তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেছেন, “বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এ দেশের ছাত্র-জনতা অকাতরে জীবন দিয়েছে। আমরা আমাদের সন্তানদের রক্তের ঋণের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। জুলাই-বিপ্লবের পরে এখন আমাদের আত্মশুদ্ধির সময় এসেছে। সে কথা মনে ধারণ করে সততা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে সরকারি দায়িত্ব পালন করতে হবে।” 

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে বাংলাদেশ বেতারের খুলনা কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে বেতারের সম্মেলনকক্ষে কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।

সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেন, “আমাদের এখন আরো সৎ হওয়া প্রয়োজন। সরকারের যে প্রতিষ্ঠানে আমরা কাজ করি, সেটাকে যেন আমরা নিজের মনে করি। প্রতিষ্ঠানকে আপন ভাবতে পারলে আমরা অবশ্যই সৎ হব এবং সৎভাবে দায়িত্বপালন করব। কাজ করার স্পৃহাও সততার অংশ। কোনটা সঠিক, কোনটা ভুল-সেটা এখন আমরা অকুতোভয়ে বলতে পারছি। আমাদের মাঝে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহনশীলতা থাকতে হবে।” 

আরো পড়ুন:

খুলনায় করোনা রোগী চিকিৎসায় প্রস্তুত ২০ শয্যা

খুলনায় নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি হয়নি পশুর চামড়া, ব্যবসায়ীরা হতাশ

তিনি বলেন, “প্রান্তিক মানুষের মাঝে অপতথ্য বা মিথ্যাতথ্যের বিস্তার বন্ধে বেতারের বিশেষ ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।”

মতবিনিময়কালে বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক এ এস এম জাহীদ, প্রধান প্রকৌশলী (রুটিন দায়িত্ব) মুনীর আহমদ, আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মুন্সি জালাল উদ্দিন, বেতারের পরিচালক মো.

বশির উদ্দিন, খুলনা বেতারের আঞ্চলিক বার্তা নিয়ন্ত্রক মো. নূরুল ইসলাম, আঞ্চলিক পরিচালক (দৈনন্দিন দায়িত্ব) মো. শামিম হোসেন, আঞ্চলিক বেতার প্রকৌশলী মো. মোতাকাব্বির করীম খান, বাংলাদেশ বেতারের অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) সৈয়দ জাহিদুল ইসলাম, জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক গাজী জাকির হোসেন, আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপ-প্রধান তথ্য অফিসার এ এস এম কবীরসহ খুলনা বেতারের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

এর আগে, আজ সকালে সচিব মাহবুবা ফারজানা খুলনা সার্কিট হাউজে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীন খুলনার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন।

মতবিনিময়কালে তথ্য সচিব বলেন, “বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠানের মান কাঙ্খিত পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। এক সময় সরকারি গণমাধ্যম বিটিভি ও বেতারে কালজয়ী অনেক নাটকসহ বিভিন্ন জনপ্রিয় অনুষ্ঠান হতো। দর্শক-শ্রোতাদের কাছে বিটিভি ও বেতারের সেই আবেদন ফিরিয়ে আনতে হবে। বাংলাদেশ বেতারকে জনমুখী করতে হবে, জনমানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।” 

তিনি বলেন, “কেবল সরকারের দেওয়া অর্থের ওপর নির্ভর না করে শ্রোতানন্দিত অনুষ্ঠান নির্মাণের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন ও স্পন্সরখাত থেকে নিজস্ব আয়ের পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া দরকার। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাষ্ট্রের বোঝা না বানিয়ে, লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা এখন সময়ের দাবি। পাশাপশি এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের জন্য আইসিটিসহ প্রয়োজনীয় ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করা আবশ্যক।”

খুলনা সফরকালে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব খুলনায় আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের জায়গা ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের খুলনা উপকেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র মতব ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ