ঈদুল আজহার লম্বা ছুটি শেষে মানুষ কর্মস্থলে ফিরতে শুরু। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল থেকে রাজধানীর প্রবেশপথে দেখা গেছে, ফিরতি মানুষের ভিড়। বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান ও ফুলবাড়িয়া এলাকায় যাত্রী নেয়ার জন্য গণপরিবহন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের উপস্থিতি রয়েছে।

ঢাকায় ফেরা মানুষের মধ্যে তাড়াহুড়া ও ক্লান্তির চিহ্ন স্পষ্ট। গুলিস্তানে কোরবানির মাংস ও ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বাস থেকে নামা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাদেকুর রহমান জানান, গ্রামে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করাটা অন্যরকম অনুভূতি কিন্তু ঢাকায় ফিরে আবার কাজের মধ্যে ঢুকতে হবে। তাই ফিরতেই হচ্ছে। বাসে সিট পেতে কষ্ট হয়েছে, অতিরিক্ত ভাড়াও দিতে হয়েছে।

বরিশাল থেকে আসা রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘‘আমার ছেলেটা স্কুলে পড়ে। ওর ক্লাস শুরু হবে রবিবার (১৫ জুন) থেকে। তাই আজই ফিরছি। বাসে প্রচণ্ড ভিড় ছিল।’’ 

আরো পড়ুন:

এক্সপ্রেসওয়েতে ঢাকামুখী পরিবহনের চাপ বাড়ছে

পদ্মা সেতুতে সর্বোচ্চ ৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা টোল আদায়

পরিবহন মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ বাস মালিক সমিতির সদস্য তোফায়েল হোসেন জানান, ঈদের পর সাধারণত তৃতীয় বা চতুর্থ দিন থেকে ঢাকায় ফিরতি যাত্রীর চাপ বাড়ে। এবার লম্বা ছুটি হওয়ায় একটু পরে মানুষ ফিরছে। প্রতিটি রুটে অতিরিক্ত বাস নামানো হয়েছে। তবে যাত্রীর চাপ এত বেশি যে সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। 

পদ্মা সেতু হয়ে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে খুলনা ও বরিশাল বিভাগ থেকে আসা যাত্রীদের অনেকে নামছেন পোস্তগোলা, জুরাইন ও যাত্রাবাড়ীতে। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের যাত্রীরা নামছেন সাইনবোর্ড, শনির আখড়া, রায়েরবাগ ও সায়েদাবাদ এলাকায়।

এসব এলাকায় যাত্রীদের স্থানীয় গন্তব্যে পৌঁছাতে অন্যতম ভরসা সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। গুলিস্তান এলাকায় অটোরিকশার চালক মো.

সিরাজ জানান, আজ বৃহম্পতিবার (১২ জুন) সকাল থেকে প্রচুর যাত্রী মিলছে। অনেকে দূরের গন্তব্যে যেতে চায়। তবে খালি ফিরতে হচ্ছে। তাই ভাড়াও একটু বেশি চাইতে হচ্ছে। 

অনেক যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়ার কথা বলছেন। মালিবাগের উদ্দেশে অটোরিকশায় ওঠা এক নারী বলেন, “সাধারণ দিনে যেখানে ৩০০ টাকায় যাই, সেখানে আজ চালক ৫০০ টাকা চেয়েছে। বাধ্য হয়ে দিতে হয়েছে।’’ 

ফুরবাড়িয়া বাস টার্মিনালে দায়িত্বরত ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের যাত্রাবাড়ী অঞ্চলের উপপরিদর্শক (এসআই) তানজিল হাসান বলেন, ‘‘আজ সকাল থেকে ফিরতি যাত্রীর চাপ বাড়ছে। তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের যানজট হয়নি। আমরা হাইওয়ে পুলিশ ও থানা পুলিশ সমন্বয় করে কাজ করছি।’’

তিনি জানান, বিশেষ করে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের উপর নামার প্রবণতা অনেক যাত্রীর মধ্যে দেখা যাচ্ছে। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। তবে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।

গত ৭ জুন দেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। সরকারি চাকরিজীবীরা এবারের ঈদে টানা ১০ দিন ছুটি পেয়েছেন, যা শেষ হবে ১৪ জুন। ফলে আরো দুই দিন রাজধানীমুখী মানুষের চাপ অব্যাহত থাকবে। 

ঢাকা/এএএম/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন সড়ক দ র ঘটন এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ