কোমর ব্যথা কি মানসিক রোগ? এ কথার ‘ছোট উত্তর’ দেওয়া দুরূহ। বিষয়টি বোঝাতে একটি উদাহরণ টানা প্রয়োজন। আমরা সবাই ‘মরা নদী’ চিনি। যৌবনকালে কুলকুল
করে বয়ে চলা নদীর পানি শুকিয়ে যায়; কিন্তু তার পথধারা বহুকাল পরও থেকে যায়।
চিহ্ন দেখে আলবত বোঝা যায়, একসময় এখানে নদী ছিল, অর্থাৎ পানি শুকিয়ে গেলেও থেকে যায় দাগ।
ধরুন, সামান্য বা মাঝারি মানের ডিস্ক প্রলাপস, যা পিএলআইডি নামে পরিচিত, সে কারণে আপনার কোমর ব্যথা হলো। ডিস্ক আগের জায়গায় ফিরে গেল ঠিকই, তীব্র ব্যথাও কমে গেল, কিন্তু মৃদু থেকে মাঝারি ব্যথা রয়েই গেল। এ ব্যথা শরীরে বয়ে চলল দীর্ঘকাল, ঠিক মরা নদীর মতো।
কারও যদি কোমর ব্যথা সম্পর্কে অতিমাত্রায় নেতিবাচক মনোভাব থাকে অথবা প্রকৃত কোমর ব্যথায় আক্রান্ত ব্যক্তিটি আর্থসামাজিক বা পারিবারিক কারণে মানসিক চাপে থাকেন, তবে তাঁর মনের ব্যথার সঙ্গে কোমর ব্যথার সংমিশ্রণ ঘটতে পারে। তৈরি হতে পারে মনের ভেতর স্থায়ী দাগের, যা তাঁর শরীরকে ব্যথার উপলব্ধি দিতে থাকবে বছরের পর বছর। এ ধরনের কোমর ব্যথা ফাইব্রোমায়েলজিয়া নামক রোগের সঙ্গে অনেকটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ।
চিকিৎসা
মনের ব্যথা যখন শরীরে চলে যায়, সেখান থেকে মুক্তি পাওয়া বেশ কঠিন। অবাধ তথ্যপ্রবাহের এ যুগে ইউটিউব, ফেসবুকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে নানা রকমের মনগড়া ও ভুল তথ্য। এসব ভুল তথ্য থেকে ভুল শিক্ষা নেওয়া কোমর ব্যথা রোগীকে কোমর ব্যথা সম্পর্কে শিক্ষিত করে তোলাই মূল চ্যালেঞ্জ। প্রথমত, এ ধরনের রোগীকে সঠিক বিষয়টি বোঝাতে হবে। দ্বিতীয়ত, টার্গেটেড বা সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা দিতে হবে। সেটি হতে পারে থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ, অ্যাডভাইস বা অন্য চিকিৎসা।
রোগীকে যা করতে হবে
আজকাল বিজ্ঞাপন ও অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন পোস্ট বা ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়া যায়। একটি তথ্য বিশ্বাস করার আগে দেখে নিন কে এই তথ্য দিচ্ছেন, তাঁর যোগ্যতা কী। রোগীদের মধ্যে প্রচলিত ধারণা হলো, কোমর ব্যথা পিএলআইডির কারণে বেশি হয়। কিন্তু এ কথা অনেকাংশে মিথ্যা। গবেষণায় হাজার হাজার সুস্থ মানুষের এমআরআই করে দেখা গেছে, তারা পিএলআইডিতে আক্রান্ত অথচ তাদের কোমর ব্যথা নেই। সে ধরনের অনেক কোমর ব্যথার রোগী রয়েছেন, যাদের এমআরআই স্বাভাবিক। তাই সঠিক তথ্য ও চিকিৎসা পেতে রোগীকে সবার আগে সচেতন হতে হবে।
লেখক : বিভাগীয় প্রধান, ফিজিওথেরাপি ও রিহ্যাব বিভাগ; উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এমআরআইয়ের অপেক্ষায় সোহান-শরিফুল
মাঠে ফিল্ডিংয়ের সময় গোড়ালি মচকে চরম ব্যথা পেয়েছেন কাজী নুরুল হাসান সোহান। একই অবস্থা শরিফুল ইসলামের। তার হ্যামস্ট্রিংয়ে টান পড়েছে। দুজনকেই পর্যবেক্ষণে রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
সকালে দলের সঙ্গে ঢাকা আসেননি তারা। আলাদা ব্যবস্থায় তাদের দুজনকে আজ বিকেলে বা সন্ধ্যায় ঢাকা আনা হবে। আগামীকাল ঢাকায় দুজনের এমআরআই করানোর পর চোট সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে পারবে বিসিবির মেডিকেল বিভাগ।
চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে গতকাল শুক্রবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের ১১তম ওভারে চোট পান সোহান। তার বাম পায়ের গোড়ালি মচকে যায়। ব্যথায় মাঠেই কাতরাতে থাকেন তিনি। চোটের পর তাকে স্ট্রেচারে করে মাঠ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা, এক্স রে করানোর পর প্ল্যাস্টার করানো হয়। রাতেই হাসপাতাল থেকে হোটেলে ফেরেন এই ক্রিকেটার। সোহানের যে চোট তাতে তার মাঠে ফিরতে সময় লাগবে বলেই ধারনা করা হচ্ছে। অন্তত ৫ সপ্তাহ তাকে বিশ্রামে থাকতে হবে। এরপর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। এখন অবস্থান করছেন চট্টগ্রামে।
একই ম্যাচে শরিফুল ২ ওভার করার পর তার হ্যামস্ট্রিংয়ে টান পড়ে। আজ ঢাকায় ফেরার পর আগামীকাল তাদের এমআরআই করানো হবে।
ঢাকা/ইয়াসিন