৫৮ দিনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারও সরগরম বাগেরহাটের মৎস্য আড়ত
Published: 13th, June 2025 GMT
ভোরের আলো ফোটার আগেই বাগেরহাটের কেবি বাজারে হইচই। সাগরে ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় মাছ ধরে ফিরেছেন জেলেরা। আজ শুক্রবার ভোরে দুটি ট্রলার একসঙ্গে মাছ নিয়ে ঘাটে ভিড়তেই সরব হয়ে ওঠে এলাকার প্রধান সামুদ্রিক মৎস্য অবতরণকেন্দ্রটি।
নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রথম দিনেই বাজারে ভিড় করেন শত শত মৎস্য ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও আড়তদার। শুরু হয় ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাক। মাছের সরবরাহ কম হলেও চাহিদা ছিল অনেক বেশি।
কেবি মৎস্য অবতরণকেন্দ্রটি শহরের দড়াটানা নদীর তীরের বাসাবাটি এলাকায়। জেলেরা সাগর থেকে ধরা মাছ নিয়ে সরাসরি ঘাটে আসেন। এখান থেকেই বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা মাছ কিনে নিয়ে যান।
ভোরে বাজারে দেখা যায়, ঘাটে ভিড়েছে দুটি ট্রলার। সেখান থেকে শ্রমিকেরা ঝুড়িতে করে মাছ তুলছেন। ইলিশ, রুপচাঁদা, ভেটকি, লইট্টা, ছুরি, জাবা, ঢেলা, চ্যালাসহ নানা ধরনের সামুদ্রিক মাছ উঠেছে বাজারে। তবে বাজারে যে পরিমাণ মাছ এসেছে, তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। ফলে দাম ছিল চড়া।
সাগর থেকে মাছ ধরে ফেরা জেলে রুহুল আমিন বলেন, ‘সাগরে যাওয়ার পরে কয়েকবার জাল ফেলতে পেরেছি। অল্প কিছু ইলিশ পেয়েছি, বাকি সব আজেবাজে মাছ। পরে ট্রলারে সমস্যা হওয়ার কারণে চলে এসেছি।’
মোরেলগঞ্জ থেকে মাছ কিনতে আসা তৈয়ব মুন্সি বলেন, ‘অনেক দিন পর এলাম। দাম বেশি, তবু কিছু মাছ কিনছি। এখন এলাকায় বিক্রি করতে পারলে ভালো হয়।’
আরও পড়ুনসাগরে মাছ ধরায় ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ, সুফল পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন১১ জুন ২০২৫বাজারে ইলিশের দাম ছিল আকাশছোঁয়া। ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ইলিশ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং ৯০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের ইলিশ ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। রুপচাঁদা বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৫০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। এ ছাড়া কঙ্কণ, তুলারডাটি, ঢেলা, চ্যালা, ভেটকি, লইট্টা, ছুরি, জাবাসহ নানা মাছ বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১ হাজার টাকা কেজিতে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ধীরে ধীরে ট্রলারের সংখ্যা ও মাছের পরিমাণ বাড়লে দামও স্বাভাবিক হবে।
কেবি বাজারে মাছ বিক্রি হয় সাধারণত ‘পণ’ হিসেবে। এক পোণে ৮০টি মাছ থাকে। আকার অনুযায়ী প্রতি পোণের দাম নির্ধারিত হয়। ক্রেতারা ঢাকের শব্দে বিট দিয়ে মাছ কেনেন।
কেবি বাজার আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক অনুপ কুমার বিশ্বাস বলেন, অবরোধের পর আজই প্রথম বঙ্গোপসাগর থেকে ট্রলার এসেছে। তেমন মাছ পায়নি। তবে বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক পাইকার আসছেন। যার কারণে দাম কিছুটা বেশি। তবে মাছ বেশি হলে দাম কিছুটা কমে আসবে।
উল্লেখ্য, মাছের প্রজনন ও টেকসই আহরণ নিশ্চিত করতে বঙ্গোপসাগরে ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। এ সময় সাগরে সব ধরনের মাছ ধরা, পরিবহন ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ ছিল। এর আগে এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ছিল ৬৫ দিন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পদ্মায় জেলের জালে ধরা পড়ল ১১ কেজির কাতল
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পদ্মা নদীতে ধরা পড়েছে ১১ কেজি ওজনের একটি কাতল মাছ। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোরের দিকে উপজেলার চালা ইউনিয়নের দিয়াপাড় এলাকার মৎস্য শিকারী রাজ্জাকের জালে মাছটি ধরা পড়ে।
মাছ ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা জানান, আজ সোমবার ভোরে আন্ধারমানিক আড়তের সুবাশ রাজবংশীর আড়তে মাছটি তোলেন রাজ্জাক। নিলামে মাছটি ১২ হাজার ৬০০ টাকায় কিনে নেন ব্যবসায়ী ইয়েমেল। তিনি মাছটি বলড়া বাজারে নিয়ে যান। সেখানে বলড়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের হাসান আলী ১৪ হাজার ৬০০ টাকায় মাছটি কিনে নেন।
আরো পড়ুন:
জেলের জালে ২ কেজির ইলিশ, ৬ হাজার টাকায় বিক্রি
আরাকান আর্মির ধাওয়ায় নাফ নদীতে ট্রলার ডুবি
আড়তদার হৃদয় রাজবংশী বলেন, “পদ্মা নদী থেকে সোমবার ভোরে কাতল মাছটি ধরেন রাজ্জাক। আজ সকালে আড়তে নিয়ে আসলে বলড়া বাজারের মাছ ব্যবসায়ী ইয়েমেল মাছটি কিনে নেন।”
ইয়েমেল বলেন, “আজ সাড়ে ১১ কেজির কাতল মাছটি ১২ হাজার ৬০০ টাকায় কিনে সুলতানপুরের হাসান কাকার কাছে ১৪ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি করেছি।”
হরিরামপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নুরুল ইকরাম বলেন, “মানিকগঞ্জের পদ্মা নদীতে মাঝে মাঝে বড় বড় পাঙাশ, আইড়, কাতল, চিতল ও বোয়াল মাছ ধরা পড়ে। আজ বড় একটি কাতল মাছ ধরা পড়েছে।”
ঢাকা/চন্দন/মাসুদ