বাবুগঞ্জে মেলা ও যাত্রার প্যাণ্ডেল ভাঙচুর, আগুন দিলেন শতাধিক লোক
Published: 13th, June 2025 GMT
বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় মেলা ও যাত্রার প্যান্ডেল ভাঙচুর করে আগুন দেওয়ায় অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়ন খেযাঘাট এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত যাত্রা চলছিল। সেখানে ঈদ আনন্দ মেলা করার সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়। সেখানে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে শতাধিক লোক হামলা করে প্রথমে ভাঙচুর করে তারপর আগুন দেয়।
স্থানীয়রা জানান, কেদারপুর খেয়াঘাটের অদূরে পহেলা বৈশাখ থেকে মাসব্যাপী বৈশাখী মেলা শুরু হয়। তখনও সেখানে যাত্রা ও পুতুল নাচের নামে অশ্লীল নৃত্য ও রাতভর জুয়ার পরিচালনার অভিযোগ ওঠে। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভের মুখে মেলার অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ হয়। শুধুমাত্র যাত্রা চালানো হতো। যাত্রার আড়ালে রাতভর বিভিন্ন প্রকার জুয়া খেলার অভিযোগ রয়েছে। সেখানে ঈদ আনন্দ মেলা নামে আরেকটি মেলা করার জন্য চলতি মাসের শুরুতে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আবেদন করা হয়। পুতুল নাচসহ মেলার বিভিন্ন প্রকার স্টল নির্মাণও সম্পন্ন হয়। ‘বরিশাল সোসাইটি’ নামে আরেকটি সংগঠন মেলার অনুমতি না দিতে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে পাল্টা আবেদন করেন। এনিয়ে কেদারপুর এলাকায় উত্তেজনা চলছিল। পরে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে দেড় শতাধিক লোক হামলা করে। তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে মেলার জন্য স্থাপন করা কাঠামো ও যাত্রা প্যাণ্ডেলে ভাঙচুর চালায়। পরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
স্থানীয় ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইব্রাহিম বিশ্বাস সমকালকে বলেন, বৈশাখী মেলা বন্ধ হওয়ার পর রাতে শুধুমাত্র গানের আয়োজন হতো। শুক্রবার রাতে লোকজন সবকিছু ভাঙচুর করে আগুন দিয়েছে।
মেলা কমিটির সভাপতি বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সিজন সিকদার জানান, আগে বৈশাখী মেলা হয়েছিল। এরপর শুধুমাত্র গানের আয়োজন চলছিল। ঈদ আনন্দ মেলার অনুমতি না পাওয়ায় দুইদিন আগে কমিটিই সব বন্ধ করে দিয়েছে। পরে শুক্রবার রাতে কিছু উশৃঙ্খল লোক এসে স্থাপনাগুলো ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে।
বাবুগঞ্জ থানার ওসি জহিরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানোা হয়েছে। তারা ফেরার পর বিস্তারিত জানা যাবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বর শ ল আগ ন শ ক রব র র ত আগ ন দ
এছাড়াও পড়ুন:
‘যাদের জন্য শিল্পীজীবন বেছে নেওয়া, তাদের প্রত্যাশা পূরণের দায়ও নিজের ওপর বর্তায়’
আবারও মঞ্চে পা রাখতে যাচ্ছেন নন্দিত কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ। চাইছেন গানের ভুবনে স্বরূপে ফিরতে। উদ্দেশ্য একটাই, যারা দিনের পর দিন প্রহর গুনে যাচ্ছেন তার অনিন্দ্য কণ্ঠে গাওয়া বিভিন্ন দশকের সাড়া জাগানো গান শোনার, সেসব ভক্ত-অনুরাগীদের গানে গানে তৃষ্ণা মেটানো।
আগামী ২২ জুন কানাডার ড্যানফোর্ড অ্যাভিনিউর ডাকরিজ পার্কে পারফর্ম করবেন তিনি। ‘কুমার বিশ্বজিৎ লাইভ ইন কনসার্ট’ শিরোনামে এ আয়োজন করছে কানাডার জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব টরন্টো।
অসংখ্য সাড়া জাগানো গানের শিল্পী ও স্রষ্টা কুমার বিশ্বজিৎ জানান, কানাডায় শো করার পরই তিনি ছুটে যাবেন ওশেনিয়া অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দেশ অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানে ‘লিজেন্ড আনলিস্ট’ শিরোনামে আয়োজিত ধারাবাহিক কনসার্টে অংশ নেবেন তিনি। ২৩ আগস্ট তিনি পারফর্ম করবেন অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যের মেলবোর্ন শহরে। এরপর ধারাবাহিকভাবে নিউ সাউথ ওয়েলসের জমকালো শহর সিডনিতে কনসার্ট করবেন ৩০ আগস্ট। পরদিনই শো করবেন কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের ব্রিসবেন। সিডনি ও ব্রিসবেনের শো দুটিতে আভাস ব্যান্ডের তারকাশিল্পী তানযীর তুহীনের পারফর্ম করার কথা রয়েছে। উপস্থাপক হিসেবে থাকবেন দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা মাজনুন মিজান। সবশেষে ৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার পার্থে কনসার্ট করার মধ্য দিয়ে ইতি টানবেন বলেও জানিয়েছেন এই শিল্পী।
এদিকে ধারাবাহিক কনসার্টের মধ্য দিয়ে কুমার বিশ্বজিতের গানে ফেরা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে চলেছেন ভক্ত-অনুরাগীরা। গত কয়েক দশক ধরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম যার অনিন্দ্য কণ্ঠ আর অনবদ্য গায়কীতে বুঁদ হয়ে আছেন, তাঁকে নীরব হয়ে যাওয়া মেনে নিতে পারেননি অনেকেই। বিশ্বজিৎ সে কথা বুঝতে পেরেছেন বলেই হয়তো ফিরে আসছেন শ্রোতাদের কাছে। যদিও ভয়াবহ ও বিষাদী অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়ার কারণেই গান থেকে নিজেকে দূরে সরেছিলেন ভার্সেটাইল এই শিল্পী। প্রায় আড়াই বছর বুকে পাথর চেপে একেকটি মুহূর্ত পার করছেন কুমার বিশ্বজিৎ।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে কানাডায় ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন কুমার নিবিড়। সেই থেকে এখনও সেখানকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নন্দিত কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের আত্মজ। যাকে নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় কাটছে শিল্পীর একেকটি দিন। একমাত্র সন্তানের সুস্থতা কামনায় প্রহর গুনে চলেছেন তিনি।
আশার কথা হলো, কুমার নিবিড় এখন কিছুটা শঙ্কামুক্ত। সে কারণেই এবার শ্রোতাদের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক জুড়ে নিতে চাইছেন। তাদের গানের পিপাসা মেটাতে মঞ্চ থেকে মঞ্চে ছুটে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।
বিশ্বজিতের কথায়, ‘যাদের জন্য শিল্পীজীবন বেছে নেওয়া, তাদের প্রত্যাশা পূরণের দায়ও নিজের ওপর বর্তায়। তাই জীবনকে ঘিরে ঘটনাবহুল অধ্যায় রচিত হওয়ার পরও তাদের আহ্বানে সাড়া না দিতেই হয়। দর্শক-শ্রোতার শিল্পীজীবনের চালিকাশক্তি; তাদের ভালো লাগা, মন্দ লাগা আর প্রত্যাশা পূরণের মধ্য দিয়ে এতটা পথ পাড়ি দেওয়া। তাই মনে করি, মৃত্যুর পরও আমার গান যদি শ্রোতাদের মাঝে বেঁচে থাকে, সেটিই হবে বড় প্রাপ্তি। হয়তো আমিও এমন করেই বেঁচে থাকব আমার গান দিয়ে, পৃথিবীতে ভ্রমণের সার্থকতা আমার হয়তো সেখানেই।’