দুটি আলাদা উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা, সময়ের ব্যবধান প্রায় ৩০ বছর—কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে এই দুই দুর্ঘটনায় একটি অদ্ভূত মিল রয়েছে। দুই দুর্ঘটনায় দুজন যাত্রীই বসেছিলেন ১১এ আসনে। আর দুজনেই প্রাণে বেঁচে যান।

১৯৯৮ সালে থাইল্যান্ডে প্রথম দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল, আর ২০২৫ সালে ভারতে ঘটে দ্বিতীয় দুর্ঘটনা। দুজনই ছিলেন প্রায় নিশ্চিত মৃত্যুর মুখোমুখি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বেঁচে যান।

থাইল্যান্ডের অভিনেতা ও গায়ক জেমস রুয়াংসাক লইচুসাক জানতে পারেন, ভারতে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার একটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় একমাত্র যে ব্যক্তি বেঁচে যান, তাঁর আসন ছিল ১১এ। প্রায় ২৭ বছর আগে এক উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার সময় তিনি নিজে যে আসনটিতে বসেছিলেন সেটিও ছিল ১১এ।

১৯৯৮ সালে ৪৭ বছর বয়সী জেমস ছিলেন থাই এয়ারওয়েজের টিজি২৬১ ফ্লাইটে। ব্যাংকক থেকে উড্ডয়নের পর উড়োজাহাজটি দক্ষিণ থাইল্যান্ডের সুরাট থানি শহরে অবতরণের চেষ্টা করছিল। মাঝ–আকাশে গতি কমে গেলে উড়োজাহাজটি ভেঙে পড়ে। ১৪৬ যাত্রীর মধ্যে ১০১ জনই নিহত হন। জেমসসহ বাকি আরোহীরা প্রাণে বেঁচে যান। তখন তিনি বসেছিলেন ১১এ আসনে।

সম্প্রতি ভারতে ঘটে যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট এআই–১৭১ ফ্লাইট দুর্ঘটনায় একজন মাত্র আরোহী বেঁচে যান। তিনি হলেন ৪০ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক বিষ্ণু কুমার রমেশ। আশ্চর্যভাবে তিনিও ছিলেন ১১এ আসনে। এই মিল দেখে জেমস ফেসবুকে লেখেন—‘ভারতে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া এক যাত্রী—তিনি আমার মতোই ১১এ আসনে ছিলেন।’

তবে দুই দুর্ঘটনার এই মিলটি কেবল কাকতালীয়। থাই এয়ারওয়েজ দুর্ঘটনায় একাধিক আরোহী বেঁচে যান। কিন্তু এয়ার ইন্ডিয়ার দুর্ঘটনায় শুধু একজনই বেঁচে যান।

এ ছাড়া দুটি উড়োজাহাজই আলাদা মডেল ও আলাদা প্রতিষ্ঠানের ছিল। থাই এয়ারওয়েজের ফ্লাইটটি ছিল এয়ারবাস এ৩১০। আর এয়ার ইন্ডিয়ার উড়োজাহাজটি ছিল বোয়িং৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার। ফলে ১১এ আসনের গঠন বা অবস্থানও দুই উড়োজাহাজে ভিন্ন হতে পারে।

এয়ার ইন্ডিয়া এআই–১৭১ ফ্লাইটটি ১২ জুন ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদের সরদার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে উড্ডয়ন করে। উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই এটি একটি মেডিকেল কলেজের হোস্টেল ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এ সময় উড়োজাহাজে যাত্রী ও ক্রু মিলিয়ে মোট ২৪২ আরোহী ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন য় বস ছ ল ন

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ