১ হাজার ৫০০টিরও বেশি ম্যুরাল ও ভাস্কর্য ভাঙা, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর জাদুঘর ভেঙে ফেলা, বয়স্ক মুক্তিযোদ্ধাদের কারাগারে পাঠানোর কথা বলা হয়।

চিঠিতে স্টারমারকে বলা হয়, ড. ইউনূসের সঙ্গে আপনার বা আন্তর্জাতিক নেতাদের যোগাযোগ এমন একটি শাসনব্যবস্থাকে বৈধতা দেবে, যারা দৃশ্যত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থেকে সরে যাচ্ছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড ইউন স য ক তর জ য স ব গত মন ত র ইউন স ধ নমন আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা

রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।

গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।

উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।

সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।

ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।

তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।

মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।

রাজশাহী কালেক্টরেট মাঠে বইমেলা উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে আলোচনা সভা। গতকাল রোববার সন্ধ্যায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ