২০২৬ সালের হজের রোডম্যাপ ঘোষণা, ১২ অক্টোবরের মধ্যে নিবন্ধন
Published: 16th, June 2025 GMT
২০২৬ সালের হজ কার্যক্রমের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে সৌদি আরব সরকার। আগামী বছর হজে অংশ নিতে আগ্রহী বাংলাদেশি যাত্রীদের চলতি বছরের ১২ অক্টোবরের মধ্যে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। এর পর ৯ নভেম্বর সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় হজচুক্তি সই হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের এই রোডম্যাপ হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব), হজ এজেন্সি ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে ১৫ জুন পাঠানো হয়েছে। এর আগে ৮ জুন রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, ১০ জুলাই হজ কোটা ঘোষণা করবে সৌদি সরকার। ২৬ জুলাই থেকে ‘নুসুক মাসার’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ক্যাম্প-সংক্রান্ত তথ্য পর্যবেক্ষণ ও অর্থ স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হবে। ৯ থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত চলতি হজ মৌসুমের ব্যবহৃত ক্যাম্পগুলো আগামী হজ মৌসুমের জন্য পুনর্ব্যবহারের সুযোগ থাকবে।
প্যাকেজ, আবাসন, পরিবহন চুক্তি, এয়ারলাইন্স নির্ধারণসহ ফ্লাইট সূচি চূড়ান্ত করতে হবে ২৪ আগস্টের মধ্যে। একই সঙ্গে হজযাত্রীদের তথ্য নুসুক মাসারে আপলোড এবং গ্রুপ গঠন শুরু করতে হবে। ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁবু ভাড়া ও মাশায়ের প্যাকেজ বাবদ প্রয়োজনীয় অর্থ পাঠাতে হবে। আগামী বছরের ৪ জানুয়ারির মধ্যে সেবা সংস্থার সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি এবং ফ্লাইট সূচি নির্ধারণ করতে হবে। ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে মক্কা-মদিনার হোটেল ও পরিবহন-সংক্রান্ত অর্থ স্থানান্তর প্রক্রিয়া, যা চূড়ান্ত করতে হবে ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।
হজযাত্রীদের ভিসা দেওয়া শুরু হবে ৮ ফেব্রুয়ারি এবং চলবে ২০ মার্চ পর্যন্ত। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রা শুরু হবে ১৮ এপ্রিল।
২০২৬ সালের হজে সর্বোচ্চ দুটি সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করার সুযোগ থাকবে। সব ধরনের চুক্তি এবং অর্থ প্রদান ‘নুসুক মাসার’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেই সম্পন্ন করতে হবে। এর বাইরে কোনো অর্থ দেওয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। কোরবানির অর্থও এই প্ল্যাটফর্মে জমা দিতে হবে। এ ছাড়া হজযাত্রীদের খাবার-সংক্রান্ত চুক্তি করতে হবে সৌদি ক্যাটারিং কোম্পানির সঙ্গে। তাঁবু, সেবা প্যাকেজ এবং পরিবহন খরচ দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
মেডিকেল ফিটনেস (শারীরিক সুস্থতা) ছাড়া কেউ হজে অংশ নিতে পারবেন না। হৃদরোগ, ফুসফুস ও কিডনি জটিলতা, লিভার সিরোসিস, নিউরোলজিক্যাল বা মানসিক সমস্যা, কেমোথেরাপি/রেডিওথেরাপি নেওয়া ক্যান্সার রোগী এবং ঝুঁকিপূর্ণ অন্তঃসত্ত্বা নারীরা হজ নিবন্ধনের অযোগ্য বিবেচিত হবেন বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হজ হজয ত র দ র
এছাড়াও পড়ুন:
সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।
পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।
অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।
একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।