সংস্কার সম্পর্কে রাজা চার্লসকে অবহিত করলেন ড. ইউনূস
Published: 12th, June 2025 GMT
যুক্তরাজ্য সফররত প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৃহস্পতিবার লন্ডনে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছেন। এ সময় তারা বাংলাদেশে চলমান সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের জানান, প্রধান উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ রাজা চার্লসের মধ্যে একান্ত বৈঠক হয়েছে। এটি ছিল একেবারে ব্যক্তিগত। বৈঠকে বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক রূপান্তর প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা তাঁর সরকারের নেওয়া সংস্কার কার্যক্রম সম্পর্কে রাজা চার্লসকে অবহিত করেছেন। খবর বাসসের।
শফিকুল আলম বলেন, ‘সকাল ১১টা ২০ মিনিট থেকে প্রায় আধ ঘণ্টার বৈঠক অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল। রাজা চার্লস বহুদিন ধরে প্রফেসর ইউনূসকে চেনেন। নানা বিষয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এই পুরো সফরের মধ্যে আমি বলব, এটি ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।’
একান্ত সাক্ষাতের পর রাজা ও রানীর স্বাক্ষরযুক্ত একটি ছবি উপহার হিসেবে অধ্যাপক ইউনূসকে দেওয়া হয়। এটি প্রধান উপদেষ্টার জন্য বড় সম্মানের বিষয় বলে জানান প্রেস সচিব। বাকিংহাম প্যালেসে অধ্যাপক ইউনূসকে ব্যক্তিগত সাক্ষাতের জন্য স্বাগত জানান রাজা চার্লস।
নিয়মিত কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সাক্ষাতের পাশাপাশি রাজা এমন ব্যক্তিদের সাক্ষাৎ দেন, যারা তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জন করেছেন বিশেষ করে, যারা রাজকীয় নিয়োগ পেয়ে থাকেন বা তাদের নামে প্রদত্ত পুরস্কার গ্রহণ করছেন। ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করে বা ‘অডিয়েন্স’ প্রদান করে রাজা নির্দিষ্ট ব্যক্তি ও তাদের কাজের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দেন এবং তাদের সম্পর্কে আরও জানার পাশাপাশি রাজকীয় অভিজ্ঞতা উপভোগ করার সুযোগ করে দেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’