ইসরায়েলের হামলায় ইরানের সেনাপ্রধানসহ ২০ সামরিক কমান্ডার নিহত
Published: 14th, June 2025 GMT
ইরানে নজিরবিহীন বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে দেশটির পারমাণবিক প্রকল্প, ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনকেন্দ্র ও আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। এসব হামলায় ইরানের সেনাপ্রধানসহ অন্তত ২০ জন সামরিক কমান্ডার নিহত হয়েছেন। জবাবে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানও। ইসরায়েল লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট নিক্ষেপ করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানে ইসরায়েলের অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদন ঠেকাতে এ অভিযান শুরু করা হয়েছে। ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জনকে বড় হুমকি হিসেবে দেখছেন তাঁরা। যত দিন পর্যন্ত এ হুমকি থাকবে, তত দিন অভিযান চলবে।
ইরানে হামলা শুরু হয় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে। দেশটির সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তেহরানের বেশ কয়েকটি আবাসিক এলাকাসহ শহরের উত্তর–পূর্বাঞ্চলে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পরে তেহরান থেকে ২২৫ কিলোমিটার দূরে নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। এদিন ইরানের কয়েক ডজন রাডার ও আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের দাবি করেছে ইসরায়েল।
নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনা এলাকার বাসিন্দা ৩৯ বছর বয়সী মারজিয়েহ। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘কানে তালা লাগানো বিস্ফোরণের শব্দে আমার ঘুম ভেঙে যায়। আতঙ্কে আমাদের সড়কের বাড়িঘর থেকে বাসিন্দারা বের হয়ে আসেন। আমরা সবাই ভিত হয়ে পড়েছিলাম। এই পরিস্থিতির যদি আরও অবনতি হয়, তখন সন্তানদের নিরাপত্তার কী হবে, তা নিয়ে আমি বড় শঙ্কার মধ্যে রয়েছি।’
ইসরায়েলের হামলায় আহত এক ব্যক্তি সড়কের পাশে অপেক্ষায়। গতকাল তেহরানে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যানসারে আক্রান্ত ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর শরীরে ত্বকের ক্যানসার শনাক্ত হয়েছে। বমি ও নিম্ন রক্তচাপের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার শরীরে ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
আরো পড়ুন:
৬ বছর পর ব্রাজিলকে হারিয়ে বিশ্বকাপ প্লে-অফে বলিভিয়া
মারাকানায় ব্রাজিলের বড় জয়
প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার একদিন পর তার ত্বকের ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে।
বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তার ত্বকের পরীক্ষা করে ‘স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা’ শনাক্ত হয়েছে।এটি ত্বকের মাঝারি মাত্রার ক্যানসার, যা সবচেয়ে হালকা ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ধাপের মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে।
চিকিৎসকরা বলেছেন যে, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে। ৭০ বছর বয়সী বলসোনারো গত মঙ্গলবার বমি এবং নিম্ন রক্তচাপের কারণে ব্রাসিলিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে ক্যানসারের বিষয়টি গত রবিবারের পরীক্ষায় ধরা পড়ে, যখন তার বুক ও হাতে থাকা ক্ষতস্থানের টিস্যু অপসারণ করা হয়েছিল।
তার অনকোলজিস্ট ক্লাউদিও বিয়ারোলিনি জানিয়েছেন, বলসোনারোর ক্যানসার ‘ইন সিটু’ ধাপে রয়েছে, অর্থাৎ অস্বাভাবিক কোষগুলো এখনো ছড়িয়ে পড়েনি। অস্ত্রোপচারই এর চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট হবে। বর্তমানে বলসোনারোর শরীরে সেলাই ও ব্যান্ডেজ রয়েছে, যা দুই সপ্তাহের মধ্যে খোলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বুধবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেছেন, যেখানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।
বলসোনারো ২০২২ থেকে ২০২৩ সালে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই গৃহবন্দি ছিলেন। সম্প্রতি তাকে ২৭ বছর তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরেসের নির্দেশ অনুযায়ী, গৃহবন্দিত্বে থাকলেও চিকিৎসা জরুরি হলে তিনি বাসার বাইরে যেতে পারেন। তবে প্রতিবারই তার আইনজীবীদের আদালতে চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হয়।
বলসোনারোর সমর্থকরা তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতিকে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরছেন, যাতে তিনি কারাগারে না গিয়ে বাড়িতেই সাজা ভোগ করতে পারেন। তাদের দাবি, কারাগারে নিলে তার শারীরিক জটিলতা বা দুর্ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়বে।
তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সিনেটর ফ্লাভিও বলসোনারো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “আমার বাবা আগেও কঠিন লড়াই লড়ে জয়ী হয়েছেন। এবারও ভিন্ন কিছু হবে না।”
ঢাকা/ফিরোজ