অ্যান্টার্কটিকায় বিরল স্কুইডের সন্ধান
Published: 15th, June 2025 GMT
বরফে ঢাকা মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকায় বিরল প্রজাতির অ্যান্টার্কটিক গোনেট স্কুইডের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এবারই প্রথম জীবিত অবস্থায় বিজ্ঞানীদের চোখে ধরা পড়েছে লাল স্কুইডটি। অ্যান্টার্কটিক গোনেট স্কুইডের খোঁজ পেয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত বিজ্ঞানীরা। অধরা সেফালোপড প্রজাতির এই প্রাণী কেবল অ্যান্টার্কটিকার গভীর সমুদ্রে দেখা যায়।
স্মিট ওশান ইনস্টিটিউটের আরভি ফ্যালকরে চড়ে সমুদ্রের গভীরে এই প্রাণীর খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এ বিষয়ে ইনস্টিটিউটো ডি ডাইভারসিডাড ওয়াই ইকোলজিয়া অ্যানিমালের বিজ্ঞানী ম্যানুয়েল নোভিলো বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল রিমোটলি অপারেটেড ভেহিকেল সমুদ্রের পাওয়েল বেসিনে নিয়ে যাওয়া। সমুদ্রের প্রায় ৯ হাজার ৮০০ ফুট গভীরে অবস্থিত এই এলাকা মূলত অনাবিষ্কৃত বিশাল সমভূমি। সমুদ্রের বরফের কারণে পরে জাহাজ পাঠানোর পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়। এরপর পাওয়েল বেসিনের বাইরের প্রান্তে একটি নতুন স্থান বেছে নেওয়া হয়। সেখানেই ভিন্ন ধরনের এই স্কুইডের দেখা পাওয়া গেছে। এই স্কুইড আগে কখনো জীবিত দেখা যায়নি।’
বিজ্ঞানীরা নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির সেফালোপড ইকোলজি অ্যান্ড সিস্টেমেটিকস ল্যাবের প্রধান ক্যাট বলস্ট্যাডের কাছে নমুনার তথ্য পাঠান। তিনি নিশ্চিত করে জানান, এটি একটি অ্যান্টার্কটিক গোনেট স্কুইড। তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, এটি বিশ্বে এমন প্রাণীর প্রথম লাইভ ফুটেজ।’
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের তথ্যমতে, বিজ্ঞানীরা কয়েক মিনিট ধরে প্রাণীটিকে অনুসরণ করেন। এরপর লেজার ব্যবহার করে স্কুইডের আকার পরিমাপ করা হয়। পরে স্কুইডটি অন্ধকারে চলে যায়। আর তাই স্কুইডটির লিঙ্গ বা বয়স নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে বিজ্ঞানী বলস্ট্যাড জানিয়েছেন, স্কুইডটিতে বৃহৎ আকারের হুক রয়েছে। এসব হুক সম্ভবত শিকারের সময় ব্যবহার করা হয়।
সূত্র: এনডিটিভি ও লাইভ সায়েন্স
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।