ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া তাদের লাখ লাখ সেনা হারিয়েছে। জুন মাস শেষ হওয়ার আগেই রাশিয়ার সামরিক হতাহতের সংখ্যা ১০ লাখে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই পরিসংখ্যানের মধ্যে যুদ্ধকালে আহত ও নিহত দুই-ই রয়েছে। পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, ইউক্রেনের ভূখণ্ডে অবৈধ দখল বজায় রাখা ও সম্প্রসারণের জন্য মস্কো যেকোনো মূল্য চুকাতে প্রস্তুত।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হওয়া পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর থেকে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বিপুল ক্ষয়ক্ষতির কারণ হলো দেশটির ‘মাংস কুচানো যন্ত্রের’ যুদ্ধকৌশল। এটা এমন একটা যুদ্ধকৌশল, যেখানে কাতারের পর কাতার সৈন্যকে শত্রুপক্ষের গোলার মুখে পাঠানো হয়, যাতে অনেক সৈন্য প্রাণ হারালেও অন্তত কয়েকজন শত্রুব্যূহ ভেঙে এগিয়ে যেতে পারেন।

ভ্লাদিমির পুতিনের এই কৌশল রুশ বাহিনীকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে ধারাবাহিক অগ্রগতি অর্জনে সহায়তা করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটা বেদনাদায়ক ও ধীরগতির অগ্রগতি। প্রতি বর্গকিলোমিটার দখলের জন্য রাশিয়ার গড়ে ৫৩ জন সেনা হতাহত হয়েছেন।

আরও পড়ুনপুতিনের যে সাত সত্যি জানেন না ট্রাম্প২৩ এপ্রিল ২০২৫

ব্যাপক হারে সেনা হারানোর কারণে রাশিয়া এখন ইউক্রেনে তাদের যুদ্ধকৌশলে পরিবর্তন এনেছে। এখন রুশ বাহিনী ছোট ছোট সেনা ইউনিট ব্যবহার করছে। এর কারণ হলো, যুদ্ধে অনেক জুনিয়র কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। যদিও সৈন্যদের মধ্য থেকে নতুন অফিসার নিয়োগ দিয়ে সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দ্রুত শূন্যস্থান পূরণ করা হচ্ছে। কিন্তু নতুন কর্মকর্তাদের বড় আকারের সেনাদল পরিচালনার মতো যথেষ্ট প্রশিক্ষণ বা অভিজ্ঞতা নেই।

ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ফলে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীতে নতুন সেনা নিয়োগের ক্ষেত্রেও আরও চাপ বেড়েছে। নতুন করে সেনা নিয়োগের ব্যাপারে পুতিন অনাগ্রহী হওয়ায় জনবলসংকট মেটাতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে নানা ‘সৃজনশীল’ উপায় বের করতে হচ্ছে।

আহত সেনাদের পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগেই যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হচ্ছে। রুশ সেনারা অভিযোগ করেছেন, চিকিৎসা শেষ হওয়ার আগেই তাদের জোর করে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ইউক্রেনীয় ড্রোন অপারেটররা এমন ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে—ক্রাচে ভর দিয়ে হাঁটছেন—এমন রুশ সেনারা যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান করছেন।

এই যুদ্ধ যে দীর্ঘমেয়াদি সংকট তৈরি করবে, সেটা হলো রাশিয়ার জনসংখ্যা হ্রাস পাবে। যদিও রাশিয়ার সরকার এখন নারীদের বেশি বেশি সন্তান নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করছে। কিন্তু ‘মাদার হিরোইন’ পুরস্কার পুনঃপ্রবর্তনের পর যেসব নারী দশ বা তার বেশি সন্তান জন্ম দিয়ে ও লালনপালন করে সেই সম্মান অর্জন করতে চান, তাঁরাও পুরুষ সঙ্গী খুঁজে পেতে সমস্যায় পড়তে পারেন।

রাশিয়ার সামরিক নিয়োগকর্তারা জনবলসংকট মেটাতে কারাগারগুলোয় যাচ্ছেন। সাধারণ ক্ষমার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বন্দীদের যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়োগের প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। ইউক্রেনের বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা জানাচ্ছে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই পদ্ধতিতে আনুমানিক ১ লাখ ৮০ হাজার সৈন্য নিয়োগ করেছে। ২০২২ সালের গ্রীষ্মকালে এই পদ্ধতির সূচনা করেছিল ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন।

এভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত সাবেক বন্দীদের মধ্যে কিছু নারীও রয়েছেন। তবে ঠিক কতজন নারী বন্দীকে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সেই পরিসংখ্যান জানা যাচ্ছে না। ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ সামরিক বাহিনীতে নারীদের সক্রিয়ভাবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি গোপন রাখা হয়েছে। তার কারণ হলো, এটি ক্রেমলিনের প্রচারিত বার্তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কারণ, সেই বার্তায় ক্রেমলিন বলেছিল, সেনাবাহিনীতে কাজ করা পুরুষদের কাজ এবং ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ পুরুষদের তাঁদের পুরুষত্ব প্রদর্শনের সুযোগ এনে দিয়ছে।

রাশিয়াকে এখন ক্রমেই সেনাবাহিনীর জনবলসংকট মেটাতে মিত্রদেশ উত্তর কোরিয়া ও চীনের দিকে ঝুঁকতে হচ্ছে। এ বছরের শুরুর দিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেছিলেন, অন্তত ১৫৫ জন চীনা সেনা রাশিয়ার পক্ষে ইউক্রেনে লড়াই করছেন। উত্তর কোরিয়া যেসব সেনা রাশিয়ায় পাঠিয়েছে, তাদের মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজারজন হতাহত হয়েছেন।

আরও পড়ুনইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধে নতুন করে উসকানি দিচ্ছে কে৩০ নভেম্বর ২০২৪

তবে সেনাসংকট মোকাবিলায় রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতি হলো বেসামরিক নাগরিকদের সামরিক বাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় বেতন ও সুবিধা দেওয়া। প্রতি মাসে এভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের মাসে কমপক্ষে ২ লাখ রুবল (২ হাজারের বেশি মার্কিন ডলার) বেতন দেওয়া হয়। যুদ্ধরত সেনারা এখন রাশিয়ার শীর্ষ আয়কারী ১০ শতাংশের মধ্যে স্থান পেয়েছেন।

উচ্চ বেতনের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী বা ‘চুক্তিভিত্তিক’ নিয়োগপ্রাপ্ত সেনা পরিবারগুলোকে নানা সুযোগ–সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। নিম্ন সুদে গৃহনির্মাণ ঋণ দেওয়া হচ্ছে। যুদ্ধে যাঁরা নিহত হচ্ছেন কিংবা স্থায়ীভাবে পঙ্গু হচ্ছেন, তাঁদের উদার হস্তে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। কিছু অঞ্চলে, সমাজকল্যাণ বাজেটের অর্ধেকেরও বেশি অংশই বরাদ্দ করা হচ্ছে, সেনা ও তাঁদের পরিবারদের জন্য।

অর্থের এই প্রবাহ অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা রাশিয়ার কিছু অঞ্চলের মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে। এই আর্থিক উন্নতি ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের’ প্রতি জনসমর্থন আরও জোরালো করেছে।

কিন্তু কোনো অঞ্চল থেকে এতসংখ্যক পুরুষের অন্যখানে চলে যাওয়া (তাঁদের অনেকেই কোনো দিন আর ফিরে আসবে না) অনেক ছোট সম্প্রদায়ের জনমিতিক বিন্যাসের পরিবর্তন ঘটিয়ে দিয়েছে। এসব জনগোষ্ঠীর বড় অংশই এখন নারী, ছোট শিশু ও বয়স্করা।

যুদ্ধক্ষেত্রে যেসব সৈনিক শারীরিক বা মানসিকভাবে স্থায়ী ক্ষত নিয়ে গ্রামে বা ছোট শহরে ফিরে আসছেন, তাঁরা প্রতিবন্ধী ভাতা পাবেন। কিন্তু রাশিয়ার যে বেহাল স্বাস্থ্যব্যবস্থা, সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসহায়তা পেতে তাঁদের সংগ্রাম করতে হতে পারে।

ইউক্রেন যুদ্ধে যোদ্ধাদের মধ্যে একটি শ্রেণি সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন, তাঁরা হলেন সাবেক বন্দীদের মধ্যে যাঁরা যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে বেঁচে ফিরেছেন। কিন্তু কারাগার থেকে সেনা নিয়োগের ফলাফল হলো—যখন সহিংস অপরাধীরা যুদ্ধ শেষে পূর্ণ ক্ষমা নিয়ে ফিরে আসেন, তখন তাঁদের অনেকেই নতুন অপরাধে লিপ্ত হয়।
ধারণা করা হচ্ছে, সাবেক কারাবন্দী সৈনিকেরা এ পর্যন্ত প্রায় ২০০টি হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী। এসব হত্যাকাণ্ড নিহত সেনাদের পরিবারের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

যদিও রাশিয়ার জনসংখ্যা অনেক বড়, কিন্তু তাদের মানবসম্পদ অসীম নয়। ২০২২ সালে ইউক্রেন আগ্রাসন শুরুর আগ থেকেই মানবসম্পদের দিক থেকে চাপে রয়েছে রাশিয়া। এই আগ্রাসনের কারণে দেশটির মানবসম্পদ ক্ষতির মুখে পড়েছে। আরও বেশিসংখ্যক সেনার প্রয়োজনীয়তা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। রাশিয়া আগে থেকেই একটি জনমিতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সমাজে সন্তান ধারণে সক্ষম জনগণের অনুপাত এমনিতে কম।

এই যুদ্ধ যে দীর্ঘমেয়াদি সংকট তৈরি করবে, সেটা হলো রাশিয়ার জনসংখ্যা হ্রাস পাবে। যদিও রাশিয়ার সরকার এখন নারীদের বেশি বেশি সন্তান নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করছে। কিন্তু ‘মাদার হিরোইন’ পুরস্কার পুনঃপ্রবর্তনের পর যেসব নারী দশ বা তার বেশি সন্তান জন্ম দিয়ে ও লালনপালন করে সেই সম্মান অর্জন করতে চান, তাঁরাও পুরুষ সঙ্গী খুঁজে পেতে সমস্যায় পড়তে পারেন।

জেনিফার ম্যাথার্স, ওয়েলসের অ্যাবারিস্টউইথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিষয়ের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক
এশিয়া টাইমস থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে সংক্ষিপ্তাকারে অনূদিত

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন য দ ধ ইউক র ন র য় র জন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনজর কখন পড়বে

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নে দ্বিতল ভবনবিশিষ্ট একটি মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রে ওষুধ নেই, চিকিৎসক নেই, বিদ্যুৎ–সংযোগ নেই। ফলে তেমন একটা রোগীও নেই। এই ‘নাই নাই’ হাসপাতালটির নাম মাস্টারদা সূর্য সেন মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্র। এভাবে কি একটা হাসপাতাল চলতে পারে? প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে যাওয়ার এমন নমুনা আমাদের হতাশ করে। দেশজুড়ে এ রকম আরও চিত্র আমরা দেখতে পাই, যা আমাদের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে ইতিবাচক কোনো বার্তা দেয় না।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং ২০০৩ সালে চালু হওয়া এই ১০ শয্যার হাসপাতালটির মূল সমস্যা জনবলসংকট। ১৬টি পদের ১টিতেও স্থায়ী জনবল পদায়ন করা হয়নি। অন্য হাসপাতাল থেকে প্রেষণে এসে মাত্র তিনজন কর্মচারী (একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, একজন মিডওয়াইফ ও একজন আয়া) সপ্তাহে কয়েক দিন করে দায়িত্ব পালন করেন। এটি একটি জরুরি প্রসূতিসেবাকেন্দ্র, যা ২৪ ঘণ্টা চালু থাকার কথা। কিন্তু বিদ্যুৎ নেই, ডাক্তার নেই এবং প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে এর কার্যক্রম এখন প্রায় স্থবির।

হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় প্রায় তিন মাস ধরে বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে পানীয় জলের ব্যবস্থাও নেই। বিনা মূল্যের ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে প্রায় ছয় মাস ধরে। এ পরিস্থিতিতে একজন রোগী কীভাবে এখানে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসবেন? যেখানে হাসপাতালের বাইরের সাইনবোর্ডে জরুরি প্রসূতিসেবার জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকার কথা লেখা, সেখানে মূল ফটকে তালা ঝোলানো। এটি জনগণের সঙ্গে একধরনের প্রতারণা। হাসপাতালটি চালু না থাকায় মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতাল বা চট্টগ্রাম শহরে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। এতে সময় ও অর্থ—দুটোরই অপচয় তো বটেই, চরম ভোগান্তিরও শিকার হতে হয় মানুষকে।

যে মিডওয়াইফরা এখানে কাজ করছেন, তাঁরা জানান, এখন মাসে মাত্র চার-পাঁচজন প্রসূতি সেবা নিতে আসেন, যেখানে আগে শতাধিক প্রসূতি সেবা পেতেন। নিরাপত্তা প্রহরীরা দুই বছর ধরে বেতন পাচ্ছেন না। তবু নিয়মিত বেতন পাওয়ার আশায় তাঁরা এখনো কাজ করে যাচ্ছেন। এ অসহনীয় দুর্ভোগের কারণ হলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতা। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানান, তাঁরা বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জনবলসংকটের কথা জানিয়েছেন, কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।

একটি মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রাখতে কেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার ধরনা দিতে হবে? জনবল নিয়োগ, কর্মচারীদের বকেয়া বেতন পরিশোধ, বিদ্যুতের ব্যবস্থা কার্যকর করা—সব ধরনের সংকট দূর করতে হাসপাতালটির দিকে আন্তরিক মনোযোগ দেওয়া হবে, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনজর কখন পড়বে